যৌতুক ছাড়া বিয়ে করলেই থাকছে যেসব পুরস্কার
যৌতুকবিহীন বিয়ে করলেই টিভি ফ্রি এমন ঘোষণা দেয়ার পর গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মনোহরপুরে গেলো এক বছরে কাউকেই পাওয়া যায়নি। শেষ পর্যন্ত কুমারগাড়ি গ্রামে খুঁজে পাওয়া যায় তাহের-রেহেনা দম্পতিকে। বর-কনে কোনো পক্ষের মধ্যেই যৌতুক লেনদেন হয়নি। খোঁজখবর নিয়ে সত্যতা পাওয়ার পর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পারাপারের কর্মীরা বৃহস্পতিবার (২৮ মে) ৩২ ইঞ্চি এলইডি টেলিভিশন উপহার দেন ওই দম্পতিকে।
পারাপারের নির্বাহী পরিচালক শাহ সবুর হোসেন বিদ্যুৎ বলেন, গ্রামে বিয়েতে যৌতুককে নিরুৎসাহিত করতে যৌতুকবিহীন বিয়ে করলে টিভি উপহার দেয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। ঘোষণার দেড় বছরের মাথায় খুঁজে পাওয়া দম্পতি প্রথম বারের মতো জয় করে তাদের ঘোষিত উপহার।
তবে হাসিখুশির এমন আয়োজনে হঠাৎ নেমে আসে নীরবতা। বর আবু তাহেরের জীবনের করুণ কাহিনী মুহূর্তের মধ্যে বদলে দেয় পুরো আয়োজন। বিষাদের ছায়া গ্রাস করে উপস্থিত সবাইকে। তাহেরের জীবনের ট্রাজেডি জেনে নিস্তব্ধ আয়োজকরাও।
সেই বাল্যকালে একটি হত্যা মামলায় পুলিশের হাতে ধরা পড়েন তাহের। ওই মামলার অন্য আসামীরা এখনো পলাতক। তাহের গ্রেফতারের পর কেউ খবর রাখেনি তার। দরিদ্র বাবা-মা মামলার তদবির পর্যন্ত করতে পারেনি। টানা চৌদ্দ বছর কেটে গেছে কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্টে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে মুক্তি মেলে তার। বাড়ি ফিরে মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। এক প্রতিবেশীর দয়ায় একট টুকরো মাটিতে ছোট্ট একটি ঘর তুলে দিনমজুরির উপর ভর করে নতুন জীবন শুরু করেন তিনি। এরপর ২০১৯ সালে পাশের গ্রামের দিনমজুর কন্যা রেহেনা আক্তারকে বিনা যৌতুকে বিয়ে করে সংসার পাতেন তাহের।
পারাপারের নির্বাহী পরিচালক সবুর হোসেন বলেন, তাহের ও রেহেনাকে তারা আরো সহযোগিতা করবেন। যাতে তাদের সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরে আসে। তাদের জীবনে যাতে আলো ফিরে আসে। আবার যাতে পোড় খাওয়া তাহের ঘুরে দাঁড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে সেজন্য সার্বিক সহযোগিতা করবে পারাপার।