এএসপি আত্মহত্যার আসল কারণ জানালেন তার ভাই

নিজস্ব প্রতিবেদক:চট্টগ্রাম র্যাব কার্যালয়ে ঘটে যাওয়া এক মর্মান্তিক ঘটনায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পলাশ সাহা বুধবার সকালে আত্মহত্যা করেছেন। তার মরদেহ উদ্ধার করা হয় তার অফিস কক্ষ থেকে, যেখানে গুলির শব্দে ভেসে ওঠে এক শোকাবহ ঘটনা। পলাশ সাহার মৃত্যুর পর একটি চিরকুট পাওয়া গেছে, যা তার মৃত্যুতে জড়িত পারিবারিক কলহের এক করুণ চিত্র তুলে ধরে।
পলাশ সাহা, যিনি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার তারাশী গ্রামের ছেলে, তার জীবন ছিলো শান্তিপূর্ণ এক সময়ের সাক্ষী। তবে, তার জীবনে এক অজানা অশান্তির মেঘ ভর করেছিলো গত দুই বছরে। ফরিদপুরের চৌধুরীপাড়ায় বিয়ে করার পর থেকেই পলাশের পরিবারে অশান্তির ঝড় বইতে শুরু করে। তার স্ত্রীর সঙ্গে পারিবারিক বিবাদ যেন প্রতিদিনের রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। পলাশের মা, আরতি সাহা, তার ছেলের সাথে চট্টগ্রামে থাকতেন, তবে পলাশের স্ত্রী সুস্মিতা সাহা সবসময়ই চেয়েছিলেন, তার শাশুড়িকে গ্রামে পাঠিয়ে দিতে। মায়ের প্রতি পলাশের অগাধ ভালোবাসা এবং স্ত্রীকে তার মায়ের প্রতি নির্দিষ্ট দূরত্বের পছন্দের মাঝে তৈরি হয় এক অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব।
নন্দলাল সাহা, পলাশের মেজো ভাই, জানান, বুধবার সকালে এক সামান্য ঘটনায় উত্তেজিত হয়ে পলাশের স্ত্রী আর তার মা মাঝে হাতাহাতি শুরু করেন। এই ঘটনায় পলাশ এতটাই মানসিকভাবে বিচলিত হয়ে পড়েন যে, তার আর কিছু সহ্য করার শক্তি ছিল না। তার মনে গভীর হতাশা এবং শোকে ভরা মনের গোপন বেদনা ছিল, যা তাকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে নিয়ে যায়।
চিরকুটে পলাশ সাহা লিখে যান: “আমার মৃত্যুর জন্য মা এবং বউ- কেউ দায়ী না। আমিই দায়ী। কাউকে ভালো রাখতে পারলাম না। বউ যেন সব স্বর্ণ নিয়ে যায় এবং ভালো থাকে। মায়ের দায়িত্ব দুই ভাইয়ের ওপর। তারা যেন মাকে ভালো রাখে। স্বর্ণ বাদে যা আছে তা মায়ের জন্য। দিদি যেন কোঅর্ডিনেট করে।” এই অশান্তির শেষ চিহ্ন যেন সেই চিরকুটে ফুটে উঠল, যা তার অন্তরের এক গভীর যন্ত্রণার প্রকাশ।
চান্দগাঁও থানার ওসি আফতাব উদ্দিন জানিয়েছেন, "এএসপি পলাশ সাহার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং ধারণা করা হচ্ছে, এটি আত্মহত্যার ঘটনা।" পুলিশ জানিয়েছে, পলাশ সাহা তার নিজের ব্যবহৃত পিস্তল দিয়ে মাথায় গুলি করেন। র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী জানালেন, "ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে, তবে পারিবারিক কলহের বিষয়টি স্পষ্ট হচ্ছে।"
এটি শুধু একটি আত্মহত্যার ঘটনা নয়, এটি যেন একটি পরিবারের ভাঙনের আর্তনাদ। একজন মানুষ, যিনি শৃঙ্খলা রক্ষায় জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, শেষ পর্যন্ত তার নিজের পরিবারে এমন এক অশান্তির শিকার হলেন যে, তাকে মৃত্যুর পথে পা বাড়াতে হয়েছিল। র্যাব কার্যালয়ে চলছে শোক, তার সহকর্মীরা কাঁদছেন, আর পলাশ সাহার পরিবার তার অকাল প্রয়াণের শোক ভারে একাকার।
এ ঘটনার পর তদন্ত চলছে, এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর আরও বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে। কিন্তু এই শোকাবহ ঘটনাটি শুধুমাত্র এক ব্যক্তির মৃত্যু নয়, এটি একজন পরিবারের চিরকালীন বেদনা এবং অশান্তির কাহিনী হয়ে থাকবে।
FAQ:
পলাশ সাহা কিভাবে আত্মহত্যা করেন?
পলাশ সাহা তার নিজের ব্যবহৃত পিস্তল দিয়ে আত্মহত্যা করেন, তার মরদেহ চট্টগ্রাম র্যাব অফিসের কক্ষে উদ্ধার করা হয়।
পলাশ সাহার আত্মহত্যার কারণ কী ছিল?
পারিবারিক কলহ এবং তার স্ত্রীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া একটি ঝগড়ার কারণে পলাশ সাহা আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পলাশ সাহার চিরকুটে কী লেখা ছিল?
চিরকুটে পলাশ সাহা লিখেছিলেন, “আমার মৃত্যুর জন্য মা এবং বউ- কেউ দায়ী না, আমি দায়ী।”
- ভারত-পাকিস্তানকে সতর্ক করে যে ঘোষণা দিলো আফগানিস্তানের তালেবান
- এএসপি আত্মহত্যার আসল কারণ জানালেন তার ভাই
- ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান স্পষ্ট করল সরকার
- 'অপারেশন সিন্দুর'-এর পর বন্ধ হয়ে যাবে আইপিএল
- নতুন আইনের ইঙ্গিত, শেয়ারবাজারে গতি ফেরাতে ১০ বড় সিদ্ধান্ত
- হাসিনার নতুন কৌশলে ফের বিপাকে নেতাকর্মীরা
- টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে এমন ব্যাটিং ইনিংস আগে দেখা যায়নি
- স্বর্ণের দাম আজ হঠাৎ কত হলো জানেন
- সৌদিতে ১৭ হাজার বাংলাদেশি গ্রেপ্তার : আসল তথ্য যা জানা গেল
- ভারতে ফ্লাইট বাতিল ও বিমানবন্দর বন্ধ ঘোষণা
- আজ ১৮, ২১ ও ২২ ক্যারেট সোনা ও রুপার মূল্য তালিকা
- বাংলাদেশকে অনেক বড় সুখবর দিলো সৌদি আরব
- হঠাৎ ভিসা বন্ধের ঘোষণা, বিপাকে হাজারো আবেদনকারী
- এইমাত্র পাওয়া : ভারতে একাধিক বিমানবন্দর বন্ধ
- আজকের সকল দেশের টাকার রেট (৮ মে ২০২৫)