‘ভাগ্যরাজকে দিয়ে ভাগ্যের পরিবর্তন দূর, কপালে মিলল ছাই’
নিজেরা খেয়ে না খেয়ে পরিবারের সন্তানের মতো বড় ক'ষ্ট করে তৈরি করেছিলাম বিশাল আকৃতির আমা'র ভাগ্যরাজকে। ২২ লাখ টাকা দামের আশা নিয়ে গাবতলীর হাটে গেলেও এত দামের কাছে কোনো ক্রেতা না আসায় ভারাক্রান্ত মন নিয়ে ফিরে আসতে হয়েছে।
সাটুরিয়া উপজে'লার দেলুয়া গ্রামের খান্নু মিয়া এবার কোরবানির ঈদের জন্য তৈরি করেছিলেন হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান জাতের গরু ভাগ্যরাজ। ৫০ মণ ওজনের উপরে ভাগ্যরাজকে এবারো কোরবানির ঈদে বিক্রি করতে না পারায় হতাশ তিনি।
এর আগে তার হাতে তৈরি করা দেশের সবচেয়ে বড় গরু রাজাবাবুকে বিক্রি করেছিলেন ১৮ লাখ টাকায়। তার পরের বছর লক্ষ্মীসোনা নামের বিশাল আকৃতির গরু বিক্রি করেছেন ১৬ লাখ টাকা। সেই দুটি গরু বিক্রি করে তিনি লাভবান হতে পারেননি। কিন্তু এবার ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য তৈরি করেছিলেন ভাগ্যরাজকে। তাও বিক্রি করতে পারলেন না।
খান্নু মিয়া বলেন, এর আগের দুই ঈদে রাজাবাবু আর লক্ষ্মীসোনা বিক্রি করে লাভবান হতে পারিনি। তাই বছর খানেক আগে চার লাখ টাকা দিয়ে হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড় তৈরি করেছিলাম। তার নাম দিয়েছি ভাগ্যরাজ। মূলত ভাগ্যের পরিবর্তন করার জন্যই এই নাম রাখা হয়েছে। ওজন ৫০ মণের ঊপরে। এই ভাগ্যরাজকে পরিবারের সন্তানের মতোই লালন পালন করেছি। অনেক আশা নিয়ে এবং ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য ভাগ্যরাজকে গাবতলীর হাটে নিয়ে গিয়েছিলাম। আমি ২২ লাখ টাকা দাম হাঁকিয়েছি। কিন্তু ক্রেতারা আমা'র এই দামের ধারে কাছেও আসেনি। ৫ লাখ টাকা দাম উঠার কারণে ভাগ্যরাজকে বিক্রি করিনি। ঈদের পরদিন ভাগ্যরাজকে বাড়ি নিয়ে এসেছি। ভাগ্যের পরিবর্তন তো দূরের কথা আমা'র ভাগ্যের কপালে ছাই।
খান্নু মিয়ার মেয়ে ইতি আক্তার জানান, ভাগ্যরাজের খাবার তালিকায় ছিল আপেল, মাল্টা, কলা, আখের গুড়, ভুট্টা, ভূষি। প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার টাকার খাবার লাগে ভাগ্যরাজের। দিনে শ্যাম্পু দিয়ে ৪-৫ বার গোসল এবং সর্বক্ষণই ফ্যানের বাতাসে রাখা হতো। পরিবারের সদস্যদের যেভাবে লালনপালন করতে হয় ভাগ্যরাজকে আম'রা সেই ভাবেই লালন পালন করেছি। তবে ক'ষ্ট হচ্ছে বিক্রি করতে পারলাম। এতদিনের আমাদের ঘাম ঝরানো ক'ষ্ট বিফলে গেল।
এদিকে সাটুরিয়া উপজে'লার বিল্লাল হোসেনের বিশাল আকৃতির সিনবাদও বিক্রি হয়নি। ২৫ লাখ টাকা দামের আশায় গাবতলী হাটে নিয়ে গেলে মাত্র ১০ লাখ টাকা দাম উঠে। এত কম দামে সিনবাদকে বিক্রি করতে নারাজ বিল্লাল হোসেন। আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় ঈদের পর দিন সিনবাদকে ফিরিয়ে আনা হয় সাটুরিয়াতে। তার মনেও অনেক ক'ষ্ট।