ঢাকা, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

প্রবাসী কর্মীদের দুঃস্বপ্ন! এক ধাক্কায় বন্ধ হচ্ছে সবচেয়ে বড় ভিসা

২০২৫ নভেম্বর ১৬ ২২:২৬:৩৮

প্রবাসী কর্মীদের দুঃস্বপ্ন! এক ধাক্কায় বন্ধ হচ্ছে সবচেয়ে বড় ভিসা

যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষ বিদেশি কর্মীদের জন্য সবচেয়ে আলোচিত কর্মভিসা—এইচ-১বি প্রোগ্রাম—সম্পূর্ণ বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। বহুদিন ধরে নিয়ম পরিবর্তনের পর এবার কংগ্রেসে সরাসরি এই ভিসা কর্মসূচি বন্ধের প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের ডানপন্থি সদস্য মার্জোরি টেইলর গ্রিন ১৩ নভেম্বর এই বিল উপস্থাপন করেন। বিল উত্থাপনের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ দেওয়া বার্তায় তিনি দাবি করেন—এইচ-১বি কর্মসূচি বছরের পর বছর “অপব্যবহার” এবং “প্রতারণার” মাধ্যমে মার্কিন নাগরিকদের চাকরির সুযোগ কেড়ে নিয়েছে।

কেন বাতিল করতে চাইছে ট্রাম্প প্রশাসন?

গ্রিনের যুক্তি—

প্রযুক্তি কোম্পানি ও হাসপাতালগুলো মার্কিন কর্মীদের বাদ দিয়ে বিদেশিদের বেশি নিয়োগ দিচ্ছে।

এতে মার্কিন শ্রমবাজার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও স্বাস্থ্যসেবায় মার্কিন নাগরিকদের অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য এইচ-১বি বন্ধই একমাত্র সমাধান।

তবে নতুন প্রস্তাবনায় বিদেশি চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য সীমিত কোটা রাখা হয়েছে, যা সর্বোচ্চ ১০,000 জন। তবে তারা ভবিষ্যতে মার্কিন নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারবেন না।

এইচ-১বি ভিসা: কী ছিল নিয়ম?

২০০৪ সালে চালু হওয়া এই ভিসায় প্রতি বছর ৮৫ হাজার বিদেশি কর্মী যুক্তরাষ্ট্রে কাজের অনুমতি পান।বিশ্বখ্যাত কোম্পানি—গুগল, অ্যামাজন, মেটা, মাইক্রোসফট, অ্যাপল—এই ভিসার মাধ্যমে হাজার হাজার কর্মী নেয়।এইচ-১বি ভিসাধারীরা নির্দিষ্ট সময় পর গ্রীন কার্ড ও নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারতেন।

ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ধারাবাহিক কড়াকড়ি

পুনঃনির্বাচনের পর অভিবাসন বিষয়ে কঠোর অবস্থান আরও জোরালো করেছেন ট্রাম্প।সাম্প্রতিক পরিবর্তনগুলোর মধ্যে রয়েছে—

নতুন আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে মার্কিন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ১ লাখ ডলার ফি আদায়

প্রচলিত লটারি বাতিল করে নতুন বাছাই ব্যবস্থা

অস্থায়ী বা স্বল্পমেয়াদি এইচ-১বি ভিসার ধারণা

ট্রাম্প প্রশাসনের ভাষ্য অনুযায়ী,“বিদেশি দক্ষ কর্মীদের দীর্ঘমেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রে রাখার পরিবর্তে—তাদের কয়েক বছরের জন্য এনে মার্কিন কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, এরপর তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে।”

মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রীর বক্তব্য

বাণিজ্যমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ফক্স নিউজকে বলেন—“আমরা অতিদীর্ঘ সময় ধরে বিদেশি কর্মীদের ওপর নির্ভর করে আসছি। এখন নিজস্ব উৎপাদনশিল্প পুনর্গঠনের সময়। সেমিকন্ডাক্টরসহ বড় শিল্পগুলো দেশে ফিরিয়ে আনতে হলে নিজেদের কর্মীদেরই দক্ষ করে তুলতে হবে। তাই নতুন নীতিই আমাদের ভবিষ্যতের জন্য যুক্তিযুক্ত।”

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত