নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বের সোনার বাজারে রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) প্রতি আউন্স সোনার দাম ৩,৫০৮.৫০ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। চলতি বছরই সোনার দাম ৩০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মার্কিন ডলারের দুর্বলতা, ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা এবং বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ সম্পদ হিসেবে সোনার প্রতি আকর্ষণ এই উর্ধ্বমুখী দামের প্রধান কারণ।

ক্যাপিটাল ডটকমের আর্থিক বাজার বিশ্লেষক কাইল রড্ডা বলেন, “দুর্বল অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং ফেডের সুদহার কমানোর প্রত্যাশা সোনাসহ মূল্যবান ধাতুর বাজারকে উজ্জীবিত করেছে। ফেডের স্বাধীনতা ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ ডলারভিত্তিক সম্পদে আস্থার সংকট সৃষ্টি করেছে, যা সোনার দাম বাড়াতে সাহায্য করছে।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফেড ও এর চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের সমালোচনা করেছেন। ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, সুদহার কমানোর ক্ষেত্রে ফেড যথেষ্ট উদ্যোগ নিচ্ছে না। এ ছাড়া, ফেডের ওয়াশিংটন সদর দপ্তরের ব্যয়বহুল সংস্কারকাজ নিয়েও তিনি সমালোচনা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট দাবি করেছেন, প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে ফেড গভর্নর বরখাস্তের অধিকার রয়েছে, তবে ফেড স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে।

সিএমই ফেডওয়াচ টুল অনুযায়ী, ১৭ সেপ্টেম্বর ফেড এক চতুর্থাংশ শতাংশ পয়েন্ট সুদহার কমানোর সম্ভাবনা প্রায় ৯০ শতাংশ। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সুদের হার কম থাকলে সোনার মতো সুদবিহীন সম্পদ বিনিয়োগকারীদের কাছে আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।

মার্কিন ডলারের দুর্বলতার কারণে সোনা তুলনামূলকভাবে সস্তা হয়ে বিদেশি ক্রেতাদের জন্য আরও আকর্ষণীয় হয়েছে। ২০২৪ সালে সোনার দাম ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। চলতি বছরের মার্চে ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতি নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ সম্পদের দিকে ঝুঁকে পড়েন এবং তখনই প্রথমবার প্রতি আউন্সে ৩,০০০ ডলার অতিক্রম করে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আগামী মাসে ফেডের সুদহার কমানো হলে সোনার দাম আরও বেড়ে যেতে পারে।