টিম ম্যানেজম্যান্ট আমাকে স্বাধীনতা দিয়েছে: বিজয়
ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচে দাপটের সাথে জিতে আগেভাগেই ফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। এই সাফল্যের পেছনে একটি দল হয়ে খেলাটাই মূখ্য ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন বিজয়, 'জয়ের পর সবারই ভালো লাগার বিষয় থাকে। অবশ্যই সবাই ভালো খেলছে। আমরা দল হিসেবে ভালো খেলতে পারছি। এখন বেশ নির্ভার লাগছে।'
প্রথম দুই টি ম্যাচেই ব্যাটসম্যানরা যেভাবে পারফর্ম করেছে, তেমনি বোলাররা। ওপেনার তামিম ইকবালের সাথে মারমুখী শুরু এনে দেন বিজয়। এরপর সেটি পরবর্তীতে ধরে রাখেন তামিম-সাকিব-মুশফিক-মাহমুদ উল্লাহ-সাব্বিররা। ব্যাটম্যানদের দুর্দান্ত পারফরমেন্স বোলারদের কাজ সহজ করে দেয়। মাশরাফি-রুবেল-নাসিরের সাথে সাকিবের ঘূর্ণি ভুগিয়েছে জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানদের। পাশাপাশি মাশরাফির নেতৃত্ব তো আছেই। প্রথম দুই ম্যাচের পারফরমেন্স স্পষ্টভাবেই বলছে- দলগত পারফমেন্স হলে সহজ জয়ের ঢেঁকুর তুলতে পারে বাংলাদেশ।
মাশরাফি-তামিম-সাকিব-মুশফিকুর-মাহমুদুল্লাহর মতো সিনিয়ররা থাকলে দলগত পারফরমেন্সও বেরিয়ে আসে বলে মনে করেন বিজয়, 'আমরা সবাই এখন টিম হিসেবে খেলছি। সবাই চেষ্টা করছে বাংলাদেশকে বড় জায়গায় নিয়ে যেতে। আর একটা ব্যাপার হলো, আমাদের দলে বেশ কয়েকজন সিনিয়র ক্রিকেটার আছে। যারা একা হাতে ম্যাচ জেতাতে পারেন এবং যে কোনো জায়গায় নিয়ে যেতে পারেন।'
'এই সিরিজে সবাই স্বাধীনতা নিয়ে খেলছে, যা খুব দরকার ছিল। ড্রেসিংরুমে থাকলে একটা ভালো লাগা কাজ করে। তামিম ভাইয়ের ১১ হাজার রান, সাকিব ভাইয়ের ১০ হাজার রান, মুশফিক ভাইয়ের ৩০০ ম্যাচ, মাশরাফি ভাইয়ের নেতৃত্ব, রিয়াদ ভাইয়ের মতো দারুণ ফাইটার। এ রকম যারা আছে, মুস্তাফিজুরের মত এ রকম একজন খেলোয়াড়ও আছে। তাই ড্রেসিংরুম এখন অনেক ভারি। যেখানে থাকলে মনে হয় আমাকেও আরো ভালো কিছু করতে হবে। ড্রেসিংরুমে থাকলে মনে হয়, বাংলাদেশ এখন অনেক বড়।'
২০১২ সালে খুলনায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ অভিষেক হয় বিজয়ের। ঐ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচেই সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। এরপর বাংলাদেশ দলের ওপেনার হিসেবে আস্থার প্রতীক হয়েই ছিলেন বিজয়। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে ২০১৫ বিশ্বকাপে নেলসনে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে ঘাড়ের ইনজুরিতে পড়ার পর আর জাতীয় দলে সুযোগ পাননি। তার বিরুদ্ধে 'স্বার্থপর' ব্যাটিংয়ের গুরুতর অভিযোগ তুলছিলেন বিসিবি কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সতীর্থরাও।
এবার নতুন রূপে দেখা দেওয়া বিজয় বেশ মারমুখী মেজাজেই খেলছেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪ বাউন্ডারিতে ১৪ বলে ১৯ রান করেন। ইনিংস বড় করতে না পারলেও নিজের মারমুখী মেজাজ দেখান বিজয়। দ্বিতীয় ম্যাচে শুরুতে জীবন পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৩৭ বলে ৩৫ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরেন তিনি। ইনিংসের শুরু থেকেই বিজয়ের এমন মারমুখী মেজাজের কারণ নাকি টিম ম্যানেজম্যান্টের দেওয়া স্বাধীনতা।
বিজয় বলেন, 'টিম ম্যানেজম্যান্ট থেকে আমাকে আমার মত করে খেলার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। দল যেভাবে চাচ্ছে চেষ্টা করছি সেভাবেই খেলার জন্য। আসলে স্বাধীনতা পেলে তো অবশ্যই ভালো লাগে। নিজেরটা আরও দেখানো যায় কতটুকু পারা সম্ভব, কতটুকু পারি। দল যেভাবে চাচ্ছে সেভাবেই খেলছি। আবার কোনো এক ভুলে আউটও হয়ে যেতে পারি। আসলে লাইফটা খেলার একটা অংশ। আমার কাছে মনে হয় লাইফের বলটা চলে গেছে তো চলে গেছে। পরবর্তী বলটা ফোকাস করি সব সময়। এখন থেকে এভাবেই খেলার চেষ্টা করব।'