ঢাকা শহরের কূটনৈতিক পাড়ায় এখন চুপচাপ এক ভূমিকম্প চলছে—আর তার কেন্দ্রবিন্দুতে এক ছায়াময় চরিত্র: রাজেশ কুমার অগ্নিহোত্রি। নামটি বহুদিন ধরে ঢাকার বিদেশি কূটনৈতিক মহলে ঘোরাফেরা করলেও, হঠাৎ করে তা উঠে এসেছে সরাসরি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। RAW-এর স্টেশন হেড হিসেবে এই ব্যক্তির তৎপরতা নিয়ে এখন চলছে টানটান উত্তেজনা।

বিষয়টি ফাঁস করেন দেশের বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক হাসনাত আব্দুল্লাহ, যিনি নিজের ফেসবুক পোস্টে দাবি করেন—"RAW-এর প্রেসক্রিপশন নিয়েই চলছে বাংলাদেশের রাজনীতি!" এবং তারপরই সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের তাঁর নিজস্ব ভেরিফায়েড পেজে এক বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ করেন।

ছদ্মবেশে কূটনীতিক, পেছনে গোয়েন্দার জাল!সায়েরের দাবি অনুযায়ী, রাজেশ অগ্নিহোত্রি একজন Commercial Counsellor ছদ্মবেশে ঢাকার ভারতীয় হাই কমিশনে কাজ করছেন, কিন্তু বাস্তবে তিনি RAW-এর স্টেশন হেড, যার কাজ মূলত তথ্য সংগ্রহ, রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার ও কৌশলী যোগাযোগ রক্ষা করা।

অভিযোগ আরও বিস্তৃত—এই একই ব্যক্তি অতীতে পাকিস্তানে ভারতীয় দূতাবাসে দায়িত্ব পালন করেছেন, এবং সেখানেও তাকে সরাসরি গোয়েন্দা তৎপরতা, নাশকতা ও অর্থনৈতিক অবকাঠামো ধ্বংসের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযুক্ত করে ইসলামাবাদ সরকার তাকে দেশে ফেরত পাঠায়।

একই ছদ্মবেশে ঢাকায় ফিরে কীভাবে?সবচেয়ে বড় প্রশ্ন: একজন আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা, যার অতীতে এমন বিতর্ক রয়েছে, তাকে আবার কীভাবে ঢাকায় ঢুকতে দেওয়া হলো? বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। সায়েরের সূত্র অনুযায়ী, কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বারবার সতর্ক করলেও মন্ত্রণালয় তাতে কর্ণপাত করেনি।

রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ‘গোপন বৈঠক’?সায়েরের তথ্যমতে, রাজেশ এখনো ঢাকায় সক্রিয় এবং নিয়মিত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করছেন, এমনকি নতুন সরকার গঠনের আলোচনাতেও জড়িত। এতে স্পষ্ট হয়ে উঠছে, ভারতের প্রভাব আগের মতোই জারি আছে, বরং তা এখন আরও গভীরভাবে শেকড় গাড়ছে।

বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে প্রশ্নবিশ্লেষকরা বলছেন, এটি শুধু একটি ব্যক্তি নয়, বরং একটি দীর্ঘস্থায়ী বিদেশি প্রভাব ও হস্তক্ষেপের বহিঃপ্রকাশ। গত ১৫ বছর ধরে যে রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা দিল্লি থেকে এসেছে, তারই এক চিত্র এই রাজেশ।