ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

যে ব্যাংকে টাকা রাখা হারাম — জানালেন শাইখ আহমাদুল্লাহ

২০২৫ অক্টোবর ২১ ১৩:৩০:৩৪

যে ব্যাংকে টাকা রাখা হারাম — জানালেন শাইখ আহমাদুল্লাহ

বিশিষ্ট ইসলামিক বক্তা ও স্কলার শাইখ আহমাদুল্লাহ বলেছেন, সুদভিত্তিক ব্যাংকে টাকা রাখা ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী হারাম। তিনি বলেন, ব্যাংকিং লেনদেন এমন কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে করা উচিত নয়, যেখানে সুদ (রিবা) আদান-প্রদান হয় বা সেই পদ্ধতিকে শক্তিশালী করা হয়।

সম্প্রতি তার ইউটিউব চ্যানেল Shaikh Ahmadullah-এ প্রকাশিত এক ভিডিওতে তিনি বলেন,

“আল্লাহ তাআলা সুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। তাই কোনো মুসলমানের জন্য সুদভিত্তিক ব্যাংকে হিসাব খোলা বা সেখানে লেনদেন করা কোনো অবস্থাতেই বৈধ নয়।”

কোন ব্যাংকে টাকা রাখা হারাম

শাইখ আহমাদুল্লাহ ব্যাখ্যা করেন—যে সব ব্যাংকে সরাসরি সুদের লেনদেন হয়, সেই ব্যাংকে টাকা রাখা মানে পরোক্ষভাবে সুদ ব্যবস্থাকে সহায়তা করা। এটি ইসলামী অর্থনীতির মৌলনীতি বিরোধী।

তিনি বলেন,

“যে ব্যাংক তার অর্থ সুদের ব্যবসায় ব্যবহার করে, সেই ব্যাংকে টাকা জমা রাখা ইসলামী দৃষ্টিতে হারাম। কারণ, এর মাধ্যমে আমরা এমন এক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করছি, যেটি আল্লাহর নিষিদ্ধ ঘোষিত।”

কোন ব্যাংকে রাখা যাবে

তবে শাইখ আহমাদুল্লাহ বিকল্প হিসেবে ইসলামিক ব্যাংক বা কোনো ব্যাংকের ইসলামিক উইং বেছে নেওয়ার পরামর্শ দেন।তিনি বলেন,

“বাস্তবতায় আজ ব্যাংক ছাড়া চলা কঠিন। তাই যারা নিরাপত্তার কারণে টাকা রাখতে চান, তারা যেন সম্ভব হলে ইসলামিক ব্যাংকে বা ব্যাংকের ইসলামিক উইংয়ে হিসাব খুলেন।”

তবে তিনি এটাও স্বীকার করেন, বাংলাদেশের অনেক ইসলামিক ব্যাংক বা ব্যাংকের ইসলামিক উইংও পুরোপুরি শরিয়াহভিত্তিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে না।

“রাষ্ট্রের মৌল কাঠামো ইসলামিক না হলে, শতভাগ শরিয়াহ মেনে ব্যাংক পরিচালনা সম্ভব নয়। তবু যেখানে সুদ থেকে বাঁচার চেষ্টা আছে, সেখানে থাকা ভালো।”

অবস্থাগত বাধ্যবাধকতা

কেউ যদি একেবারেই বিকল্প না পান, অর্থাৎ নিজের টাকাটা রাখার অন্য নিরাপদ জায়গা না থাকে, তবে শুধুমাত্র নিরাপত্তার জন্য ব্যাংকে টাকা রাখা যেতে পারে—কিন্তু সেই অর্থে কোনো ধরনের মুনাফা (ইন্টারেস্ট, ডিভিডেন্ড বা ইনস্টলমেন্ট) নেওয়া যাবে না।

শাইখ আহমাদুল্লাহ বলেন,

“যদি কেউ একান্ত বাধ্য হয়ে টাকা রাখেন, তবে কেবল নিরাপত্তার জন্য রাখবেন। কিন্তু কোনো লাভ বা স্কিমের অংশীদার হবেন না।”

শুধু টাকাই নয়, ভাবনাও গুরুত্বপূর্ণ

তিনি আরও বলেন, ইসলামে শুধু পাপ করা নয়, পাপকে স্বাভাবিক মনে করাও বড় পাপ।

“যে ব্যক্তি হারাম কাজ করে অনুতপ্ত থাকে, আরেকজন সেটাকে স্বাভাবিক মনে করে—এই দুইজনের মধ্যে পার্থক্য আকাশ-পাতাল।”

তাই একজন মুসলমানের উচিত সর্বোচ্চ চেষ্টা করা যেন তার অর্থনৈতিক লেনদেন শরিয়াহভিত্তিক হয় এবং কোনোভাবেই সুদ ব্যবস্থার অংশ না হয়।

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত