ঢাকা, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

কোরআনের সাত আসমান: বিজ্ঞান কি সত্যিই এর রহস্য উন্মোচন করতে পারলো

২০২৫ নভেম্বর ০৬ ১৯:২০:২৭

কোরআনের সাত আসমান: বিজ্ঞান কি সত্যিই এর রহস্য উন্মোচন করতে পারলো

মানুষের কৌতূহল চিরকালই মহাবিশ্বের বিস্তার ও গঠনের দিকে। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত ‘সাত আসমান’ ধারণা যুগ যুগ ধরে মুসলমানদের মধ্যে আলোচনা সৃষ্টি করেছে। আধুনিক বিজ্ঞান অনেক অগ্রগতি করেছে, তবুও এই সাত আসমানের প্রকৃত রহস্য এখনও অজানা।

কোরআনের নির্দেশনা:কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ বলেছেন যে, তিনি সাত আসমান স্তর-স্তর করে সৃষ্টি করেছেন। সূরা মুলক (৩) ও সূরা নূহ (১৫)-এ এই বিষয়টি উল্লেখ আছে। আরবিতে ‘সামা’ অর্থ আকাশ, এবং বহুবচন ‘সামাওয়াত’ দ্বারা বোঝানো হয়েছে একাধিক আকাশমণ্ডলী।

ব্যাখ্যা ও বিতর্ক:অনেকে এটিকে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সাত স্তরের সঙ্গে তুলনা করেন। সূরা ফুসসিলাত (১২)-এ বলা হয়েছে, প্রথম আসমানকে আলোকমালার দ্বারা সজ্জিত ও সুরক্ষিত করা হয়েছে। প্রথম আসমানেই কোটি কোটি গ্রহ, উপগ্রহ, নক্ষত্র ও গ্যালাক্সি রয়েছে। এর বাইরে আরও ছয়টি আসমান রয়েছে।

বিজ্ঞানীদের মত:আধুনিক বিজ্ঞান এখনও চূড়ান্ত ব্যাখ্যা দেয়নি। তবে তুর্কি মহাকাশ বিজ্ঞানী ড. হালুক নূর সাত স্তরের ধারণা দিয়েছেন:

সৌরজগৎ

মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির চৌম্বকীয় বলয়

স্থানীয় গ্যালাক্সি গুচ্ছ (লোকাল গ্রুপ)

মহাজাগতিক কেন্দ্রীয় বলয়

দূরবর্তী গামা রশ্মি উৎস

মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ ক্ষেত্র

মহাবিশ্বের সীমাহীন অসীমতা

মুস্তাদরাক হাদিসে প্রথম আসমান থেকে দূরের ছয়টি আসমানকে ৫০০ বছরের পথ দূরত্বে উল্লেখ করা হয়েছে।

কোরআনের বৈজ্ঞানিক সমর্থন:কোরআন বহু তথ্য দিয়েছেন যা বিজ্ঞান পরে বুঝতে পেরেছে, যেমন ভ্রূণ গঠনের ধাপ (সূরা মুমিনুন: ১৪), মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ (সূরা জারিয়াত: ৪৭), এবং পাহাড়ের মাধ্যমে স্থায়িত্ব (সূরা নাবা: ৬-৭)। নাসার বিজ্ঞানীরাও স্বীকার করেছেন যে, ‘অবজার্ভেবল ইউনিভার্স’-এর বাইরেও মহাবিশ্ব রহস্যে ভরা।

এ থেকে বোঝা যায়, মহাবিশ্বকে স্তর-স্তরে বিভক্ত করার কোরআনের ধারণা বৈজ্ঞানিকভাবে অসঙ্গত নয়, বরং এটি মহাবিশ্বের জটিলতা ও সুসংগঠিত প্রকৃতির প্রতি ইঙ্গিত দেয়।

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত