এখনও যেভাবে পুড়ছে লন্ডনের ২৪ তলা ভবনটি,সরাসরি দেখুন এখানে(Live)
লন্ডন পুলিশের কমান্ডার স্টুয়ার্ট কুন্ডি বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমি ছয়জনের মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত করতে পারি। তবে পুরো অভিযান শেষ হলে সম্ভবত এই সংখ্যা বাড়বে।’ তবে স্কাই নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ১০ থেকে ১৫ জন হতে পারে।
এর আগে ল্যানচেস্টারে ‘গ্রেনফেল টাওয়ার’ নামের ওই আবাসিক ভবনটিতে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত সোয়া একটার দিকে আগুন লাগে। আগুন তিনতলা থেকে ২৪ তলা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। ভবনটি পুড়ে ভষ্ম হয়ে গেছে।
আইয়ুব আসিফ নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি সিএনএনকে জানান, তার পরিবার ওই ভবনেই বাস করে। তিনি ভবনের অনেককে লাফিয়ে পড়তে দেখেছেন। আইয়ুব বলেন, ‘আমার ভাতিজা সেখানে ছিল, আমার চাচাতো ভাইবোনেরা সেখানে ছিল।’ ভেতর থেকে আহতদের বের করে আনতে অগ্নিনির্বাপক কর্মীদের সহায়তা করেছেন তিনি। তার আত্মীয়সহ অন্যদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আইয়ুব বলেন, ‘আমি লোকজনকে জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়তে দেখেছি।’
আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী ওমর চৌধুরি জানান, আগুন থেকে বাঁচতে ভবনের মাঝামাঝি জায়গার ফ্লোর থেকে তিনি অনেককে লাফিয়ে পড়তে দেখেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্ট দেখতে পেয়েছি যে কেউ লাফিয়ে পড়ছে।’
ঘটনাকে ‘অত্যন্ত গুরুতর’ বলে আখ্যায়িত করেছেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান। আগুনের কারণে লন্ডন পাতাল রেলের হ্যামারস্মিথ এবং সিটি ও সার্কেল লাইন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে লন্ডন ফায়ার ব্রিগেড ৪০টি ফায়ার ইঞ্জিন পাঠিয়েছে।
লন্ডন ফায়ার কমিশনার ডেনি কটন জানিয়েছেন, বেশকিছু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তবে তার সংখ্যা তিনি জানাননি। কটন বলেন, ‘এটা নজিরবিহীন। চাকরি জীবনের ২৯ বছরে এমন ভয়াবহ ঘটনা আমি দেখিনি।’ তবে এখনও অগ্নিকাণ্ডের কোনও কারণ জানাতে পারেননি এই অগ্নিনির্বাপক কর্মকর্তা।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ভেতরে আটকে পড়া লোকদের মধ্যে সবচেয়ে অরক্ষিত অবস্থায় আছে শিশুরা। নিজেদের জীবন রক্ষার চেয়ে বাচ্চাদের জীবন বাঁচানোর জন্য চিৎকার করে সাহায্য চাইছেন তারা। অনেকে লাফিয়ে পড়ছেন ভবন থেকে।
প্রত্যক্ষদর্শী জোডি মার্টিন বলেন, ‘একজন লোককে আমি উপর থেকে পড়ে যেতে দেখেছি। এক নারীকে দেখেছি তার বাচ্চাকে নিয়ে ভবন থেকে লাফিয়ে পড়তে। অনেক চিৎকার শুনেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি অনেককেই বলেছি, নেমে আসুন। তারা বলছিল, আমরা ভবন ত্যাগ করতে পারছি না। প্রচুর ধোঁয়া।’
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা জানিয়েছেন, কীভাবে ‘আমার বাচ্চাকে বাঁচাও’ বলে ভবনের ভেতরে আটকে পড়া লোকজন তাদের সন্তানদের ছুড়ে মারছেন অন্যের কাছে। তিনি বলেন, ‘অনেকে নিজে বের হতে না পেরে শুধু তাদের সন্তানকে ছুড়ে দিচ্ছেন। জানালা দিয়ে তারা নিজেদের সন্তানকে বাঁচানোর জন্য চিৎকার করে সাহায্য চাইছেন।’
এক নারী জানিয়েছেন, ২১ তলা থেকে ছয় সন্তানকে নিয়ে নেমে আসছিলেন তিনি। নিচতলা পর্যন্ত আসতে আসতে চারজনকে অক্ষত পেয়েছেন। বাকি দুইজনের কোনও খোঁজ পাচ্ছেন না।