যে ৫ কৌশলে করোনা মোকাবেলায় সফল হলো ভুটান

কিছুটা দেরিতে হলেও করো'না থাবা বসিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ায়। প্রতিনিয়ত এই অঞ্চলে আ'ক্রান্ত ও মৃ'তের সংখ্যা বাড়ছে। উদ্বেগ, উৎকণ্ঠায় দিন পার করছে এই অঞ্চলের মানুষ।
এমন অবস্থায় দক্ষিণ এশিয়ার ছোট্ট দেশ ভুটান অনেকটাই নিশ্চিন্ত। সর্বপ্রথম সংক্রমণের দিন থেকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভুটানে করোনা রোগীর সংখ্যা মাত্র ৭ জন। অথচ, কাছাকাছি সময় আ'ক্রান্ত হওয়া দক্ষিণ এশিয়ার তিন দেশ— ভা'রত, পা'কিস্তান ও বাংলাদেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। ভুটানে করো'নার এই বিপরীতমুখী আচরণে বিস্মিত গবেষকরা। তারা খুঁজে বের করেছেন ভ'য়াবহ করো'না সংকট নিয়ন্ত্রণে ভুটানের এই বড় সাফল্যের সূত্রগুলো। মোটা দাগে তারা ৫টি চিহ্নিত প্রতিরোধ ব্যবস্থার ওপর জো'র দিয়েছেন।
পূর্ব প্রস্তুতি:
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভুটানই সর্বপ্রথম করো'না মোকাবিলার পূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে ভুটান পুরোদমে করো'নার বি'রুদ্ধে ল'ড়াইয়ের প্রস্তুতি শুরু করে। করো'না টেস্টিং কিট বা চিকিৎসকদের সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) সংগ্রহ করেছে। ফলে ভুটানে এসব উপকরণের সংকট নেই। স্থলবন্দর ও বিমানবন্দর দিয়ে আসা সকল যাত্রীকে স্ক্রিনিংয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। তাদের সকল ধরনের তথ্যও সংরক্ষণ করা হয়েছে। ফলে কে কোথায় যাচ্ছে বা সর্বশেষ অবস্থানও শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এর ফলে ভুটানে করো'না রোগী শনাক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পেরেছে।
দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ:
ভুটানে সর্বপ্রথম করো'না রোগী শনাক্ত হয় গত ৬ মা'র্চ। এরপর সঙ্গে সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দেয় তারা। ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় দেশটিতে। এই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেশি-বিদেশি উভ'য় পর্যট'কের ক্ষেত্রে বলবৎ ছিল, যা এখনো বিদ্যমান। অথচ পর্যটন ভুটানের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি। পর্যটন খাত বর্তমানে ভুটানের জিডিপির ৪ দশমিক ৯ শতাংশের জোগান দেয়। টাকার অঙ্কে যা ১২১ মিলিয়ন মা'র্কিন ডলার। জনগণের স্বার্থে পর্যটন খাতের এই বিশাল অঙ্কের অর্থের মায়া ছাড়তে পিছপা হয়নি ভুটান সরকার।
কোয়ারেন্টাইন:
ভুটানজুড়ে নাগরিকদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন চালু রয়েছে। কোয়ারেন্টাইনের মেয়াদ ১৪ থেকে বাড়িয়ে ২১ দিন করা হয়েছে। সরকার যেমন নাগরিকদের কোয়ারেন্টাইনে রাখতে বদ্ধপরিকর, তেমনি নাগরিকরাও সরকারের নিয়মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তারা এই বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনকে জীবনযাপনের এক ধরনের নতুন পদ্ধতি হিসেবে মেনে নিয়েছে। অভ্যস্ত হওয়ার চেষ্টা করছে জীবনযাপনের নতুন এই ধারায়।
ভুটান প্রবাসী নাগরিককে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে সবাইকে সরকারি খরচ ও ব্যবস্থাপনায় কোয়ারেন্টাইনে রেখেছে। নাগরিকদের পদম'র্যাদা ভেদে তিন তারকা থেকে পাঁচ তারকা হোটেলে কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভুটান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, বিদেশ ফেরত প্রতি নাগরিকদের কোয়ারেন্টাইনে সরকার দিনপ্রতি এক থেকে দেড় হাজার মা'র্কিন ডলার পর্যন্ত খরচ করছে।
