ঢাকা, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

ওয়ানডেতে ৩৫ ছক্কা ও ১৪ চারে ১৪১ বলে ৩১৪ রান, ক্রিকেট বিশ্বে তোলপাড়

২০২৫ অক্টোবর ১১ ২২:১৬:৩৭

ওয়ানডেতে ৩৫ ছক্কা ও ১৪ চারে ১৪১ বলে ৩১৪ রান, ক্রিকেট বিশ্বে তোলপাড়

অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে দেখা গেল এক অবিশ্বাস্য ব্যাটিং তাণ্ডব। মাত্র ২০ বছর বয়সেই ক্রিকেট বিশ্বে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন তরুণ ব্যাটার হারজাস সিং। শনিবার (৪ অক্টোবর) সিডনির ফার্স্ট গ্রেড ওয়ানডে ম্যাচে তিনি খেলেছেন ১৪১ বলে ৩১৪ রানের বিস্ময়কর ইনিংস — যেখানে ছিল ৩৫টি ছক্কা ও ১৪টি চার!

ওয়েস্টার্ন সাবার্বস ক্লাবের হয়ে ব্যাট করতে নেমে দলকে পৌঁছে দেন ৪৮৩/৫ বিশাল স্কোরে। হারজাসের ব্যাটিং তাণ্ডবে মাঠের দর্শকরাও অবাক হয়ে গিয়েছিলেন—অনেকে নাকি ছক্কার বৃষ্টি থেকে বাঁচতে সরে গিয়েছিলেন গ্যালারি থেকে!

এই ইনিংসটি সিডনির ফার্স্ট গ্রেড ক্রিকেট ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। এর আগে এগিয়ে আছেন কেবল কিংবদন্তি ভিক্টর ট্রাম্পার (৩৩৫ রান, ১৯০৩) ও ফিল জ্যাকস (৩২১ রান, ২০০৭)।

হারজাসের প্রতিক্রিয়া

ফক্স ক্রিকেটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হারজাস বলেন,

“এটাই আমার জীবনের সবচেয়ে শক্তিশালী ও নিখুঁত ব্যাটিং ছিল। অফ-সিজনে পাওয়ার হিটিং নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করেছি, আজ সেটার ফল পেয়েছি। এটা আমার জন্য বিশেষ এক দিন।”

তিন নম্বরে নেমে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৩৩ বলে ফিফটি তুলে নেন হারজাস। এরপর মাত্র ৪১ বলে শতরান। সেঞ্চুরি থেকে ডাবল সেঞ্চুরিতে পৌঁছাতে সময় নেন মাত্র ২৯ বল! শেষ পর্যন্ত ১৩২ বলে ট্রিপল সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি, ইনিংস থামে ৩১৪ রানে — যেখানে ২৬৬ রানই আসে বাউন্ডারি থেকে।

ম্যাচের ফলপ্রতিপক্ষ সিডনি দল ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৮৭ রানেই থেমে যায়। ফলে ওয়েস্টার্ন সাবার্বস জয় পায় বিশাল ১৯৬ রানের ব্যবধানে।

কে এই হারজাস সিং?২০০৫ সালে সিডনিতে জন্ম নেওয়া হারজাসের পরিবার ভারতের চণ্ডীগড় থেকে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমায় ২০০০ সালে। মাত্র ৮ বছর বয়সে ক্রিকেটে হাতে খড়ি হয় তার। অস্ট্রেলিয়ার খ্যাতনামা কোচ নিল ডি’কস্টার তত্ত্বাবধানে বেড়ে উঠেছেন এই তরুণ প্রতিভা।

তার বাবা ইন্দ্রজিৎ সিং ছিলেন পাঞ্জাব রাজ্যের প্রাক্তন বক্সিং চ্যাম্পিয়ন, মা আভিন্দার কৌর ছিলেন জাতীয় পর্যায়ের লং জাম্পার।

হারজাস ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য, যিনি ২০২৪ সালের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ৫৫ রান করে শিরোপা জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এখনো যদিও নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্য দলে রুকি চুক্তি পাননি, তবে ক্রিকেট বিশ্লেষকদের ধারণা—এই পারফরম্যান্সের পরই তিনি খুব দ্রুতই জাতীয় দলের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবেন।

ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা বলছেন,

“স্যাম কন্টাস, মাহলি বিয়ার্ডম্যানদের পর হারজাসই হতে পারে অস্ট্রেলিয়ার ‘স্বর্ণ প্রজন্মের’ পরবর্তী বড় তারকা।”

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত

ক্রিকেট এর অন্যান্য সংবাদ