মিশার আছে অনুশাসন, আমার আছে প্রশাসন
জায়েদ খান যে এমন কথা বলেছেন, এর সত্যতা সেদিনের অনুষ্ঠানে থাকা কয়েকজন শিল্পী প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। পুরো বিষয়টি সম্পর্কে জানতে আজ সোমবার বিকেলে জায়েদ খানকে ফোন করা হলে তিনিও এমন কথা বলেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন।
অনুশাসন আর প্রশাসন বলতে কী বোঝাতে চেয়েছেন, জানতে চাইলে জায়েদ বলেন, ‘প্রশাসন বলতে বুঝিয়েছি, সমিতি চালানোর জন্য আমাদের সমিতির যে প্রশাসনিক ক্ষমতা আছে—সেটাকে। এই যেমন মিশা ভাই আমার সিনিয়র, তিনি আমাকে শাসন করবেন। আর ২১ জনের যে কমিটি আছে, তাঁদের মধ্যে প্রশাসনিক ক্ষমতাটা যেভাবে আছে, কাজ করব সেটাই। আমাদের মিটিংগুলো কার্যকর করার বিষয়টিকে, কাজ করার পদ্ধতি, আমাদের কাগজপত্র ঠিক করা—এসবকে আমরা প্রশাসন বুঝিয়েছি।’
এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো ব্যাপার ছিল না তো?এমন প্রশ্নে জায়েদ বলেন, ‘নাহ। হোয়াই? আমরা শিল্পী। আমরা কোমল, আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়ে কথা বলার কোনো প্রশ্নই আসে না। সবাই বলে, শিল্পী সমিতির প্রশাসনিক কোনো কার্যক্রম নেই। কোনো সভা হলে সেসব বাস্তবায়ন হয় না। সবকিছু স্থবির হয়ে থাকে। এসব কারণে প্রশাসনের কথা বলেছি।’এবারের শিল্পী সমিতির নির্বাচনে এফডিসিতে পুলিশের উপস্থিতি ছিল ব্যাপক।
আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও শপথ গ্রহণের দিন এফডিসিতে বিপুলসংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি নিয়েও অনেক কথা হয়েছে। শিল্পী সমিতির নতুন কমিটির সদস্যদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সেদিন অনুষ্ঠানে পুলিশ উপস্থিত ছিল বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রশীদ।
নির্বাচন ও শপথ গ্রহণের সময়টাতে এফডিসিতে পুলিশের উপস্থিতির বিষয়টি মনে করিয়ে দিতে জায়েদ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনার তাঁদের চিঠি দিয়ে অনুমতি চেয়েছেন। বাইরে থেকে কেউ এসে নির্বাচন বানচাল করতে পারে—এমন তথ্যের কারণে পুলিশ ছিল বলে শুনেছি।’৫ মে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এবারের নির্বাচনে মিশা সওদাগর ও জায়েদ খান যথাক্রমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে আরেক সভাপতি প্রার্থী নায়ক ওমর সানী ভোট পুনরায় গণনার আবেদন করলে হিসাব পরিবর্তন হলেও ফলাফল অপরিবর্তিত থাকে। এরপর নির্বাচনের ভোট গণনায় ব্যাপক গরমিল, ভোটের দিন এফডিসিতে বহিরাগত ব্যক্তিদের উপস্থিতি, এরপর আপিল বোর্ডের সদস্যদের কাছে লিখিত অভিযোগ করার পরও কার্যকর কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় বাদী হয়ে আদালতে অভিযোগ করেন রমিজ উদ্দিন নামের একজন চলচ্চিত্র প্রযোজক ও অভিনেতা।
তাঁর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার দ্বিতীয় সহকারী জজ আদালতের বিচারক তথ্য-উপাত্ত যাচাই করে নির্বাচনের বিষয়ে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ১ থেকে ৪ নম্বর বিবাদীদের ৫ থেকে ২৫ নম্বর বিবাদীদের প্রতি ক্ষমতা হস্তান্তর না করার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। ১ থেকে ৪ নম্বর বিবাদীদের মধ্যে আছেন নির্বাচন কমিশনার মনতাজুর রহমান আকবর,
এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন কুমার ঘোষ, আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন দিলু ও চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি শাকিব খান। আর ৫ থেকে ২৫ নম্বর বিবাদীদের মধ্যে আছেন মিশা সওদাগর, জায়েদ খানসহ এবারের নির্বাচনে বিজয়ী অন্য সদস্যরা। বাদীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন কাজী মোহাম্মদ নজিবুল্লাহ হিরু ও আমিনুর রহমান।