| ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২

আজ থেকে ১০ বছর আগেই ড.ইউনুসকে নিয়ে যে মন্তব্য করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী

বিশ্ব ডেস্ক . স্পোর্টস আওয়ার ২৪
২০২৫ ফেব্রুয়ারি ১৯ ১৬:০৪:৩১
আজ থেকে ১০ বছর আগেই ড.ইউনুসকে নিয়ে যে মন্তব্য করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী

বক্তার নাম নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদি। ঘটনাস্থল মুম্বাই, তারিখ ৩ জানুয়ারি, ২০১৫। আর যাকে উদ্দেশ করে কথাগুলো বলা, তিনি আর কেউ নন—‘গরিবের ব্যাংকার’ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

এর প্রায় এক দশক বাদে যিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন। কথাগুলো ছিল—‘আজ আমাদের সঙ্গে এমন একজন নোবেল বিজয়ী আছেন, সমাজবিজ্ঞান নিয়ে যার নিজস্ব ব্যাখ্যা ও রূপায়ণের সুবাদেই সমাজের দরিদ্রতমরা তাদের জীবনেও আশা, সুযোগ আর মর্যাদার সন্ধান পেয়েছেন।’

যে মঞ্চে দাঁড়িয়ে নরেন্দ্র মোদি এই কথাগুলো বলছিলেন, সেটা ছিল ভারতের ১০২তম বিজ্ঞান কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এই বিজ্ঞান কংগ্রেস হলো ভারতের সামগ্রিক বিজ্ঞানচর্চা তথা বিজ্ঞানীদের সবচেয়ে মর্যাদাব্যঞ্জক বার্ষিক সম্মেলন। চিরাচরিতভাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রীরাই এই সম্মেলন উদ্বোধন করে থাকেন, আর নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সেটাই ছিল দেশের প্রথম বিজ্ঞান কংগ্রেস।

মুম্বাইয়ের সেই সম্মেলনে মোট পাঁচ জন নোবেল বিজয়ীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল– যার মধ্যে চার জন বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় নোবেল পেয়েছিলেন, আর পঞ্চম জন ছিলেন শান্তিতে ২০০৬ সালের নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধানমন্ত্রী মোদির হাত থেকে সম্মাননা গ্রহণ করার পর ড. ইউনূস বিজ্ঞান কংগ্রেসের প্রায় ২০ হাজার প্রতিনিধির সামনে প্লেনারি সেশনে ভাষণও দিয়েছিলেন।

প্রথাগত অর্থে বিজ্ঞানী না হলেও মুহাম্মদ ইউনূসকে যে ভারতের বিজ্ঞান কংগ্রেসে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, তা কিন্তু ছিল প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আগ্রহেই। সে সময় নরেন্দ্র মোদির কার্যালয়ে যুক্ত ছিলেন এমন একজন সাবেক শীর্ষস্থানীয় আমলা জানাচ্ছেন, ‘নরেন্দ্র মোদি আসলে ছিলেন ড. ইউনূসের কাজের গুণগ্রাহী। তিনি মনে করেছিলেন, বিশ্বের একজন অগ্রগণ্য ‘সমাজবিজ্ঞানী’ হিসেবে ড. ইউনূস যদি মুম্বাইয়ে আসেন, তাহলে ভারতের বিজ্ঞান কংগ্রেসই উপকৃত হবে।’

ড. ইউনূস যখন নোবেল পুরস্কার পান (২০০৬), তখন নরেন্দ্র মোদি ছিলেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী। বস্তুত তখন থেকেই তিনি ড. ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংক তথা ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্পের কাজকর্ম খুব নিবিড়ভাবে ফলো করে আসছেন। গুজরাট রাজ্যেও সমবায় আন্দোলনের একটি খুব সমৃদ্ধ ইতিহাস আছে, সেখানে ড. ইউনূসের প্রবর্তিত মাইক্রোফিন্যান্স বা ক্ষুদ্রঋণ কীভাবে গরিব মানুষের কাজে আসতে পারে, তা নিয়েও মোদির রাজ্য সরকার ভাবনা-চিন্তা করেছিল।

২০১৪-তে দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরও ড. ইউনূসকে ঘিরে নরেন্দ্র মোদির ব্যক্তিগত আগ্রহ কিন্তু কমেনি। যার প্রমাণ শুধু মুম্বাইতেই নয়, তারপর ২০১৭ সালে অন্ধ্র প্রদেশের তিরুপতিতে অনুষ্ঠিত ভারতের ১০৪তম বিজ্ঞান কংগ্রেসেও মুহাম্মদ ইউনূসকে বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়।

যথারীতি সেই পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ঐকান্তিক আগ্রহেই। ২০১৫-তে মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ও তার ঠিক দু’বছর পর তিরুপতির শ্রী ভেঙ্কটেশ্বরা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান কংগ্রেসের দুটি অনুষ্ঠানেই নরেন্দ্র মোদি নিজের হাতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে স্বর্ণপদকে ভূষিত করেন, সম্মাননা জ্ঞাপন করে মানপত্র অর্পণ করেন।

মনে রাখতে হবে, মুম্বাই ও তিরুপতিতে যখন ড. ইউনূসকে বিশেষ অতিথি হিসেবে ভারত সরকার আমন্ত্রণ জানাচ্ছে, তখন কিন্তু বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে ড. ইউনূসের ব্যক্তিগত সম্পর্ক রীতিমতো তিক্ত হতে শুরু করেছে– তার বিরুদ্ধে মামলা পর্যন্ত হচ্ছে। অথচ ঢাকা ও দিল্লির সরকারের মধ্যে তখন অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও ভারত ড. ইউনূসকে গুণীজনের প্রাপ্য সম্মান জানাতে দ্বিধা করেনি। মুম্বাইয়ের বিজ্ঞান কংগ্রেসে সংবর্ধনা জ্ঞাপন ও স্বর্ণপদক প্রদানের পর ড. ইউনূস-সহ আমন্ত্রিত অন্য নোবেল বিজয়ীরা সেদিন বিকালেই প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে চা-চক্রেও মিলিত হয়েছিলেন।

