দেশে ফেরা রায়হান কবিরের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন মালয়েশিয়ান
আমার দেশের কর্তৃপক্ষ আপনাকে অযথা কষ্টের মধ্যে ফেলেছে। আমাকে ক্ষমা করুন। অন্য কারও পক্ষ থেকে নয়, আমি ব্যক্তিগতভাবে একজন মালয়েশিয়ান হিসেবে আপনার কাছে ক্ষমা চাইছি। আমি খুশি যে আপনি বাড়িতে নিরাপদে পৌঁছেছেন এবং আশা করছি সামনে আপনার ভালো দিন আসুক। ওপরওয়ালা রহমত করুক। শুভ কামনা।
গতকাল শনিবার রাত ৭টা ৩৯ মিনিটে করা এই টুইটের নিচে মালয়েশিয়ার আরও অনেক নাগরিক মন্তব্য করেছেন। অন্তত ৩১ জন রিটুইট করে তাদের মন্তব্য প্রকাশ করেছেন। এর আগে, মালয়েশিয়ার বিভিন্ন নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিরাও রায়হানের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ করেন।
এর মধ্যে মালয়েশিয়ার আইনজীবীদের সংগঠন লইয়ারস ফর লিবার্টি (এলএফএল) এক বিবৃতিতে বলছে, রায়হানের বিপক্ষে যেভাবে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেটা নিপীড়নমূলক। আল-জাজিরার প্রতিবেদনে রায়হানের বক্তব্যটি তারা দেখেছেন। সেখানে খুব সূক্ষ্মভাবে বিচার করলেও মালয়েশিয়ার আইনের কোনোরকম লঙ্ঘন ঘটেনি। এখানে কেবল অভিবাসীদের ওপর দুর্ব্যবহারের ব্যাপারে তার হতাশার কথা ব্যক্ত করেছিলেন রায়হান।
এলএফএল বলছে, যেভাবে রায়হানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে এবং ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করেছে, সেগুলো অভিবাসন আইন ১৯৫৯/৬৩-এর ৯(১) (সি) ধারার পরিপন্থি, অর্থাৎ অনথিভুক্ত। কারণ, কেউ যদি রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কিছু বলে, তবেই কারো ওয়ার্ক পারমিট বাতিল হতে পারে। কিন্তু, রায়হান এমন কিছু বলেনি। কাজেই তার বিরুদ্ধে যে ধরনের অভিযোগ আনা হোক, আদৌতে সেটি টিকবে না।
প্রসঙ্গত, গত ৩ জুলাই আল জাজিরার ইংরেজি অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে ‘লকডআপ ইন মালয়েশিয়ান লকডাউন-১০১ ইস্ট শীর্ষক এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানে মালয়েশিয়ায় থাকা প্রবাসী শ্রমিকদের প্রতি লকডাউন চলাকালে দেশটির সরকারের নিপীড়নের চিত্র তুলে ধরা হয়।
সেখানে দেখানো হয়েছে, কর্মহীন ও খাবারের সংকটে থাকা অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘন করে ঘর থেকে টেনে-হিঁচড়ে ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ওই প্রামাণ্য প্রতিবেদনে বাংলাদেশিদের পক্ষে বক্তব্য দেন রায়হান কবির।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মালয়েশিয়ার পুলিশ তার বিরুদ্ধে সমন জারি করে। ২৪ জুলাই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে, মালয়েশিয়ার পুলিশ তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনতে পারেনি। সর্বশেষ শুক্রবার দিনগত রাত ১টার দিকে মালয়েশিয়ার ফ্লাইটে দেশে আসেন রায়হান কবির।