গতকালের ম্যাচে জয়ী কে তামিম না সাকিব
ফাইনালে মাত্র ৬১ বলে অপরাজিত ১৪১ রানের বিষ্ফোরক এক ইনিংস খেলে কুমিল্লার জয়ের নায়ক তামিম। এই ফাইনাল অব্দি কোনো দেশী খেলোয়াড় এবারের আসরে শতক হাঁকাতে পারেননি। একটা আফসোস নিয়েই তাই অপেক্ষায় ছিল দর্শকরা। তাদের সেই আফসোস কি দুর্দান্তভাবেই না পূরণ করলেন তামিম! ১০টি চারের সাথে ১১টি ছক্কায় সাজানো তার ইনিংসটি এদেশের ক্রিকেট পাগল দর্শকদের মনে জায়গা করেছে পাকাপাকিভাবে, সেকথা বলে দেয়াই যায়।
এই ফাইনালের মোড়কে লুকিয়ে ছিল আরেকটি লড়াই, দুই প্রিয় বন্ধুর মুখোমুখি লড়াই। সেই লড়াইয়ে যেন পাত্তাই পেলেন না সাকিব-আল-হাসান। মহাকাব্যিক এই ইনিংস খেলার পথে তামিম ১১টি বল খেলেছেন সাকিবের। তাতেই সমান ৩টি করে চার আর ছক্কা মেরেছেন তামিম। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে বোলিংয়ে এসে তামিমকে মাত্র ১টি বল করার সুযোগ পান সাকিব। সেই বলে একটি সিঙ্গেল নেন তামিম। নিজের ২য় ওভারে বল করতে এসে তামিমের রুদ্রমূর্তির শিকার হন সাকিব। সেই ওভারে দুই সিঙ্গেলের সঙ্গে ওভারের পঞ্চম ও ষষ্ঠ বলে তামিম মারেন দুটি চারের মার। যেন বুঝিয়ে দিতে চাইলেন, পেশাদারিত্বের কাছে বন্ধুত্বের স্থান নেই।
ইনিংসের ১২তম ওভারে নিজের তৃতীয় ওভার করতে আসেন সাকিব। সেই ওভারে তিনটি সিঙ্গেলের সাথে তামিম মারেন একটি ছক্কা। মোট ৯ রান তুলে নেন তামিম সাকিবের সেই ওভার থেকে। এরপর ইনিংসের ১৬তম ওভারে সাকিব তার বোলিং কোটার শেষ ওভারটি করতে এলে তামিম তুলে নেন ১৬ রান। তৃতীয় ও পঞ্চম বলে মারেন দুইটি ছক্কা, শেষ বলে আরেকটি চার। সাকিবের মুখোমুখি মোট ১১ বল খেলে তামিম তুলে ফেলেন মোট ৩৬ রান। সেই সাথে দুই বন্ধুর মুখোমুখি লড়াইয়ে নিজের বিজয় ঘোষণা করেন তামিম।
এবারই প্রথম ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিলেন দুই বন্ধু। সাকিব এর আগে দুটি ফাইনাল জিতলেও এবারই প্রথম বিপিএলের ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা হলো তামিমের। সেই ফাইনালের লড়াইয়ের ভেতরে মুখোমুখি লড়াইয়ে তামিম নিশ্চিতভাবেই হয়েছেন বিজয়ী। কিন্তু এই মুখোমুখি লড়াইয়ের চেয়ে দলীয় লড়াইয়ে বিজয়ী হয়ে শিরোপা জেতাতেই যেন পূর্ণতা পেয়েছেন তামিম, সেকথা বলাই যায়।