ঢাকা, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

আগামী ১০ বছরে কোন জিনিস সবচেয়ে মূল্যবান হবে, টাকা নাকি স্বর্ণ নাকি জমি

২০২৫ নভেম্বর ১৭ ২৩:৪৪:০৬

আগামী ১০ বছরে কোন জিনিস সবচেয়ে মূল্যবান হবে, টাকা নাকি স্বর্ণ নাকি জমি

বর্তমান সময়ে আমরা সাধারণত টাকা, সোনা বা জমিকে সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করি। কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতির কারণে ভবিষ্যতের বাস্তবতা এর থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন হতে পারে। ভারতের জনপ্রিয় ফিনটেক প্ল্যাটফর্ম জেরোধার সহ-প্রতিষ্ঠাতা নিখিল কামাত সম্প্রতি এক বিস্ময়কর ভবিষ্যদ্বাণী করে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলেছেন। তার মতে, আগামী ১০ বছরে নগদ অর্থ, স্বর্ণ, জমি বা দামি গয়নার চেয়ে বেশি মূল্যবান হয়ে উঠবে শক্তি—বিশেষ করে বিদ্যুৎ। কারণ হিসেবে তিনি তুলে ধরেছেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, অটোমেশন এবং ডেটা সেন্টারের ব্যবহার বিস্ফোরণগত হারে বাড়ছে। প্রতিটি ডেটা সেন্টারই বিশাল পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ করে, যা ভবিষ্যতের জ্বালানি চাহিদাকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেবে। বর্তমানে যেসব অনলাইন কাজ আমরা প্রতিদিন করে থাকি—স্ট্রিমিং, গুগল সার্চ, ক্লাউড স্টোরেজ—এসবই পরিচালিত হয় শক্তিশালী ডেটা সেন্টারে। বিস্ময়ের বিষয়, একটি বড় ডেটা সেন্টার বছরে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ করে, তা প্রায় চার লাখ ইলেকট্রিক গাড়ির সম্মিলিত বিদ্যুৎ খরচেরও বেশি। আর এই ডেটা সেন্টারগুলোর মোট ব্যয়ের ৬৫ শতাংশই চলে যায় শুধুমাত্র বিদ্যুৎ খাতে।

বিশ্বে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ডেটা সেন্টার রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি এবং যুক্তরাজ্যে, এবং এই সংখ্যাটি প্রতি বছর দ্রুত বাড়ছে। গবেষণা বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে পৃথিবীর মোট বিদ্যুৎ ব্যবহারের ১০ শতাংশ খরচ হবে শুধু ডেটা সেন্টারগুলোর জন্য। এ পরিস্থিতিতে নিখিল কামাতের দাবিটি অমূলক নয়—তিনি মনে করেন, ভবিষ্যতে বিদ্যুতের গুরুত্ব এমন পর্যায়ে পৌঁছাবে যে এটি হয়ে উঠতে পারে এক ধরনের নতুন ‘কারেন্সি’। অর্থাৎ, যে দেশ শক্তির উৎস নিয়ন্ত্রণ করবে এবং সস্তায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে, ভবিষ্যতের বিশ্বে তারাই হবে সবচেয়ে শক্তিশালী।

এখন পর্যন্ত সোনা, জমি বা টাকা মূল্যবান হলেও অদূর ভবিষ্যতে শক্তি—বিশেষ করে বিদ্যুৎ—হয়তো বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদে পরিণত হবে। কারণ প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে, তার প্রতিটি ধাপই বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল। ফলে বলা যায়, আগামী দশকে যার কাছে বেশি শক্তি থাকবে, প্রকৃত ক্ষমতা থাকবে তার হাতেই।

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত