| ঢাকা, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভিসা নিয়ে চরম দু:সংবাদ

বিশ্ব ডেস্ক . স্পোর্টস আওয়ার ২৪
২০২৫ জুন ১৪ ২৩:৪৬:৪৬
ভিসা নিয়ে চরম দু:সংবাদ

পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো গত কয়েক বছরে বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় গন্তব্য। অনেকেই ভিয়েতনাম ভ্রমণের পাশাপাশি প্রতিবেশী কম্বোডিয়া ও লাওস ঘুরে আসেন। ভ্রমণে গিয়ে কেউ সেখানে থেকে যান, কেউ আবার অবৈধভাবে অন্য দেশে পাড়ি জমান। এসব কারণে বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য ভিসাপ্রাপ্তি কঠিন করে তুলেছে দেশগুলো। আগে যেখানে ই-ভিসা কিংবা অন-অ্যারাইভাল সুবিধায় সহজেই ভ্রমণ করা যেত, এখন সেখানে ভিসা পেতে সময় লাগছে এক থেকে দুই মাস। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যাতও হচ্ছে।

পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর পাশাপাশি ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশও বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য ভিসা দেওয়া বন্ধ বা সীমিত করেছে। ফলে বাংলাদেশি নাগরিকদের বিদেশে অবকাশযাপন কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে, যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে দেশীয় ট্যুর অপারেটর, ট্রাভেল এজেন্সি, এমনকি এয়ারলাইনসগুলোর ওপর।

ট্যুর অপারেটররা বলছেন, বিগত বছরগুলোয় ঈদের ছুটিতে বাংলাদেশি উচ্চবিত্তের প্রধান গন্তব্য ছিল থাইল্যান্ড, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর। এ ছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), শ্রীলঙ্কা ও ভিয়েতনামসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশেও অবকাশযাপনে যেতেন অনেক বাংলাদেশি। আর মধ্যবিত্তের একাংশের গন্তব্য ছিল প্রতিবেশী ভারত, ভুটান ও নেপালে; কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন।

২০২৩ সালের জুলাই থেকে প্রতিবেশী দেশ ভারত বাংলাদেশিদের জন্য ট্যুরিস্ট ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দেয়। এতে বিকল্প গন্তব্য হিসেবে থাইল্যান্ড জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তবে এখন সেখানে ভ্রমণের জন্য কমপক্ষে ৪৫ দিন আগে ভিসার আবেদন করতে হচ্ছে, যা সাধারণ পর্যটকদের জন্য বড় ভোগান্তি। থাইল্যান্ডের পাতায়া, ফুকেট কিংবা ব্যাংকক ছুটি কাটানোর জনপ্রিয় গন্তব্য হলেও এখন সেখানকার ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যানের হার অনেক বেশি। আবার যাঁরা ভিসা পাচ্ছেন তাঁদের সময় লাগছে দেড় থেকে দুই মাস। একই অবস্থা অন্যান্য দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশেও।

একসময় বাংলাদেশিদের জন্য ভিসামুক্ত গন্তব্য হিসেবে জনপ্রিয় ছিল ভিয়েতনাম। কিন্তু পর্যটক হিসেবে সেখানে গিয়েও অনেক বাংলাদেশি দেশে ফেরেননি। কেউ সেখান থেকে অবৈধভাবে অন্য দেশে চলে যান। এসব কারণে দেশটি এখন বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা ইস্যু বন্ধ করে দিয়েছে। এর আগে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে অন-অ্যারাইভাল ভিসাসুবিধা বাতিল করেছে ভিয়েতনাম।

একইভাবে ইন্দোনেশিয়ায়ও অন-অ্যারাইভাল ক্যাটাগরিতে আগে সহজে ভিসা মিললেও এখন সেখানে ভিসা পেতে সময় লাগছে দুই মাসের বেশি। ফিলিপাইনে আগে ১০ দিনের মধ্যে ভিসা পাওয়া গেলেও এখন সময় লাগছে দেড় মাস।

সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়াও এখন বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা জটিলতা বাড়িয়েছে। এসব দেশেও ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যানের হার বেড়েছে। এমনকি যাঁরা একাধিকবার দেশগুলো ভ্রমণ করেছেন, তাঁদের আবেদনও অনেক সময় বাতিল করা হচ্ছে। নতুন অনেক শর্তও আরোপ করা হচ্ছে।

দেশের পর্যটন খাতের অন্যতম সংগঠন ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) পরিচালক এবং বিজকন হলিডেজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তাসলিম আমিন শোভন বলেন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া বাংলাদেশিদের ভিসা রিফিউজ করছে। অন-অ্যারাইভাল ভিসায় নেপাল যেতেও বাংলাদেশিরা বিমানবন্দরে নানা প্রশ্নের মুখে পড়ছেন। একসময় ভিয়েতনাম অনলাইনে ই-ভিসা দিত; কিন্তু এখন তা বন্ধ করে দিয়েছে। একই পথে হেঁটেছে কম্বোডিয়া ও লাওসও।

মো. তাসলিম আমিন জানান, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, লাওস এবং মধ্য এশিয়ার উজবেকিস্তান ও কাজাখস্তানের মতো দেশগুলো বাংলাদেশি পর্যটকদের অতিরিক্ত সময় অবস্থানের অভিযোগ তুলে ভিসা প্রদান বন্ধ করে দিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, শুধু ভিয়েতনামেই গত দুই বছরে ৩০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি পর্যটক নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি অবস্থান করেছেন। তিনি বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সহজভাবে পাওয়া ভিসা সংগ্রহ করে তা ৮ থেকে ১০ হাজার টাকায় নিয়ে পরে ১ থেকে ২ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন। এতে করে ওই সব দেশের ভিসাব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে এবং প্রকৃত পর্যটকেরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ ধরনের অপব্যবহার ও জালিয়াতি ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো এখন ভিসাপ্রক্রিয়ায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করছে, যা পুরো পর্যটনশিল্পের জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। যার প্রভাবে এবারের ঈদে দীর্ঘ ছুটি থাকলেও বাংলাদেশিদের বিদেশে অবকাশযাপনের আগ্রহ কম ছিল।

একসময় বাংলাদেশিদের অন্যতম আকর্ষণীয় গন্তব্য ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত, বিশেষ করে দুবাই। মরুভূমির সাফারি, বুর্জ খলিফার সৌন্দর্য, বিলাসবহুল হোটেলে বিজনেস মিটিং—সব মিলিয়ে শহরটি ভ্রমণকারীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু ২০২৩ সালের জুলাই থেকে দেশটি বাংলাদেশিদের জন্য ট্যুরিস্ট ভিসা বন্ধ করে দেয়। বর্তমানে দিনে গড়ে ৩০ থেকে ৫০টি ভিসা ইস্যু হলেও তা সাধারণ পর্যটকদের নাগালের বাইরে।

এদিকে দেশের বিত্তবান শ্রেণির বড় অংশ অবকাশের জন্য ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গেলেও বর্তমান পরিস্থিতি ভিন্ন। শেনজেনভুক্ত দেশগুলো গণহারে বাংলাদেশিদের ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান করছে। ২০২৪ সালেই শেনজেনভুক্ত দেশগুলো বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রায় ২১ হাজার ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে।

শেনজেন নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে গত বছর মোট ৩৯ হাজার ৩৪৫টি শেনজেন ভিসার আবেদন করা হয়েছিল। এর মধ্যে ২০ হাজার ৯৫৭টি আবেদনই প্রত্যাখ্যান করা হয়, যা মোট আবেদনের ৫৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। ২০২৩ সালে প্রত্যাখ্যানের হার ছিল ৪২ দশমিক ৮ শতাংশ।

মধ্য ও নিম্নমধ্যবিত্ত বাংলাদেশিদের জন্য সবচেয়ে সহজ গন্তব্য ছিল ভারত। ভারত ভ্রমণের পাশাপাশি তাঁরা নেপাল ও ভুটানেও যেতেন, যেখানে অন-অ্যারাইভাল ভিসা পাওয়া যেত। কিন্তু ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে ভারত জরুরি চিকিৎসা ছাড়া অন্য কোনো ভিসা দিচ্ছে না। ফলে বাংলাদেশিদের নেপাল ও ভুটান সফরও সীমিত হয়ে পড়েছে।

ভিসা জটিলতা বাড়ানোর তালিকায় এশিয়ার ছোট দেশগুলোও রয়েছে। এর পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশিদের পাসপোর্টের গ্রহণযোগ্যতা ক্রমেই কমছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স প্রকাশিত সূচকে বাংলাদেশের পাসপোর্টের অবস্থান এখন ৯৫তম, যা উত্তর কোরিয়া ও লিবিয়ার মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের সমান।

