| ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১

পাস করেও যারা অসন্তুষ্ট তাদের জন্য করণীয়

২০১৮ জুলাই ২০ ১২:৫০:১০
পাস করেও যারা অসন্তুষ্ট তাদের জন্য করণীয়

যাহোক, সব কিছুর উর্ধ্বেও এবারের চিত্রটাকে একটু ভিন্ন ভাবেই দেখতে হবে। যদিও রাজনীতিক অনেক মতভেদ এখনই তৈরী হয়ে গেছে দেশের দুই প্রভাবশালী দলের মধ্যে। কিন্তু রাজনীনিক বিতর্ক যেখানেই শেষ হোক না কেন ফলাফল কিন্তু অরাজনৈতিক ছাত্র-ছাত্রীদের উপরই পড়েছে।

আমরা সব সময় বলি পরীক্ষার ফলাফল কখনো কারও ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারেনা। কিন্তু কারও ভাগ্য পরিবর্তন হোক আর না হোক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা কিন্তু এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের উপর অনেকাংশেই নির্ভর করে। আপনি যতো বড় মেধাবী হোন না কেন পরীক্ষার রেজাল্ট খারাপ হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার যোগ্যতায় অর্জন করতে পারবেন না। তখন হয়তো মনের আক্ষেপে বলতে হবে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বুঝতেই পারলো না কতো বড় একজন মেধাবী কে হারালো।

রাজনীতিকরা ফলাফল বিপর্যয়ের কারণগুলো উদঘাটন করতে থাক কিন্তু ছাত্র-ছাত্রীদের সেই সব বিষয়ে না ভাবলেও চলবে। কারন ফলাফলকে এখন আর বদলে দেওয়ার সুযোগ নিই। সুযোগ এতোটুকুই রয়েছে যেটুকু রেজাল্ট এতোদিনে সঞ্চিত হয়েছে সেটাকে যথাযথভাবে কাজে লাগানো। তবে এক্ষেত্রে আবেগকে কাজে না লাগিয়ে একটু বাস্তব মুখি চিন্তা করতে হবে। এ বিষয়ে কিছু উদাহরণ এবং আমার ব্যক্তিগত পরামর্শগুলো উল্লেখ করছি-

অতিরিক্ত আবেগ এবং নিজের সম্পর্কে উচ্চাকাংখা থাকা যাবে না:আমার এক দূর সম্পর্কের ভাগনে ছোটবেলা থেকেই খুব মেধাবী ছিলো। তো তার স্বপ্ন ছিলো সে ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হবে। কিন্তু এইএইচসি ফলাফল প্রকাশের পর তার যে অবস্থা দাড়ালো তাতে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্নে গুড়েবালি। আমি বললাম, ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হওয়াটাই জীবনের বড় কথা না। তুমি বরং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ট্রাই করো। আর তাছাড়া ঢাকার ভেতরে যেহেতু প্রতিযোগিতা অনেক বেশি সেহেতু ঢাকার বায়রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যদি পরীক্ষা দাও তাহলে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তো বেচারা বলে, তুমি আমাকে এতো নিচে নামার পরামর্শ কি করে দিলে বুঝলাম না। আমি রেজাল্ট খারাপ করেছি তো কি হয়েছে? আমার মেধা তো কমে যায় নি। তার কথা সত্য, প্রত্যেকটি ভর্তি পরীক্ষায় সে অনেক ভালো করেছে। কিন্তু রেজাল্ট এর সাথে যখন পরীক্ষার নাম্বার যোগ করা হয় তখন আর তার ভর্তি হওয়ার সুযোগ থাকে না। যাহোক, শেষ পর্যন্ত তার কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ হয়নি।

সুতরাং এক্ষেত্রে আবেগকে প্রাধান্য না দিয়ে নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী যদি সে চেষ্টা করতো তাহলে হয়তো সে মোটামুটি ভালো কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারতো। এ ক্ষেত্রে করণীয় কি?

বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক চিন্তা না করে চান্স পাওয়া নিয়ে ভাবতে হবে:কেউ একজন হয়তো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দেখতে গেছে আর এসে বলছে আরে এটা একটা বিশ্ববিদ্যালয় হলো? এরচেয়ে আমাদের স্কুল অনেক বড়। এ টাইপের চিন্তা করাটা বোকামি ছাড়া আর কিছু না। আরে ব্যাটা আগে চান্স পাও তারপর এসব বলো। অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার আগে অনেক উল্টা পাল্টা কথা বলে। আরে, আমি পড়বো ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে! ওখানে মানুষ পড়ে? এইসব কথা না বলে নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পরীক্ষা দাও। একটা বিষয় সব সময় মনে রাখা উচিৎ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা হলো বাঘের সাথে সিংহের লড়াই। নিজে মুরগি হয়ে থাকলে এখানে নাক না গলানোটাই ভালো।

