বৃষ্টিতে আর বন্ধ হবে না খেলা ছাদযুক্ত মাঠে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

যেসব ক্রীড়া ইভেন্ট বৃষ্টির মধ্যে চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়, তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় সম্ভবত ক্রিকেটই। শুধু বৃষ্টি ঝরার সময়েই নয়, বৃষ্টির পরও খেলা নিয়ে অনেক সময় থেকে যায় সংশয়। কারণ ভেজা আউটফিল্ড কিংবা সিক্ত উইকেট খেলায় রাখতে পারে বড় প্রভাব। বৃষ্টির সময় পিচ ঢেকে দেওয়া হয় বলে উইকেট ভেজার সুযোগ কম। তবে কভার থাকা সত্ত্বেও উইকেট ভিজে ম্যাচ বাধাগ্রস্ত হয়েছে, এমন নজিরও আছে।
অ্যাজেস বোলের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বৃষ্টি। দুই দলেরই আছে শিরোপা জয়ের সুযোগ, তবে এককভাবে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের লক্ষ্যে ভারত ও নিউজিল্যান্ড উভয়ই মরিয়া জয়ের জন্য। এই ম্যাচের প্রথম দিন বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগছে— ক্রিকেটের জন্য কি ছাদযুক্ত মাঠ ব্যবহারের সুযোগ নেই? অনেকের কাছে ব্যাপারটি অজানা থাকলেও অবাক করা তথ্য এই— ১২টি আন্তর্জাতিক ম্যাচের নজির আছে যেগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছিল ছাদযুক্ত স্টেডিয়ামে! অবশ্য এই ১২টি ম্যাচের সবগুলোই ওয়ানডে।
একইসাথে বলা বাহুল্য, ১২ ম্যাচের সবক’টি অনুষ্ঠিত হয়েছিল একই ভেন্যুতে— অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের ডকল্যান্ডস স্টেডিয়ামে। ভেন্যুটি একইসাথে মারভেল স্টেডিয়াম এবং দ্যা ডোম হিসেবেও পরিচিত। ২০১৭ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১২ বছর ইতিহাদ স্টেডিয়াম নামে ছিল খ্যাতি। প্রতিষ্ঠার পর দুই বছর কলোনিয়াল স্টেডিয়াম এবং পরবর্তী প্রায় ৮ বছর টেলস্ট্রা ডোম হিসেবে পরিচিত ছিল।
নামের ইতিহাস টেনে আনার কারণ, এই ভেন্যুতে প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০০০ সালের ১৬ আগস্ট, সম্পূর্ণভাবে ব্যবহার শুরু হওয়ার বছরেই। সেই ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা, মাইকেল বেভান হাঁকিয়েছিলেন ছাদের নিচে প্রথম আন্তর্জাতিক শতক। তিন ম্যাচ সিরিজের পরের ম্যাচ একই ভেন্যুতে টাই হয়েছিল এবং তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে একই ভেন্যুতে জয় পেয়েছিল প্রোটিয়ারা।
ছাদযুক্ত মাঠে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ!
২০০২ সালে পাকিস্তানের অস্ট্রেলিয়া সফরে ৩ ম্যাচের সিরিজের প্রথম দুটি ম্যাচ এই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হয়। সেই সিরিজে শহীদ আফ্রিদির একটি ছট ছাদে আঘাত করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরে প্রায়শই। ২০০৪ সালে এই ভেন্যুতেই একটি ম্যাচে মুখোমুখি হয় অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। ২০০৫ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে যাওয়া বিশ্ব একাদশ স্বাগতিকদের বিপক্ষে জমজমাট তিনটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিল তৎকালীন টেলস্ট্রা ডোম স্টেডিয়ামে। ঐ ম্যাচে মাইক হাসির হাঁকানো একটি বড় শট আটকে যায় স্টেডিয়ামের ছাদে। আফ্রিদি ও হাসির হাঁকানো শট দুটির ভিডিও পাঠকদের জন্য থাকছে নিবন্ধের শেষ অংশে।
২০০৬ সালে শেষবারের মত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দেখা যায় ডকল্যান্ডস স্টেডিয়ামে। যার একটি ম্যাচে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার প্রতিপক্ষ ছিল শ্রীলঙ্কা এবং অপর দুটি ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা। ঐ বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি শেষবারের মত ছাদের নিচে অনুষ্ঠিত হয়েছিল কোনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ।
