ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

বাচ্চাকে ফিডারে দুধ খাওয়াচ্ছেন অজান্তেই ঝুঁকিতে ফেলছেন তার স্বাস্থ্য

২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১৭:৩৬:৩৫

বাচ্চাকে ফিডারে দুধ খাওয়াচ্ছেন অজান্তেই ঝুঁকিতে ফেলছেন তার স্বাস্থ্য

শিশুর প্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য হলো মায়ের বুকের দুধ। তবুও ব্যস্ততা, ভুল ধারণা বা সহজ সমাধানের আশায় অনেক মা এখনো ফিডার দুধ বা বোতলজাত দুধের ওপর নির্ভর করছেন। চিকিৎসকদের মতে, ফিডার দুধ শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য নানা ঝুঁকি তৈরি করতে পারে, এমনকি দীর্ঘমেয়াদে শিশুর শারীরিক ও আবেগিক বিকাশে ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, জন্মের প্রথম এক ঘণ্টার মধ্যে নবজাতককে বুকের দুধ খাওয়ানো উচিত এবং ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধু মায়ের দুধই যথেষ্ট। এই সময়ে ফিডার বা অন্য কোনো দুধ ব্যবহার শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

কেন ক্ষতিকর ফিডার দুধ১. পূর্ণ পুষ্টির অভাবফিডার দুধে মায়ের দুধে থাকা প্রয়োজনীয় এনজাইম ও অ্যান্টিবডি থাকে না। ফলে শিশুর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে, সহজেই অসুস্থ হয় এবং বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

২. অ্যাজমা ও অ্যালার্জির ঝুঁকিগবেষণা অনুযায়ী, ফিডার দুধ পান করা শিশুদের অ্যাজমা, চর্মরোগ ও বিভিন্ন অ্যালার্জির প্রবণতা বেশি দেখা যায়।

৩. পেটের সংক্রমণফিডার ও বোতল সঠিকভাবে জীবাণুমুক্ত না হলে ডায়রিয়া, আমাশয়সহ বিভিন্ন গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল রোগ হতে পারে। বাংলাদেশে শিশুমৃত্যুর বড় একটি কারণই এসব সংক্রমণ।

৪. দাঁতের ক্ষয়নিয়মিত ফিডার ব্যবহারে দাঁতের গঠন নষ্ট হতে পারে এবং ভবিষ্যতে দাঁত ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়ে।

আবেগিক বিকাশেও ক্ষতিবুকের দুধ খাওয়ানোর সময় মা–শিশুর মধ্যে ঘনিষ্ঠ আবেগিক সম্পর্ক তৈরি হয়। ফিডার দুধ সেই সম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগ কমিয়ে দেয়, যা শিশুর মানসিক বিকাশে প্রভাব ফেলতে পারে।

বাংলাদেশের বাস্তবতাদেশে অনেক মা কর্মক্ষেত্রে মাতৃত্ববান্ধব পরিবেশ না পাওয়া, মাতৃত্বকালীন ছুটি সীমিত থাকা এবং সচেতনতার অভাবে ফিডারের দিকে ঝুঁকছেন। ফলে অসংখ্য শিশু অপ্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়ছে।

সমাধান ও পরামর্শমায়েদের সচেতনতা বাড়াতে স্বাস্থ্যকর্মীদের আরও সক্রিয় ভূমিকা

কর্মক্ষেত্রে মাতৃত্ববান্ধব নীতি ও যথাযথ সুবিধা নিশ্চিত করাগণমাধ্যমে বুকের দুধের উপকারিতা নিয়ে নিয়মিত প্রচারণাফিডার ব্যবহারের ঝুঁকি সম্পর্কে মা–বাবাদের সঠিক তথ্য দেওয়াবিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুর জীবনের প্রথম ছয় মাসে বুকের দুধের বিকল্প নেই। সঠিক সিদ্ধান্ত ও সচেতনতার মাধ্যমেই শিশুর সুস্থ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা সম্ভব।

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত