মাশরাফি আরো ভয়ঙ্কর, আরো পরিণত
বিপিএলে মাশরাফি খেলছেন রংপুর রাইডার্সের হয়ে। দলটির নেতৃত্বও তার কাঁধে। চলতি বিপিএলের সবচেয়ে বেশি বাজেটের দল হলেও রংপুরের মাঠের খেলায় সে প্রভাব একদমই নেই। সর্বশেষ তিন ম্যাচে তাদের জিততে হয়েছে শেষ ওভারে গিয়ে। এর মধ্যে দুটি আবার শেষ বলে। ক্রিস গেইল ও ব্রেন্ডন ম্যাককালামের মতো ক্রিকেটার থাকলেও রংপুরকে জিততে হচ্ছে পুরো শক্তির সবটুকু খরচ করে।
তাদের কষ্টার্জিত সব জয়ে মাশরাফি নেতৃত্ব দিচ্ছেন একেবারে সামনে থেকে। অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফি যতোই দুর্দান্ত হোন না কেনো, পারফর্মার মাশরাফি যে নিজের সেরা সময় ফেলে এসেছেন, তা নিয়ে নিশ্চয় সন্দেহ নেই কারো। কিন্তু মাঠের মাশরাফি তা মনে করতেই দিচ্ছেন না। বরং দেখিয়ে যাচ্ছেন তার প্রথম তারুণ্যের উদ্যমী সময়ের নতুন নতুন দৃশ্য।
রংপুরের হয়ে বিপিএলে এখন পর্যন্ত তৃতীয় সেরা বোলার তিনি। ব্যাট হাতে তিনি পঞ্চম সেরা ব্যাটসম্যান! অথচ প্রায় এক বছর হয়ে গেলো তাকে টি-টোয়েন্টি থেকে এক রকম ছেঁটে ফেলা হয়েছে।
মাশরাফি এখনো ঠিক কতোটা সক্ষম, তার একটা ছোট একটা প্রমাণ পাওয়া গেছে ২৫ নভেম্বর। যেদিন তিনি হঠাৎ করেই নেমে যান তিন নম্বরে এবং ১৭ বলে ৪২ রানের এক বিধ্বংসী ইনিংস খেলে চমকে দিন সবাইকে। যে ইনিংসের সামনের ম্লান হয়ে যান স্বয়ং ক্রিস গেইলও। মাশরাফির ব্যাট হেসে উঠেছে পরের ম্যাচেও, ২৮ নভেম্বর জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে।
এ দিন অবশ্য খুব বেশি কিছু করার ছিলো না মাশরাফির। তারপরও তার ১০ বলে ১৭ রানের ইনিংসটি ছিলো রংপুরের জন্য জন্য অবশ্য দরকারি ব্যাটিং। ওই ইনিংসের কারণেই শেষ ওভারে গিয়ে নয় রানের চাহিদাটা খুব বড় কিছু হয়ে উঠতে পারেনি রংপুরের কাছে।
বিপিএলে এখন পর্যন্ত নয় ম্যাচের ছয় ইনিংসে ব্যাটিং করেছেন মাশরাফি। তাতে গড়ে রান তুলেছেন ২১-এর উপরে। যা অনেক ব্যাটসম্যানও পারছেন না।
ব্যাটসম্যান মাশরাফির চেয়ে আরো বেশি চিত্তাকর্ষক বোলার মাশরাফি। টি-টোয়েন্টিতে যে ধরনের বোলিং প্রয়োজন, তার পুরোটাই দিচ্ছেন তিনি। প্রয়োজনের সময় তুলে নিচ্ছেন উইকেট। কখনো বা আটকে দিচ্ছেন প্রতিপক্ষের চাকা। সব মিলিয়ে এই মাশরাফিকে অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি ভয়ঙ্কর ও বেশি পরিণত মনে হচ্ছে।
দর্শকরা নিশ্চিতভাবেই তাদের সবচেয়ে প্রিয় ক্রিকেটারের এমন রূপে মুগ্ধ। কিন্তু এই মুগ্ধতার সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে বিষাদও। কারণ মাশরাফিকে যে আর জাতীয় দলের জার্সি গায়ে দেখা যাবে না বাইশ গজে!