পিরিয়ডের কারণে নির্বাসিত অবস্থায় সাপের কামড়ে নারীর মৃত্যু
দেশটির পশ্চিমাঞ্চলের হিন্দু অধিবাসীদের মাঝে শতাধিক বছর ধরে ‘চৌপদী’ নামের এক প্রথা প্রচলিত রয়েছে। এই প্রথায় প্রতি মাসে নারীর পিরিয়ডের সময়ে তাদেরকে ‘অশুদ্ধ’ মনে করা হয়। তাই তখন তাদের জন্য দৈনন্দিন সব কাজকর্ম ও স্বাভাবিক জীবনধারা নিষিদ্ধ। এমনকি নিজ ঘরেও তাদের থাকতে মানা।
এনডিটিভি জানায়, ওই প্রথা মানতে বাধ্য হয়ে চাচার গোয়ালঘরে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় সাময়িকের জন্য বসবাস করছিলেন ১৮-১৯ বছর বয়সী তুলসি শাহি। ওখানে থাকা অবস্থায়ই বিষাক্ত সাপের কামড়ে মারা যান তুলসি।
মেয়র জানান, দাইলেখ শহরের কাছে একটি ক্লিনিকে নেয়ার আগে তুলসির পরিবারের সদস্যরা ঘরোয়া পদ্ধতিতেই তার চিকিৎসা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেই চিকিৎসায় সাপের বিষের প্রতিষেধক না থাকায় আরও খারাপ হয়ে যায় তুলসির অবস্থা। তার ওপর সাম্প্রতিক মৌসুমি বৃষ্টিপাতে পাহাড়ি রাস্তার অবস্থা খারাপ হয়ে যাওয়ায় হাসপাতালে নিতে অনেক বেশি সময় লেগে যায়।
ঠিক সময় উপযুক্ত চিকিৎসা দেয়া গেলে তুলসি হয়তো বেঁচে যেতেন বলে নিউইয়র্ক টাইমসকে জানান তার বোন সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী কমলা শাহি। ‘কুসংস্কারের জন্য তার বোন মারা গেছে’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
২০০৫ সালে নেপালজুড়ে এই অমানবিক প্রথাটি অবৈধ ঘোষণা করে আইন জারি করা হলেও পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কয়েকটি গোত্রে এখনও প্রথাটি প্রচলিত। জাতিসংঘসহ বিশ্বের সবগুলো আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থা নারীর প্রতি এই নিষ্ঠুর আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে আসছে।
এর আগে গত ডিসেম্বরে পিরিয়ড চলাকালে জানালা বিহীন মাটির ঘরে থাকা অবস্থায় আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করার সময় অতিরিক্ত ধোঁয়ায় মারা যান ১৫ বছর বয়সী রোশনি তিরুয়া।
এর একমাস আগে ২১ বছর বয়সী আরেক নারী পিরিয়ডের নির্বাসনে থাকা অবস্থায় মারা গেলে দেশটির প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল চৌপদী প্রথা অবসানের আহ্বান জানান।