ছাদের নিচে ক্রিকেট ম্যাচের কথা বললেই অনেকে ভেবে বসেন ইনডোর স্টেডিয়ামের কথা। সেসব স্টেডিয়ামে ব্যাটসম্যানের হাঁকান শট সহজেই ছুঁতে পারে সীমানা। তবে ডকল্যান্ড স্টেডিয়ামে বাউন্ডারির সীমানা মোটেও ছোট নয়। বলে রাখা ভালো, ১২টি ম্যাচের সবগুলোতেই কিন্তু ছাদ ব্যবহার করা হয়নি। কেবল বৃষ্টি এলেই খুলে দেওয়া হতো ছাদ, যা নিজেকে মেলে ধরতে বা গুটিয়ে নিতে মোট ৮ মিনিট সময় নেয়।
প্রশ্ন জাগতে পারে— ব্যাটসম্যানের হাঁকান শটে বল ছাদ স্পর্শ করলে কী পরিণতি হয়? উত্তর হল— একসময় ছাদে বল ছোঁয়াতে পারলে ব্যাটসম্যান পেতেন ১২ রান! যার কারণে ইতিহাসের একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে ১ বলে ১২ রান নেওয়ার কীর্তি আছে আফ্রিদি। পরবর্তীতে বদলে যায় নিয়ম, ব্যাটসম্যানের শট ছাদে আটকালে ঐ বলকে গণ্য করা হত ডেড বল হিসেবে; যেমনটা ঘটেছিল হাসির ক্ষেত্রে।
ডকল্যান্ডস স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় বিগ ব্যাশের ম্যাচও। অ্যাশটন টার্নার, অ্যারন ফিঞ্চদের শটও আটকানোর নজির আছে এই ছাদে।
ডকল্যান্ড স্টেডিয়াম পৃথিবীর অত্যাধুনিক স্টেডিয়ামগুলোর একটি। ভেন্যুর গ্যালারিতে থাকা আসন প্রয়োজন অনুযায়ী একসাথে সরানো যায় সামনে-পেছনে। ক্রিকেট ম্যাচ একসাথে দেখতে পারেন ৪৮ হাজার দর্শক। রাগবি ও বিশেষত ফুটবল ম্যাচের ভেন্যু হিসেবেও ব্যবহৃত হয়, স্টেডিয়ামের কাঠামোগত কারণে সেক্ষেত্রে বেড়ে যায় ধারণক্ষমতা।
বলে রাখা ভালো, বৃষ্টির হাত থেকে খেলাকে বাঁচাতে নির্মিত এই স্টেডিয়াম দাঁড় করাতে খরচ করা হয়েছিল প্রায় দুই হাজার সাতশ কোটি টাকা। ম্যাচ চলাকালে ভেন্যুর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়, যে বালাই নেই ছাদবিহীন অন্য সব ক্রিকেট ভেন্যুতে। সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপ কিংবা সাউদাম্পটনে শুরু হওয়া টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালসহ বিভিন্ন সময়েই উঠেছে ছাদের নিচে ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজনের দাবি। সেই দাবি পূরণ হওয়া কঠিন মূলত এই ব্যবস্থায় বিশাল খরচাপাতির কারণেই।
তবে ক্রিকেটের ব্যাপক আধুনিকায়নের যুগে ছাদের সুবিধাযুক্ত স্টেডিয়ামে ম্যাচ দেখার ইচ্ছা মোটেও কোনো বাড়াবাড়ি নয়। তেমনি বাড়াবাড়ি নয় নিকট ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ম্যাচে ছাদযুক্ত স্টেডিয়াম ব্যবহারের প্রত্যাশা করাও— যেক্ষেত্রে বৃষ্টিতে খেলা পণ্ড হওয়ার হার নেমে আসবে শূন্যতে। তবে ডকল্যান্ড স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ সরে আসার ব্যাপারটি অবশ্যই পোড়াবে ক্রিকেটপ্রেমিদের!
- আলোচিত মেয়ে বাবা কান্ড, শিফার বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ
- জামায়াতে ইসলামী ইস্যুতে সরকারের অবস্থান জানালেন প্রেস সচিব
- কমলো সয়াবিন তেলের দাম, তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন
- বঙ্গবন্ধুর লালিত দল নিয়ে হুঁশিয়ারি, যুদ্ধ নিয়েও আশঙ্কা: কাদের সিদ্দিকী
- আজ থেকে দেশের বাজারে নতুন দামে বিক্রি হবে ১৮, ২১ ও ২২ ক্যারেট সোনা ও রুপা
- বেড়ে গেলো আজকের সৌদি রিয়াল রেট (১২ মে ২০২৫)
- হঠাৎ ধস নামলো স্বর্ণের দামে, কারণ জানলে চমকে উঠবেন
- আ:লীগের জন্য সবচেয়ে বড় দু:সংবাদ দিলো নির্বাচন কমিশন
- আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পর যে আতঙ্কে বিএনপি
- জামায়াতকে কাজে লাগানো শেষ, এখন পাকিস্তানপন্থী বলে চালিয়ে দাও
- পরপর ৬ উইকেট তুলে নিলো বাংলাদেশ,দেখেনিন সর্বশেষ স্কোর
- আলোচিত দুই বোন ও ১৫ বছরের ভাগ্নে,কে নিয়ে অবিশ্বাস্য তথ্য দিলো গোয়েন্দা পুলিশ
- আবারও কমল সোনার দাম, ভরিতে কমেছে ৩১৩৮ টাকা
- চলছে বাংলাদেশ ও দ:আফ্রিকার ম্যাচ,দেখেনিন সর্বশেষ স্কোর
- আফগানিস্তানে যে খেলা নিষিদ্ধ করল তালেবান