বাড়িতে মায়ের লাশ, এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে মেয়ে
শোকে দুঃখে বার বার নিজেকে হারিয়ে ফেললেও সহপাঠী ও কেন্দ্র সচিবদের সহযোগিতায় ওই ছাত্রী পরীক্ষা দেয়। এ ঘটনায় সালথা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরীক্ষাকেন্দ্রে গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে।
ছাত্রীর মায়ের মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর এক হাতে চোখ মুছতে ও অন্য হাত দিয়ে খাতায় উত্তরপত্র লিখতে দেখা যায় সুমাইয়াকে। সংবাদ পেয়ে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষাকেন্দ্রের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মাদ মোবাশ্বের হাসান পরীক্ষাকেন্দ্রে ছুটে গিয়ে ওই শিক্ষার্থীকে সান্ত্বনা দেন। এ সময় আবেগঘন মুহূর্ত ছড়িয়ে পড়ে ওই কক্ষে। সুন্দরভাবে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান ইউএনও।
জানা যায়, এসএসসি পরীক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার জেলার সদর উপজেলার কানাইপুর গ্রামের মো. সহিদ মোল্যার মেয়ে। সুমাইয়া সালথা উপজেলার আটঘর উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈকত মল্লিক ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল খায়ের সাংবাদিকদের জানান, গতকাল রোববার রাতে সন্তান প্রসব করার সময় ঢাকার একটি হাসপাতালে সুমাইয়ার মা মারা যান। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সুমাইয়ার মায়ের লাশ বাড়িতে এসে পৌঁছায়। মায়ের লাশ বাড়িতে রেখেই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সুমাইয়া।
আটঘর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহিদুর রহমান খান বলেন, বেলা ১১টায় সুমাইয়ার মায়ের লাশ দাফন করা হয়েছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে সারা দেশে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ওই দিন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাবাকে হারান ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়নের বাবুরচর গ্রামের এসএসসি পরীক্ষার্থী তাহমিনা। পরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহপাঠীদের অনুরোধে বেগম কাজী জেবুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা দেয় সে।