| ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ১১ চৈত্র ১৪৩১

ভারতীয় এক মেয়ের জন্য কঠিন সিদ্ধান্ত নিলো বিজিবি

জাতীয় ডেস্ক . স্পোর্টস আওয়ার ২৪
২০২৫ ফেব্রুয়ারি ১৩ ১৩:৪৮:৪৬
ভারতীয় এক মেয়ের জন্য কঠিন সিদ্ধান্ত নিলো বিজিবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তে এক আবেগঘন মুহূর্তের সৃষ্টি হয়, যখন বিজিবির মানবিক উদ্যোগে ভারতে বসবাসরত মেয়ে শরিফা বেগম তার মায়ের শেষ দেখা পান। সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্তের জিরো পয়েন্টে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিজিবি ও বিএসএফের উপস্থিতিতে এ হৃদয়বিদারক ঘটনার অবতারণা হয়।

শেষ বিদায়ের আকুল আবেদনবিজিবি সূত্র জানায়, সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা উপজেলার বাসিন্দা আছিয়া বেগম (৮০) বার্ধক্যজনিত কারণে গত মঙ্গলবার মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর খবর শুনে ভারতে বসবাসরত মেয়ে শরিফা বেগম মায়ের শেষ দেখা দেখার জন্য আকুল আবেদন জানান। শরিফা বেগম বর্তমানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বসিরহাট এলাকায় পরিবারসহ বসবাস করছেন।

সাধারণত দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত পেরিয়ে এভাবে দেখা করার সুযোগ থাকে না। তবে শরিফার অনুরোধে বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্ব সহকারে দেখে বিজিবি। পরবর্তীতে বিজিবি এবং ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের পারস্পরিক সমন্বয়ে শরিফার জন্য সীমান্তে দেখা করার বিশেষ অনুমতি প্রদান করা হয়।

জিরো পয়েন্টে আবেগঘন মুহূর্তপরিকল্পনা অনুযায়ী, সাতক্ষীরাস্থ বিজিবি ৩৩ ব্যাটালিয়নের তত্ত্বাবধানে ভোমরা আইসিপি এলাকায় মেইন পিলার-৩-এর কাছে সীমান্তের জিরো পয়েন্টে শরিফা বেগমকে তার মায়ের মরদেহের সামনে দাঁড়ানোর সুযোগ দেওয়া হয়।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১২টা থেকে পৌনে ১টা পর্যন্ত শরিফা বেগম এবং তার স্বজনরা শেষবারের মতো মায়ের মুখ দেখতে পান। এ সময় শরিফা ও তার পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সীমান্ত এলাকায় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়, যা উপস্থিত সাধারণ মানুষকেও স্তব্ধ করে দেয়।

বিজিবির মানবিক উদ্যোগএই মানবিক উদ্যোগ বাস্তবায়নে বিজিবির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরাস্থ বিজিবি ৩৩ ব্যাটালিয়নের ভোমরা কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার আফজাল হোসেন খান ও ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার সুলতানসহ বিজিবির অন্যান্য সদস্যরা।

অন্যদিকে, বিএসএফের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ১০২ ব্যাটালিয়নের ঘোজাডাঙ্গা কোম্পানি কমান্ডার এসি কুমার ও বিএসএফ সদস্যরা।

সাধারণ মানুষের প্রশংসাবিজিবির এই উদ্যোগকে প্রশংসা করেছেন স্থানীয়রা। সীমান্তের দুই পাশে উপস্থিত মানুষরা বিজিবি ও বিএসএফের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তারা বলেন, “সীমান্ত বিধিনিষেধ থাকলেও এই ধরনের মানবিক উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। এটি দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।”

এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, কঠোর সীমান্ত আইন থাকলেও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির জায়গা এখনও অটুট রয়েছে। শরিফা বেগমের মতো অনেকেই হয়তো এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হন, কিন্তু বিজিবির এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে ভবিষ্যতে মানবিক কার্যক্রমের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

মেজর ডালিম /



রে