নোমাড ক্যাপিটালিস্ট প্রকাশিত ভিন্ন আরেকটি সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮১তম। প্রতিষ্ঠানটির মতে, ভিসামুক্ত ভ্রমণ, কর ব্যবস্থা, বৈশ্বিক গ্রহণযোগ্যতা, দ্বৈত নাগরিকত্বের সুযোগ এবং ব্যক্তিস্বাধীনতার মানদণ্ডে বাংলাদেশের স্কোর মাত্র ৩৮।

কুয়েত এয়ারওয়েজ, মালদিভিয়ান, থাই এয়ার এশিয়া ও এয়ার এশিয়ার জিএসএ টাস গ্রুপের পরিচালক কাজী শাহ মুজাক্কের আহাম্মেদুল হক জানান, বর্তমানে বিভিন্ন গন্তব্যে চলা ফ্লাইটগুলোর অধিকাংশ যাত্রী প্রবাসী। পর্যটকের সংখ্যা তুলনামূলক কম। ভিসাপ্রাপ্তি কঠিন হওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃস্টি হয়েছে। যার ধারাবাহিকতায় থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার এয়ারলাইনসগুলো ফ্লাইট কমিয়ে দিয়েছে।

পর্যটন ও অভিবাসন বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে পর্যটক হিসেবে গিয়ে অনেক বাংলাদেশি থেকে গেছেন, যা দেশগুলোর জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। অনেকেই ট্যুরিস্ট ভিসায় গিয়ে অবৈধভাবে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন বা অন্য দেশে পালিয়ে যাচ্ছেন।

পর্যটন বিশেষজ্ঞ ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য কাজী ওয়াহেদুল আলম বলেন, পর্যটক ভিসায় বিদেশে গিয়ে ওভারস্টে, ক্ষেত্রবিশেষে থেকে যাওয়ার প্রবণতার কারণেই বাংলাদেশিদের ভিসা জটিলতা বাড়ছে এবং দেশের পাসপোর্টের গ্রহণযোগ্যতা কমছে। তিনি বলেন, প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক মানুষ শ্রমবাজারে আসছেন, যাঁদের মধ্যে কিছু মানুষ বিদেশে যাবেন। তবে তাঁরা যেন শিক্ষিত, দক্ষ এবং বৈধ পথে যান, তা নিশ্চিত করতে হবে। ভুয়া তথ্য বা ভুয়া ভিসা ব্যবহার করে কেউ যেন বিদেশে না যেতে পারেন, সে নিশ্চয়তা দরকার।

ক্রিকেট

ক্রিকেটার শহীদ আফ্রিদি কি মারা গেছেন? ভাইরাল ভিডিও ঘিরে বিভ্রান্তি

ক্রিকেটার শহীদ আফ্রিদি কি মারা গেছেন? ভাইরাল ভিডিও ঘিরে বিভ্রান্তি

সামাজিক মাধ্যমে সম্প্রতি একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দাবি করা হয়েছে যে পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটার ...

অনেক বড় সুখবর পেলেন নাজমুল হাসান শান্ত

অনেক বড় সুখবর পেলেন নাজমুল হাসান শান্ত

তিন ফরম্যাটে টাইগারদের দায়িত্ব পান নাজমুল হোসেন শান্ত। শুরুতে এক বছরের জন্য নেতৃত্বভার দেওয়া হয়। ...

ফুটবল

২৪ ঘণ্টার মধ্যে বহিষ্কার! হামজা চৌধুরীর মুখে চাঞ্চল্যকর তথ্য

২৪ ঘণ্টার মধ্যে বহিষ্কার! হামজা চৌধুরীর মুখে চাঞ্চল্যকর তথ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে বাংলাদেশ ফুটবল দলের ভরাডুবির পর পরিস্থিতি চরমে! জাতীয় দলের প্রধান কোচ ...

২০২৬ বিশ্বকাপ : পয়েন্ট টেবিলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়েআর্জেন্টিনা, ব্রাজিল-ইকুয়েডরের

২০২৬ বিশ্বকাপ : পয়েন্ট টেবিলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়েআর্জেন্টিনা, ব্রাজিল-ইকুয়েডরের

নিজস্ব প্রতিবেদক:দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব এখন উত্তেজনার চরম পর্যায়ে। প্রতিটি ম্যাচেই পয়েন্ট ...



রে