ইলিশ নিয়ে দারুন সুখবর

শেষ হচ্ছে ইলিশ ধরায় দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা। এ সময়টা অনেক কষ্টে পার করতে হয়েছে ভোলার জেলেদের। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার আগ মুহূর্তে মহাব্যস্ত হয়ে উঠেছেন তাঁরা। দিন–রাত এক করে জাল, নৌকা মেরামতের কাজে নেমেছেন। ইলিশ ধরে ঋণের টাকা শোধ করবেন, এ আশায় বুক বেঁধে আছেন জেলেরা। গত শুক্র ও শনি এবং আজ রোববার সরেজমিন জেলেদের সঙ্গে কথা এসব তথ্য জানা যায়।
জাটকা সংরক্ষণের লক্ষ্যে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস ভোলার ১৯০ কিলোমিটার নদীর জলসীমায় অভয়াশ্রম ঘোষণা করে সরকার। এ সময় অনেকটা বেকার জীবন কাটান ১ লাখ ৭০ হাজার ২৪৩ জন নিবন্ধিতসহ ভোলার প্রায় ৩ লাখ জেলে। নিষেধাজ্ঞার সময় সরকার হতদরিদ্র ৮৯ হাজার ৬০০ জেলের জন্য চার মাসের (ফেব্রুয়ারি-মার্চ) ১৬০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয়। কিন্তু এই চাল বেশির ভাগ জেলে পাননি বলে অভিযোগ আছে।
সরেজমিন দেখা যায়, জেলেরা জাল ও নৌকা সংস্কার করছেন। গত দুই মাস অযত্নে-অবহেলায় পড়ে থাকা নৌকার জরা দূর করছেন। পুরোনো নৌকা সংস্কার ও নতুন নৌকা তৈরি করে তাতে আলকাতরা মাখাচ্ছেন। নতুন আলকাতরা নৌকায় মাখানোর সময় এক ঝাঁজালো গন্ধ জেলে পাড়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক জেলে পুরোনো জাল তুনছেন (সংস্কার)। জালের পুরোনো ছেঁড়া অংশ ফেলে নতুন সুতায় শক্তপোক্ত করে তুলছেন জাল। জালের কিনারে মোটা সুতা, পোড়ামাটির কাঠি ও চাড়া জুড়ে দিচ্ছেন।
জেলেরা জানান, ১ মে থেকে জেলেদের নাম আড়তদারের নতুন খাতায় উঠবে। ওই দিন ইলিশের ভরা মৌসুমের শুরু। অনেকে ওই দিন নতুন নৌকা, জাল নিয়ে নদীতে নামবেন, যাকে জেলেরা বলেন জাল সাভার। জাল সাভারে জেলেরা লাগাচ্ছেন নানা রকম রঙিন বাতি, সোলার। আড়তদারেরা জেলেদের রঙিন পতাকা দেবেন। এসব পতাকায় নিজ নিজ মার্কাজুড়ে দেবেন আড়তদারেরা। ছবিঘরে আর্ট হচ্ছে সেসব মার্কা।
গত শুক্রবার বিকেলে ভোলার দক্ষিণের উপজেলা চরফ্যাশনের সবচেয়ে বড় মাছঘাট সামরাজ এলাকায় দেখা যায়, চারজন জেলে জাল মেরামত করছেন। অন্যদিকে তাঁদের নৌকায় আলকাতরা মাখানো হচ্ছে। যাঁরা জাল মেরামত করছেন তাঁরা জানান, ১ মের আগে তাঁদের সবকিছু ঠিক করতে হবে। চার জেলের মধ্যে বয়স্ক জেলেনৌকার প্রধান আবদুল মান্নান মাঝির (৫৫) শুধু জেলেকার্ড আছে। কিন্তু বাকি হারুনুর রশিদ (৩৫), আনোয়ার হোসেন (৩৩) ও মো. রায়হানের (২২) কোনো নেই। তাঁরা জানান, ছোটবেলা থেকেই তাঁরা সাগর মোহনা ও নদীতে মাছ ধরা পেশার সঙ্গে জড়িত থাকলেও তদবিরের অভাবে তাঁদের নাম নিবন্ধিত হয়নি। তাই জেলেকার্ড পাননি।
সামরাজ ঘাটে ২০–২৫ জন জেলে কাজ করছিলেন। বেকার সময়ে কীভাবে সংসার চলেছে, সরকারি বরাদ্দের চাল পেয়েছেন কি না—জানতে চাওয়া মাত্রই পাল্টা প্রশ্নবাণ ছোড়েন জেলেরা। রোষানলে পড়েন এই প্রতিবেদক। গালাগাল দিতেও ছাড়েননি কেউ কেউ। একজন বলেন, ‘আম্নেগোরে সাক্ষাৎকার দিলে কী লাভ, লেইকখা নেন, আমরা জীবনে চাউল পাই না।’ জেলেদের চাল স্থানীয় ক্ষমতাসীনদের ঘরে যায় উল্লেখ করে আরেকজন বলেন, ‘অরা বস্তায় বস্তায় জাইল্যাগো চাউল নিয়া, মাছের গেরে হালায়। আস (হাঁস)–মুরকারে খাওয়ায়। আমরা থাহি না খাইয়া। হুদাহুদি লেইকখেন না।’
ভোলা জেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ফেব্রুয়ারি-মে—এই চার মাসের চাল দেওয়ার কথা থাকলেও এপ্রিল-মে—এ দুই মাসের চাল এখনো ছাড় দেওয়া হয়নি। ফেব্রুয়ারি-মার্চ—এ দুই মাসের চাল বরাদ্দ হয়েছে মার্চের প্রথম দিকে।
আগের বরাদ্দের চাল নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ভোলার সাত উপজেলা ও ইউনিয়নের প্রভাবশালী নেতাদের বিরুদ্ধে। তাঁরা নিজস্ব কর্মীদের মধ্যে চাল ভাগ করে দেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব দৃশ্য ছড়িয়ে পড়লে প্রভাবশালীরা নানা রকম ট্রলের শিকার হন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ভোলা মৎস্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, ‘জেলেদের প্রথম কিস্তির চাল বিতরণে অনিয়ম ও অন্য পেশার লোকেদের চাল লুটে নেওয়ার কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দ্বিতীয় কিস্তির চাল কবে কখন ছাড় হবে, সে বিষয়ে কোনো চিঠি হাতে পাইনি।’
কথা হয় হারুন, আনোয়ার, রায়হান নামে কয়েকজন জেলের সঙ্গে। তাঁরা জানান, সংসার চালানোর জন্য তাঁরা দুই থেকে তিনটি সমিতি থেকে ঋণ নিয়েছেন। হারুন জানান, টানা বেকার থাকার সময় এক সমিতির কিস্তি শোধ করতে আরেক সমিতি থেকে ঋণ নিতে হয়েছে। সন্তানের মুখে একমুঠ ভাত তুলে দেওয়ার জন্য দেখতে দেখতে একাধিক সমিতির ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়েছেন। এখন ভরা মৌসুমে মাছ পেলে ভাগের টাকায় ঋণ শোধ করবেন বলে আশা করছেন। নইলে ঋণের বোঝা আরও বাড়বে।
ভোলার সদর উপজেলার চডারমাথা, কাঠিরমাথা, তুলাতুলি, ভোলা খালের মাথা, দৌলতখানের চৌকিঘাট, মাঝিরহাট, লালমোহনের বাত্তির খাল মাছঘাটের একাধিক জেলের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত দুই মাস বেকার থাকার পর তাঁরা মহাজনের নৌকা পয়লা মে নদীতে নামানোর জন্য দিন–রাত কাজ করছেন। আশা করছেন ভালো মাছ পেলে ঋণ শোধ করতে পারবেন।
জেলেদের দুর্দশার কথা জানালেন ভোলার চডারমাথা মাছঘাটের মৎস্য আড়তদার শাহাবউদ্দিন ফরাজি। তিনি বলেন, সরকার এত সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ সঠিকভাবে তাঁদের হাতে পৌঁছানোর জন্য কোনো কমিশন গঠন করা যায়নি। যদি করে তো ভালো, না করলে করা উচিত।
- এবার বিদেশ থেকে বাংলাদেশে ফেরার সময় সর্বোচ্চ যতটি স্মার্টফোন আনতে পারবেন প্রবাসীরা
- ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা : পাকিস্তানকে যে ঘোষণা দিলো চীন
- পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে তুমুল সংঘর্ষ , ৫৪ জনের মৃত্যু
- ভারতের জন্য নতুন দু:সংবাদ : বাংলাদেশে চালু হচ্ছে আরও ৭টি
- কয়েক মিনিটের কালবৈশাখীতে লন্ডভন্ড পুরো জেলা, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে
- বড় সুখবর দেশি পেঁয়াজের দাম নিয়ে
- পিএসএলে দুঃসংবাদ নেমে এলো রিশাদের জীবনে, একি বললেন শাহীন শাহ আফ্রিদি
- ভারতীয় বিমানবাহিনীর হাস্যকর কান্ড, নিজেরাই ধংস করলো নিজের এলাকা
- মেয়েদের ইচ্ছা সপ্তাহের কোন দিনে সবচেয়ে তীব্র হয়, জেনে নিন চমকপ্রদ তথ্য
- পাসপোর্ট ইস্যুতে আসছে বড় পরিবর্তন, মিলবে সুখবর
- ভারতের ঘুম হারাম করে ছাড়লো ড. ইউনূস
- চলন্ত প্রাইভেটকার থেকে নারীর ভ্যানিটিব্যাগে টান, অতঃপর যা ঘটলো
- ৩ দিন বৃষ্টি হতে পারে যে ৬ বিভাগে
- শোকের ছায়া : মাত্র ২৪ বছর বয়সেই চলে গেলেন জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর
- সন্ধ্যার মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড় ও বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস