আর কখনোই পাঠাওতে উঠবো না
শুরুর দিকের রাইডার’রা একটা ক্লাসের ছিলো..ক্লাস বলতে দামী বাইক বুঝাইনি! শিক্ষিত – মার্জিত – ভদ্র – এক্সপার্ট ড্রাইভার বুঝিয়েছি।
এখনো মনে আছে, গুলশান ব্র্যাক ব্যাংক থেকে এক ব্যাংকার ভাই আমাকে মিরপুর ১০ নিয়ে যাচ্ছিলো। শেওড়াপাড়া গিয়ে উনি ওষধ কেনার জন্য বাইক থামিয়েছিলেন, বললেন ভাই একটু দাড়ান প্লিজ! আমি আমার বউয়ের জন্য ওষধ টা নিয়ে আসি। আমি একটু বিরক্ত হলেও কিছু বলিনি। ২/৩ মিনিট পরে দেখি আসছে..হাতে একটা ৫০০মিলি কোক এনে ধরায় দিয়ে বললো, খুলেন এটা, একসাথে খেয়ে রওনা দিই। বিশ্বাস করেন ভাই, মনটাই ভালো হয়ে গিয়েছিলো।
এরপর আরেক রাইডারকে পেলাম মহাখালিতে। আমার বাস ছাড়ার আছে ২৫ মিনিট, যাবো মহাখালি থেকে গাবতলী। উঠার আগে বললাম, ভাই একটু দেখিয়েন যেন বাস মিস না হয়। লোকটা গাবতলী পার হয়ে পর্বত সিনেমা হলে গিয়ে রানিং বাস আটকায় উঠিয়ে দিয়েছিলো। ৫০টাকা বেশি দিচ্ছিলাম, ওনি নেয়নি। উল্টা বলেছিলো, ভাই দোয়া করো সামনের উইকে আমার বিয়ে..সেই কী লজ্জা রাইডার এর চোখে-মুখে। মনে রাখার মত একটা জিনিস ছিলো ওই ঘটনা।
লাস্ট ২০ দিনে ১০টা রাইড নিলাম..এর মধ্যে ৮টা রাইডই জঘন্য। কারো বাইক অনেক পুরোনো, কারো এক্সট্রা হেলমেট নেই, কারো কেস খাওয়া গাড়ি, কারো আবার রাইড থামিয়ে টয়লেটে যেতে হয়। মানে পুরাই জগা খিচুড়ি মার্কা একটা অবস্থা।
আজকে রিকোয়েস্ট দিলাম তেজগাঁও থেকে মিরপুর-১০। রাইডার আসলো, চেহারা দেখেই বুঝলাম শিওর এটা ২/৩ স্টিক গাঞ্জা টেনে এসছে। সে যাই হোক, উল্টো পথে বাইক ঢুকানোতে খাইলো একটা মামলা। তারপরও তার নাকি ইন্সুরেন্স করা নাই গাড়ির। প্রায় ১৫/২০ মিনিট গেলো মামলা সামলাতে।
মহাখালি হয়ে বনানী আসতে আসতেই একটা সিএনজিতে সুন্দর করে মেরে দিলো। কিচ্ছু বুঝে উঠার আগেই, বাইক থেকে পড়ে গেলাম। পিছনেই ছিলো ময়মনসিংহগামী গাড়ি এনা। একটুর জন্য বাচলাম।
এরপর সৈনিক ক্লাব দিয়ে ঢুকানোর আগে বললাম, হেলমেটটা দেন পড়ি। হেলমেট কয়জনম খোলেনি, নিজেও জানে না। পরে দেখি দড়ি দিয়ে বেধে রেখেছে হেলমেট। হেলমেট টাও মাশআল্লাহ। পড়ার পরে দেখি মাথায় শুধু বালু আর বালু। শিক্ষা হয়ে গেছে লাস্ট কয়েকটা রাইডে আমার।পাঠাও আগে ভালো ছিলো, জাত ছিলো, ক্লাস ছিলো। আর এখন? দেখলাম তো নিজের চোখে। কিছু বলার নেই, কিছুই বলার নেই !
Arafat Hossain Ayon এর ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে সংগৃহীত।