করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের জন্য ১০ দিনে হাসপাতাল বানাচ্ছে চীন ভিডিওসহ
এর আগে সার্স মহামারির সময় বেইজিং যেভাবে চিকিৎসাসেবার জন্য অবকাঠামো নির্মাণ করেছিল, সে আদলেই উহানে হাসপাতালটি নির্মিত হচ্ছে। হাসপাতালটির আয়তন হবে ২৫ হাজার বর্গমিটার। উহান পৌর কর্তৃপক্ষ আশা করছে, আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালের নির্মাণকাজ সমাপ্ত হবে।
চীনে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণে এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আক্রান্ত অবস্থায় রয়েছেন এক হাজার ২৮৭ জন। সংবাদমাধ্যম বিবিসি আজ শনিবার এ খবর জানিয়েছে।
এদিকে সংক্রমণ ঠেকাতে এরই মধ্যে এ ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল হুবেই প্রদেশে ভ্রমণে কড়াকড়ি আরোপ করেছে দেশটির সরকার। ওই প্রদেশ থেকে বাইরে বের হওয়ার সব পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে অভ্যন্তরীণ বাস চলাচল। এই কড়াকড়ির কারণে প্রদেশটির রাজধানী উহানসহ ১০টি শহরের অন্তত চার কোটি মানুষ কার্যত আটকে রয়েছেন।
অন্যদিকে বেইজিং ও সাংহাই কর্তৃপক্ষও আক্রান্ত এলাকাফেরত বাসিন্দাদের ১৪ দিন পর্যবেক্ষণে থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
এদিকে থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ভিয়েতনাম ও সিঙ্গাপুরেও এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী চিহ্নিত করা হয়েছে। চীনা নববর্ষের কারণে বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় এই ভাইরাস বিশ্বের অন্য দেশগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ছে। এ পরিস্থিতি নিয়ে জেনেভায় বৈঠকও করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডমিয়ার বলেছেন, ‘চীনা কর্তৃপক্ষকে বলব, এই ভাইরাস নিয়ে আরো গবেষণা করুন এবং ফলাফল জানান। আমাদের গবেষকরাও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছেন। এই ভাইরাস প্রতিরোধের ওষুধ ও ভ্যাকসিন তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। চীনে জরুরি অবস্থা জারি করলেও এটি এখনই বিশ্বব্যাপী ভয়াবহ উদ্বেগের কারণ হয়ে ওঠেনি।’
জানা গেছে, কোনো সরীসৃপ প্রাণী থেকে এই ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করলেও মানুষের মাধ্যমেই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। একজন আক্রান্ত রোগী থেকে এই ভাইরাস কমপক্ষে তিনজন মানুষের শরীরে সংক্রমিত হতে পারে।
এ ব্যাপারে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এরিক রুবিন জানান, কাশির মাধ্যমে এই ভাইরাস অন্যের শরীরে সংক্রমিত হয়। তাই এমন রোগীর কাছ থেকে দূরে থাকা উচিত। এ ছাড়া পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্য সচেতনতাই আপাতত এই ভাইরাসের সংক্রমণ রোধের প্রাথমিক উপায়।
করোনাভাইরাসের নামকরণের প্রধান সূত্র এই ভাইরাসটির আকার। ভাইরাসটি সূর্যের করোনা বা মুকুটের মতো দেখতে। এই ভাইরাসে সংক্রমিত রোগীর উপসর্গ হলো—সংক্রমণের সময় জ্বর, শ্বাসজনিত সমস্যা, গলা ফোলা। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসের কোনো টিকা বা প্রথাগত চিকিৎসা নেই। প্রতিকারের উপায় হিসেবে সংক্রমণ ঠেকানোর ওপরই ভরসা করছেন গবেষকরা।