ইমাম গাযালীর মূল্যবান আটটি জীবনোপদেশ
১. বিতর্ক পরিহার
শিষ্যের প্রতি ইমাম গাযালীর প্রথম উপদেশটি হলো, যথাসাধ্য সম্ভব বিতর্ক পরিহার করে চলা। বিশেষ করে, অজ্ঞ ও মূর্খ লোকের সাথে অযথা বিতর্কে জড়িয়ে পড়া থেকে বিজ্ঞ ব্যক্তির সাথে আলোচনা এবং তার জ্ঞান থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য ইমাম তার শিষ্যকে উপদেশ দিয়েছেন।
২. খ্যাতি লাভের ইচ্ছা পরিহার
শিষ্যের প্রতি ইমাম গাযালীর দ্বিতীয় উপদেশ হলো, খ্যাতি লাভের ইচ্ছাকে পরিহার করা। কেননা, এটি মানুষকে মানুষের মূল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুৎ করে এবং এর ফলে কাজের জন্য কাজ করার আন্তরিকতা তার মধ্যে বিদ্যমান থাকে না।
৩. শাসকদের পরিহার
ইমাম গাযালীর তার শিষ্যের প্রতি তৃতীয় উপদেশ হচ্ছে, শাসকদের পরিহার করে চলার। কেননা তাদের সাথে যে কারো সংযোগ, মেলামেশা ও সামাজিকতা ওই ব্যক্তির জন্য জটিলতর ও বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।
৪. শাসকদের নিকট থেকে উপহার পরিহার
পারস্পরিক উপহারের আদান-প্রদান অনুমোদিত হলেও শাসক এবং সমাজের উচ্চস্তরের ব্যক্তিদের নিকট থেকে উপহার ও অর্থকে পরিহার করার জন্য ইমাম গাযালী তার শিষ্যকে উপদেশ দিয়েছেন। কেননা এর মাধ্যমে ব্যক্তি উপহার দানকারীর প্রভাবাধীনে চলে যেতে পারে।
৫. প্রত্যাশা অনুযায়ী আল্লাহর হক আদায়
আল্লাহর সাথে এমনভাবে সম্পর্ক তৈরি করার উপদেশ ইমাম গাযালী তার শিষ্যকে দিয়েছেন, যাতে নিজের অনুগত কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে প্রত্যাশিত সম্পর্ক অনুযায়ী এই সম্পর্ক গঠিত হয়।
৬ প্রত্যাশা অনুযায়ী অপরের সাথে আচরণ
নিজের জন্য প্রত্যাশিত আচরণ অনুযায়ী অন্যের সাথে আচরণ করার জন্য ইমাম গাযালী তার শিষ্যকে উপদেশ দিয়েছেন। রাসূল (সা.) এর হাদীস অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তির ঈমান সম্পূর্ণ হতে পারে না যদি না ওই ব্যক্তি নিজের জন্য যা চায়, অপরের জন্য তা না চায়।
৭. তা থেকেই শিক্ষা গ্রহণ করা, যা ব্যক্তির জন্য উপকারী
যে বস্তু বা বিষয় তার শিষ্যের জন্য উপকারী এবং কার্যকর, শুধু তা থেকেই জ্ঞান অর্জনের জন্য ইমাম গাযালী তার শিষ্যকে উপদেশ দিয়েছেন। এর মাধ্যমে ব্যক্তির জন্য জ্ঞান অনুধাবন ও আয়ত্ত্বাধীন করা সম্ভবপর হতে পারে।
৮. পৃথিবী থেকে শুধু প্রয়োজনীয় সম্পদ গ্রহণ
ইমাম গাযালী তার শিষ্যকে দুনিয়া থেকে শুধু তার জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদটুকুই নেওয়ার জন্য উপদেশ দিয়েছেন। অধিক সম্পদ মানুষকে অধিক জটিলতার মধ্যে নিক্ষেপ করে। এর ফলে আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার জন্য পথও জটিলতর হয়ে পড়ে।