সুযোগ থাকলে দ্বিতীয়বার এইচএসসি পরীক্ষা দাও:বিশ্ববিদ্যালয়ে খারাপ রেজাল্ট এর কারনে দ্বিতীয়বার পরীক্ষা ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার চাইতে এইচএসসি পরীক্ষা দ্বিতীয়বার দেওয়া অনেক ভালো। এক্ষেত্রে আপনার রেজাল্ট ভালো আসবে এবং সংশ্লিষ্ট কোর্স সম্পর্কে আপনার ধারনা সুষ্পষ্ট হবে। এক্ষেত্রে লজ্জার কিছু নেই। জীবনে অনেক বড় একটা লাফ দেওয়ার আগে একটু পিছিয়ে যেতেই হয়।

বিভাগ পরিবর্তন করা যেতে পারে:এ কথা সত্য যে বিজ্ঞান অনুষদ কিংবা বানিজ্য অনুষদের চাইতে মানবিক অনুষদে ভর্তির সুযোগ পাওয়া তুলনামূলকভাবে সহজ। কারন এই অনুষদে প্রতিযোগিতা কম কিন্তু আসন তুলনামূলকভাবে বেশি। তাই বিজ্ঞান কিংবা বানিজ্য বিভাগের ছাত্ররা খুব সহজেই এই অনুষদে চান্স পেতে পারে। মনে রাখবে চাকরীর সময় খুব কমই বিষয়ভিত্তিক বিষয় বিবেচনা করা হয়। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে অনেকেই ব্যাংকে জব করে। সুতরাং সাবজেক্ট নিয়ে মাতামাতি না করাটাই ভালো।

চাকরীর সুযোগ থাকলে হাতছাড়া করবে না:হয়তো ভাবছো এখনি কি চাকরীর সময় হয়ছে নাকি? কিন্তু আসলে বাস্তবতা যতোটুকু দেখেছি তাতে কেউ কেউ অনার্স মাস্টার্স শেষ করে এসে এইচএসসি পাশের সরকারী চাকরীর জন্য অ্যাপ্লাই করে। সুতরাং তুমি যদি পড়াশোনায় মোটামুটি লেভেলের হয়ে থাকো তাহলে এখনই চাকরীর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। নাহলে পরে দেখবে আমও যাবে আবার বস্তাও খুঁজে পাবে না।

সবচেয়ে বড় কথা হলো, রেজাল্টের পর অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রীরা অধিক আবেগী হয়ে পড়ে। তাদের কাছে বাস্তবতার চাইতে আবেগটা বেশি বড় হয়। অনেকে নিচের ট্র্যাক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আমি আশা করবো তোমাদের যাতে এরকম না হয়। জীবনটা শুধুই তোমার হলেও এ জীবনকে নষ্ট করার অধিকার তোমার নেই। কারন তোমার বাবা মা তোমাকে নিয়ে অনেক বড় স্বপ্ন দেখে ফেলেছে। তারা স্বপ্নে যদি হাতি দেখে থাকে এবং তোমার সামর্থের মধ্যে যদি হাতি না থাকে তাহলে অন্তত তাদের একটা মহিষ এনে দাও। তোমাকে নিয়ে যাদের এতো স্বপ্ন তাদেরকে একেবারে রিক্ত হস্তে রাখবে না প্লিজ।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

ক্রিকেট

তাসকিনের পরিবর্তে বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের স্কোয়াডে যে ক্রিকেটারকে সুযোগ দিলো বিসিবি

তাসকিনের পরিবর্তে বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের স্কোয়াডে যে ক্রিকেটারকে সুযোগ দিলো বিসিবি

গতকাল শেষ হল বাংলাদেশ জিম্বাবুয়ে সিরিজ। এই সিরিজ ৪-১ জিতে নেয় বাংলাদেশ। তবে সিরিজের ৪র্থ ...

বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দল প্রকাশ করলেন নাজমুল আবেদীন

বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দল প্রকাশ করলেন নাজমুল আবেদীন

দরজায় কড়া নাড়ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। আগামী ১ জুন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রের মাঠে শুরু হবে ...

ফুটবল

বায়ার্ন কি পারবে রিয়ালকে বধ করতে?

বায়ার্ন কি পারবে রিয়ালকে বধ করতে?

চ্যাম্পিয়নস লিগেরগের সেমি ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে মে ৯ তারিখ রাত ১ টায় মুখোমুখি হবে ক্লাব ...

কোপা আমেরিকার আগে বড় ইনজুরি মেসি সহ দুই বিশ্বকাপজয়ী তারকা খেলোয়াড়

কোপা আমেরিকার আগে বড় ইনজুরি মেসি সহ দুই বিশ্বকাপজয়ী তারকা খেলোয়াড়

জুনের তৃতীয় সপ্তাহে শুরু হচ্ছে দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল টুর্নামেন্ট কোপা আমেরিকা। তবে এবারের অনুষ্ঠানটি শুধু ...



রে