ভাগ্নির চকলেট ও খেলনা নিয়ে আসার কথা থাকলেও লাশ হয়ে ফিরবেন প্রবাসী রনি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউপির ভাদেশ্বরা গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে রনি। বুধবার সকালে রনির মৃ’ত্যুর খবর আসে তার পরিবারের কাছে। মঙ্গলবার লেবাননের রাজধানী বৈরুতে জো’ড়া বি’স্ফোর’ণের ঘটনায় মা’রা গেছেন তিনি।
রানির ছোট বোন জেসমিন আক্তার হ্যাপি জানান, লেবাননে বি’স্ফো’রণের পর শুনেছেন তার ভাইকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। নামাজ পড়ে দোয়া আদায় করে ভাইয়ের প্রাণ ভি’ক্ষা চান। আল্লাহ্কে বলেন, তুমি আমার ভাইয়ের পা নাও, হাত নাও কিন্তু অন্তরটা নিও না। বুধবার ভোরে শুনে রনি বেঁচে নেই।
একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে মানসি’কভাবে ভেঙে পড়েছেন বাবা তাজুল ইসলাম। আর মা ইনারা বেগম ছেলের মৃ’ত্যুর সংবাদ পেয়েই বাকরু’দ্ধ হয়ে পড়েছেন। স্বজনদের চোখেও পানি।
রনির পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, চার ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন রনি। গ্রামের একটি স্কুলে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। কিন্তু দারিদ্রের কারণে পড়াশোনা বেশিদূর এগোয়নি। বাহরাইন প্রবাসী বাবা তাজুল ইসলাম প্রবাসে সুবিধা করতে না পারায় পরিবারের কথা ভেবে রনি বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। আর্থিক দৈন্যদশার কারণে সুদে পাঁচ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ২০১৪ সালের ৯ মার্চ লেবাননে পাড়ি জমান রনি। এর মধ্যে রনির বাবা তাজুল ইসলামও বাহরাইন থেকে দেশে ফেরত আসেন। তবে পরিবারের জন্য হাসিমুখেই কাজ করে যাচ্ছিলেন রনি। লেবাবনের বৈরুতে একটি বিপনী বিতানে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করতেন তিনি।
রনির বাবা তাজুল ইসলাম জানান, গতকাল সন্ধ্যায় সর্বশেষ ছেলে রনির সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয়েছে তার। বাবার সঙ্গে কথা বলে মায়ের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। এরপর আর কোনো যোগাযোগ হয়নি রনির সঙ্গে। রাতে রনির এক সহকর্মী ফোন করে জানান তিনি অসুস্থ্য, তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরপর বুধবার ভোরে আবার ফোন করে জানান রনি মা’রা গেছেন। এখন ছেলের ম’রদেহ দেশে আনার দাবি জানিয়েছেন সরকারের কাছে।রনির বোন হ্যাপি বলেন, এখন আমার ভাইয়ের ম’রদেহটা চাই।
মাছিহাতা ইউপি চেয়ারম্যান আল আমিনুল হক পাভেল বলেন, ঘটনার পর থেকেই আমি রনির পরিবারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। ম’রদেহ দেশে আনার জন্য কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হয়। সেজন্য আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করছি। ম’রদেহ আনার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।