গণস্বাস্থ্য কর্মসূচি:
ভুটানে কোনো বেসরকারি হাসপাতাল নেই। সবই সরকারি। ফলে ভুটানের সকল নাগরিকের চিকিৎসা সেবার ব্যয়ভা'র সরকার বহন করে। চিকিৎসা বাবদ ভুটানের নাগরিকদের কোনো অর্থ ব্যয় করতে হয় না। অর্থাৎ ভুটানের নাগরিকেরা সব রকমের চিকিৎসা পেয়ে থাকেন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। জটিল যেসব রোগের চিকিৎসা ভুটানে হয় না সরকারি খরচে নাগরিকেরা ভা'রত থেকে সেসব চিকিৎসা করাতে পারেন। চিকিৎসা সেবার এই ধারা অব্যাহত আছে করো'নার সময়েও। করো'নাভাই'রাস পরীক্ষা এবং চিকিৎসা চলছে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। সকল রোগীর জন্য পর্যাপ্ত হাসপাতাল বেড ও ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই ব্যবস্থা শুধু যে শহরকেন্দ্রীক তা নয়, জে'লা সদরগুলোতেও একইরকম ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং, পররাষ্ট্রমন্ত্রী টান্ডি দর্জি : বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী দেচেন ওয়াংমোর পাবলিক হেলথে ডক্টরেট। এই তিনজনের নেতৃত্বে ভুটানে চিকিৎসা ব্যবস্থায় অমূল পরিবর্তন ঘটেছে। করো'না সংকটের শুরু থেকেই তারা সর্বশক্তি দিয়ে সামনে থেকে ল'ড়ছে। তাদের পেছনে রয়েছে ভুটানের একঝাঁক নিবেদিত প্রা'ণ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী। প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং এতোটাই দায়িত্বপ্রবণ, তাকে বেশ কয়েকবার থিম্পুর রাস্তায় জীবাণুনাশক ছিটিয়ে দিতে এবং মাস্ক বিতরণ করতে দেখা গেছে।
প্রকৃতি:
করো'নাকে অনেকেই প্রকৃতির প্রতিশোধ বলছেন। কথাটা যে কথার কথা নয়, এটি প্রকৃতিপ্রে'মী বেশ কয়েকটি দেশে করো'নাভাই'রাসের বিপরীতমুখী আচরণে প্রমাণিত হয়েছে। ভুটান, ভিয়েতনাম-এর অন্যতম উদাহ'রণ। চীনের সীমান্তবর্তী হয়েও এই দুটি দেশে করো'না রোগীর সংখ্যা অবিশ্বা'স্য রকমের কম। ভুটান শুধু দক্ষিণ এশিয়ার নয়, বিশ্বের অন্যতম সুন্দর দেশ। জৈব কৃষি, পর্যাপ্ত বনাঞ্চল ও পাহাড় ঘেরা ছবির মতো সাজানো দেশ ভুটান। পৃথিবীর একমাত্র জিরো কার্বন নিঃস্বারিত হয় এখানে। তাছাড়া ভুটান ধুমপানমুক্ত সুখী দেশ। এসব নিয়ামকের কারণে ভুটানের নাগরিকেরা জন্ম থেকে রোগ প্রতিরোধী। ফলে গোটা বিশ্ব যখন করো'নার নীল ছোবলে বিষাক্ত, ভুটান তখন করো'নার বি'রুদ্ধে নীরবে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।
- এএসপি আত্মহত্যার আসল কারণ জানালেন তার ভাই
- নতুন আইনের ইঙ্গিত, শেয়ারবাজারে গতি ফেরাতে ১০ বড় সিদ্ধান্ত
- টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে এমন ব্যাটিং ইনিংস আগে দেখা যায়নি
- সৌদিতে ১৭ হাজার বাংলাদেশি গ্রেপ্তার : আসল তথ্য যা জানা গেল
- হঠাৎ ভিসা বন্ধের ঘোষণা, বিপাকে হাজারো আবেদনকারী
- আজকের সকল দেশের টাকার রেট (৮ মে ২০২৫)
- বাংলাদেশকে অনেক বড় সুখবর দিলো সৌদি আরব
- আজকের বাজারে ১৮, ২১ ও ২২ ক্যারেট সোনা ও রুপার মূল্য
- হত্যা মামলার আসামি হয়েও বিদেশ যাত্রা আলোচনায় সাবেক রাষ্ট্রপতি
- ভারতের ড্রোন হামলায় কাঁপছে স্টেডিয়াম, অনিশ্চিত পিএসএল ম্যাচ
- পাক-ভারত যুদ্ধ নিয়ে মালালার মানবিক বার্তা
- আ.লীগকে সুবিধা দেওয়ায় ইউনূস সরকারকে একহাত নিলেন হাসনাত
- ইংল্যান্ডে চলে গেলেন সাব্বির রহমান
- প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে দাঁড়াতেই দেননি বাংলাদেশ
- ৯৪ কোম্পানির শেয়ার ফ্রিজ