এই প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে যে রেকর্ড,গড়লেন মুস্তাফিজ
দুঃখজনক ব্যাপার হল, এ ওভার বাউন্ডারিতে ১৮ রানে থেমে যায় তার ইনিংস। আর এরপরই তাসের ঘরেরমতো ভেঙে পড়ে টাইগারদের মিডল অর্ডার। ১৫৬ রান থেকে ১৯৬ রানের মধ্যে পড়ে মোটে ৬টি উইকেট। তবে শেষ পর্যন্ত মোস্তাফিজের ছোট্ট ইনিংসটি অনুপ্রাণিত করেছে সবাইকে। একেবারে শেষের দিকে সানজামুল-মোস্তাফিজ হাল না ধরলে নিশ্চিত ২০০ এর ঘরেই আটকা পড়তে হবে টিম বাংলাদেশকে।
টাইগারদের সংগ্রহ ছিল ২১৬। বলা চলে ছোট সংগ্রহও বটে। তারপরও মরা উইকেট হওয়াতে নিজেদের ওপর বেশ আস্থা ছিল সাকিব-মাশরাফিদের। তাই তো আজো অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসানের হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক মাশরাফি। প্রথম ওভারে সাফল্যের দেখা না পেলেও ঠিকই ৬ষ্ঠ ওভারের সময় কড়ায় গণ্ডায় বুঝে নেন নিজের পাওনা। তবে ক্যাপ্টেন মাশরাফি তার প্রথম স্পেলের দ্বিতীয় ওভারেই জিম্বাবুয়ের ওয়ানম্যান আর্মি খ্যাত মাসাকাদজাকে দিয়ে উইকেটের উদ্বোধনী করেন। আর নবম ওভারের সময় ফের উইকেট তুলে নেন তিনি। তার দ্বিতীয় শিকার ছিল এরভিন।
মোট কথা প্রথম ১০ ওভারে ৪ উইকেটের বিনিময়ে জিম্বাবুয়েকে ৩৯ রান করতে দেয় স্বাগতিকরা। সাকিব-মাশরাফির পর নিজেদের প্রথম স্পেল শুরুতে চমক দেখান সানজামুল-মোস্তাফিজ। মোস্তাফিজকে কতটা কিপটে হতে পারে তার প্রমাণ দিয়েছেন মঙ্গলবারের ম্যাচ। প্রথম চার ওভারে মাত্র একরান দেন। শেষের দিকে ত্রাস চালিয়ে জিম্বাবুয়েকে ১২৫ রানে বেধে ফেলে বাংলাদেশ। অর্থাৎ বাংলাদেশ এক উইকেটে জয় লাভ করে। এ নিয়ে দলটির বিপক্ষে টানা ১৩টি ওয়ানডেতে জয় পায় মাশরাফিরা।
ম্যাচের ১৩ ওভারে বোলিংয়ে আসেন বাংলার বিস্ময় বালক মোস্তাফিজুর রহমান। মোস্তাফিজের কাটারে বারবার পরাস্থ জিম্বাবুইয়ান রাজা। প্রথম ৪ ওভারে মাত্র মাত্র ১ রান দিয়েছেন কাটার মাষ্টার মোস্তাফিজ। যার প্রথম ৩ ওভার মেডেন শুধু তাই নয় প্রথম ২৩ বল ডট। এটা প্রথম বাংলাদেশি হিসাবে মোস্তাফিজের রেকর্ড। স্লোয়ার এবং কাটারের মায়াবী মিশ্রনে দিশেহারা সিকান্দার রাজা। কারন মোস্তাফিজের প্রথম তিনটি ওভার খেলতে হয়েছে তাকে। হয়তো সে ভুক্তোভুগী ভাল বলতে পারবেন কেমন ছিল মোস্তাফিজের সেই ওভার গুলো।
নিজের দ্বিতীয় স্পেলের প্রথম বলেই ডাউন দ্যা ট্রাকে এসে মোস্তাফিজেকে বাউন্ডারি হাকান রাজা। পরের বলে ব্যাটের ভিতরের কানায় লেগে নন স্টপ অঞ্চল দিয়ে বাউন্ডরীরর কাছাকাছি ২ রান নিয়ে সন্তুষ্ট রাজা। কিন্তু অপর প্রন্তে বেজায় অখুশি কাটার মাষ্টার। স্লোয়ার ও কাটারের মিশ্রনে তৃতীয় বলটি করছেন ফিজ। ব্যাটের ভিতরের প্রান্তে লেগে এবার রাজার স্টাম্প উড়ে গেল।৩৯ রান করে জিম্বাবুয়ের অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরের পথ ধেরেন রাজা। ম্যাচে মুস্তাফিজের ২১ বল মোকাবেলা করে মাত্র ৬ রান নিয়েছেন রাজা।এর আগে ২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টানা পাচ ওভার মেডেন নেওয়ার রেকর্ড গড়েন ইংল্যান্ডের জেমস এন্ডারসন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা ১৩ জয়ের দিনে বাংলাদেশের রেকর্ডের ছড়াছড়ি।
প্রসঙ্গত, ম্যাচটিতে মোটে তিনটি রেকর্ড গড়েন তামিম ইকবাল। হোম অব ক্রিকেট মিরপুর স্টেডিয়ামে ৫টি শতক ও ১৫টি অর্ধশকের বিনিময়ে তামিমের রান সংখ্যা এখন ২৫৪৯ রান (২৪৭৩+৭৬)। অন্যদিকে তালিকায় দ্বিতীয়তে নেমে আসা শ্রীলঙ্কার সাবেক অধিনায়ক সনাৎ জয়সুরিয়া কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ৭১ ম্যাচে ৭০ ইনিংস খেলে ৪টি শতক ও ১৯টি অর্ধশতকের সাহায্যে করেন ২৫১৪ রান।
এ ছাড়াও ওয়ানডে ফরম্যাটে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ৬০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তামিম। ১৭৬ ম্যাচে ১৭৪ ইনিংস খেলে তামিমের রান ছিল ৫,৯৩৪। ৪০টি অর্ধশতক ও ৯টি শতকের সাহায্যে তিনি এই রান করেন। তবে আজ ৮৬ রান যোগ হওয়াতে ৬ হাজার ছাড়িয়ে তামিমের রান ৬০২০।
আরেকটি রেকর্ড হচ্ছে, এই ৫ থেকে ৬ হাজার রানের ঘরে পৌছাতে সবচেয়ে কম ইনিংস খেলেছেন তামিম। এ দিক থেকে ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি ও হাশিম আমলাকে পেছনে ফেলেছেন তিনি। তামিম খেলেছেন ১৭ টি ইনিংস, কোহলি ২২ এবং আমলা ২৩ ইনিংস খেলেছেন।