অবশেষে ‘আয়নাঘর’ নিয়ে মুখ খুললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ

ছাত্র-জনতার কঠিন আন্দোলনের মুখে পরে শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। এর মাধ্যমে আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হয়। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর একের পর এক ভয়ঙ্কর তথ্য বেরিয়ে আসছে। এতে আওয়ামী লীগের নির্যাতনের কারাগারের আরেক নাম ছিল আয়নাঘর। তা প্রকাশ পেয়েছে সরকারের পতনের পর। এবার এ বিষয়ে কথা বলেছেন দেশটির ইসলামিক কথোপকথন শেখ আহমদুল্লাহ।
১০ আগস্ট শনিবার রাত ১০টার দিকে তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ‘আয়না’ সম্পর্কে তার মতামত জানান।
শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ধার্মিক তরুণদের আয়নঘরে নিয়ে জঙ্গি নাকট সাজানোর লোমহর্ষক ঘটনাগুলো একের পর এক সামনে আসতে শুরু করেছে। যারা বিগত দিনগুলোতে প্রশাসনের জঙ্গি নাটকে বিভ্রান্ত হয়ে ইসলামপন্থীদের জঙ্গি বলে গালি দিয়েছেন, আপনাদের এখন লজ্জিত ও অনুতপ্ত হওয়া উচিত।
শায়খ আহমাদুল্লাহ আরও লেখেন, গুয়ানতানামো বে কিংবা আবু গারিব কারাগারের নাম শুনলেই আমাদের গা শিউরে ওঠে। এত ভয়ংকার ছিল সেই কারাগার। চোখের সামনে ভেসে ওঠে লোমহর্ষক নির্যাতনের মর্মান্তিক সব দৃশ্য। অথচ আমরা এখন আয়নাঘরের যে বীভৎসতার খবর জানছি, তা যেন গুয়ানতানামো বে, আবু গারিব কারাগারকেও হার মানায়।
তিনি লেখেন, আয়নাঘরে হয় কী, ইতোমধ্যে আমরা সবাই তা জেনে গেছি। আয়নাঘর হয়ে উঠেছিল জঙ্গি নাটক বানানোর বিশাল মঞ্চ। প্রশাসনের যখনই কোনো কথিত জঙ্গির প্রয়োজন হতো, নিরীহ কোনো মানুষকে ধরে এনে আয়নাঘরে রাখত আর নির্যাতন করে মিডিয়ার সামনে জঙ্গি হিসেবে পেশ করত।
তিনি আরও লেখেন, এদের এই ঘৃণ্য চক্রান্তের সবচেয়ে বেশি শিকার হয়েছে ধার্মিক মানুষেরা। এর মাধ্যমে কত মানুষের স্বপ্ন যে ধূলিসাৎ হয়েছে, কত তরুণের ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়েছে, কত যুবকের তরতাজা প্রাণ যে নষ্ট হয়েছে, গুম হওয়া স্বজনের প্রতীক্ষায় থেকে কত পরিবার যে একটু একটু করে ক্ষয় হয়েছে, তার কোনো হিসাবই নেই।
তিনি বলেন, যারা আমাদের এই সবুজ বাংলাদেশে গুয়ানতানামো বে তৈরি করেছে, অসংখ্য নিরীহ মানুষের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে, অগণিত যুবককে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে বছরের পর বছর অন্ধকার প্রকোষ্ঠে বন্দি করে রেখেছে, আমরা সেসব কালপ্রিটদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।
তিনি বিদ্বান সমাজ ও ধর্মপ্রাণ মানুষের উদ্দেশে বলেন, আমরা চাই স্বাধীন বাংলাদেশে আর কেউ নিখোঁজ না হোক, প্রত্যেক অন্যায়কারীকে বিচারের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হোক, অন্যায় কাজ বন্ধ হোক, নাটক বন্ধ হোক।