‘ইউনূস সেন্টারের’ হোমপেজ জানাচ্ছে: ‘অধ্যাপক ইউনূস ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর মোদির সঙ্গে সেই চা-চক্রে উপস্থিত ছিলেন ২০০১ সালে মেডিসিনে নোবেলজয়ী লন্ডনের পল নার্স, ২০০২ সালে কেমিস্ট্রিতে নোবেলজয়ী সুইজারল্যান্ডের কার্ট উর্ট্রিচ, ২০০৯ সালে কেমিস্ট্রিতে নোবেলজয়ী ইসরায়েলের অ্যাডা ই য়োনাথ, ২০১৩-তে মেডিসিনে নোবেলজয়ী যুক্তরাষ্ট্রের র‍্যান্ডি শেকম্যান।’

‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জগতের সর্বাধুনিক অগ্রগতিগুলো কীভাবে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগানো যায় এবং সেরা প্রতিভাদের বিজ্ঞানের জগতে আসতে আকৃষ্ট করা যায়, তা নিয়ে তাদের মধ্যে খোলাখুলি মতবিনিময়ও হয়েছিল।’ এর দু’বছর পর তিরুপতির বিজ্ঞান কংগ্রেসেও একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি হয়, নিজেদের মধ্যে মতের আদান-প্রদান করেন নরেন্দ্র মোদি ও ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক আরো নিবিড় হয়।

ভারতের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা কেউ কেউ বলছেন, গত ৮ আগস্ট সন্ধ্যায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ঢাকায় অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নেওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই যে প্রধানমন্ত্রী মোদি তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে টুইট করেন– এর পেছনে একটা বড় কারণ হলো তিনি অধ্যাপক ইউনূসকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন, তার কাজকে সম্মান করেন। ‘নয়তো যে সরকারের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়েই ভারতের সংশয় আছে, তার প্রধানকে এত তাড়াতাড়ি প্রধানমন্ত্রী শুভেচ্ছা জানাতেন বলে আমার মনে হয় না। ড. ইউনূস ছিলেন বলেই এটা সম্ভব হয়েছে, অন্য কেউ হলে হয়তো এটা হতো না’, বলছিলেন ভারতের একজন সাবেক শীর্ষস্থানীয় কূটনীতিবিদ।

এরপর অবশ্য অক্টোবরে জাতিসংঘে নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে নিউ ইয়র্কে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক আয়োজনের অনুরোধ ভারত পাশ কাটিয়ে গেছে– কিন্তু সেখানে ভারতের দিক থেকে কিছু ‘কূটনৈতিক বাধ্যবাধকতা’ও ছিল।

তবে থাইল্যান্ডে বিমস্টেক শীর্ষ সম্মেলনে (যা আগামী দু-তিন মাসের ভেতরে হওয়ার কথা) দুই নেতার মধ্যে বৈঠকের সম্ভাবনা দিল্লি বা ঢাকা, কেউই নাকচ করছে না। এই মুহূর্তে ভারত ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে যেটুকুই অস্বস্তি থাক, এই সম্পর্কের ক্ষেত্রে রূপালি রেখাটা হলো দুই দেশের দুই নেতাই পরস্পরকে নিবিড়ভাবে চেনেন ও জানেন, আর সেটাও বহু বছর ধরে!

ক্রিকেট

হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে শেষ হলো ভারত ও ইংল্যান্ডের টেস্ট ম্যাচ

হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে শেষ হলো ভারত ও ইংল্যান্ডের টেস্ট ম্যাচ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঐতিহাসিক লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত ইংল্যান্ড ও ভারতের মধ্যকার তৃতীয় টেস্ট ম্যাচে রুদ্ধশ্বাস ...

ভারত বনাম ইংল্যান্ড :জয়ের দ্বারপ্রান্তে ইংল্যান্ড, সর্বশেষ স্কোর

ভারত বনাম ইংল্যান্ড :জয়ের দ্বারপ্রান্তে ইংল্যান্ড, সর্বশেষ স্কোর

নিজস্ব প্রতিবেদক: লর্ডসের ঐতিহাসিক মাঠে আজ (১৪ জুলাই) ৩য় টেস্টের পঞ্চম দিনে ভারতের বিপক্ষে জয়ের ...

ফুটবল

চেলসির রাজত্ব ঘোষণা! গোল্ডেন বল,ও গোল্ডেন বুট জিতলেন যে ফুটবলাররা

চেলসির রাজত্ব ঘোষণা! গোল্ডেন বল,ও গোল্ডেন বুট জিতলেন যে ফুটবলাররা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০২৫ সালের ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে ইতিহাস গড়ল ইংলিশ জায়ান্ট চেলসি। যুক্তরাষ্ট্রের মেটলাইফ ...

ম্যাচ জিতে পয়েন্ট টেবিলে বাংলাদেশের দাপট

ম্যাচ জিতে পয়েন্ট টেবিলে বাংলাদেশের দাপট

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাফ অনূর্ধ্ব–২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে নাটকীয় এক ম্যাচে শেষ মুহূর্তে গোল করে নেপালকে ৩–২ ...



রে