‘এটা আমাদের সবাইকে লজ্জিত করেছে’
মানবাধিকার আইনের ত্রুটি সম্পর্কে বলতে গিয়ে তখন তিনি গল্পটা বলেন। একই ভাষণে তিনি বলেছিলেন, ‘আমাদের অবশ্যই মানবাধিকার আইনের অবসান ঘটানো উচিত।’ আর এখন আমরা জানি যে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি এই আইন বিলুপ্ত করে দেওয়ার কথা বিবেচনা করছেন।
সম্ভবত প্রধানমন্ত্রীর পথেই রয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ। একই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি। শামীমা বেগমের সঙ্গে তিনি যা করেছেন, তাতে আমাদের এই বিশ্বাসই দৃঢ় হয়েছে। শামীমা বেগমের সঙ্গে তাঁর আচরণে মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। জাভিদের নির্বাচনী এলাকায় কনজারভেটিভ পার্টির খুব কমসংখ্যক সদস্যই রয়েছেন। কিন্তু তাঁরাই এখন এখানকার কিংমেকার। তাঁরা বিড়ালের ওই বানানো গল্প খুব পছন্দ করেছেন। তাই সাজিদ জাভিদ যখন শামীমা বেগম ও তাঁর শিশুপুত্রের নাগরিকত্ব বাতিল করলেন, তখন তাঁরা এটাকে সমর্থন করলেন।
আমি জানি যে আইএস জঙ্গিগোষ্ঠীতে যোগ দেওয়া একজন নারীর প্রতি কারও খুব একটা সহানুভূতি জাগবে না, যে গোষ্ঠীটি কিনা হাজার হাজার মানুষের ধর্ষণ ও মৃত্যুর জন্য দায়ী। আমি জানি যে শামীমা লিটল অরফ্যান অ্যানি নন। কিন্তু তিনি একজন ব্রিটিশ নাগরিক। তিনি অনাকর্ষণীয় বলে আমরা তাঁর নাগরিকত্ব কেড়ে নিতে পারি না। এমনকি যদি তিনি আমাদের আইন, আমাদের মূল্যবোধ এবং চিন্তাভাবনা ও ধারণাকে সম্মান না-ও করেন। মনে রাখতে হবে, শামীমা বেগম অন্য কোনো দেশের নয়, তিনি আমার দেশের নাগরিক।
আর তাঁর শিশুপুত্রের কী দোষ ছিল? সে তো ব্রিটিশ নাগরিক ছিল। সে তো সহানুভূতি পেতে পারত। মানবাধিকার আইনের আওতায় তার তো সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার ছিল, কিন্তু তার বদলে সে পেয়েছে নিষ্ঠুরতা। জাররাহ নামের ওই শিশু এখন মৃত।
আমি নিশ্চিত যে জাররাহই একমাত্র শিশু নয়, যে সিরিয়ার শরণার্থীশিবিরে মারা গেছে, যেখানে এখন শামীমা বেগম রয়েছেন। সিরিয়ার মানবিক অঞ্চলগুলোতে শিশুমৃত্যুর ঘটনা অস্বাভাবিক নয়। প্রায়ই এরা মারা পড়ছে। সহিংসতা, মৃত্যু ও ক্ষুধা তাদের চতুর্দিক থেকে বেষ্টন করে ফেলেছে। ব্রিটেনের মহান নাগরিকেরা মনে করেন যে এই নিষ্পাপ শিশুদের মৃত্যু রোধে আমাদের সাহায্য করা উচিত। তাঁরা এটা মনে করেন না যে শামীমা বেগমের সন্তানকে এভাবে মরতে দেওয়া উচিত হয়েছে। অবশ্যই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ওই নিষ্পাপ শিশুকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে পারতেন। দেশে ফিরতে দিলে হয়তো শিশুটি বেঁচে যেত। এর আগেও অপুষ্টি আর রোগে ভুগে শামীমার দুই সন্তানের মৃত্যু হয়েছে।
ব্রিটেনে এই মুহূর্তে রাজনীতি খুব কমই প্রশংসনীয়। জনগণের মনে ভয় ও ঘৃণার অনুভূতি জাগিয়ে তোলা হচ্ছে আমাদের রাজনৈতিক অভিনেতাদের দ্রুত জনপ্রিয়তা পাওয়ার উপায়। বিভক্তি সৃষ্টি করা এবং জয় করা কঠিন নয়—নিজেকে কঠিন দেখানোর জন্য এটা সহজতম কৌশল। এর চেয়ে অনেক কঠিন মানবতা দেখানো, যা সাজিদ জাভিদ দেখাতে পারেননি। সাজিদ জাভিদ যদি অপরাধীদের প্রতি কঠোর হতে চান, তাহলে তাঁর উচিত হবে এখানকার অর্থাৎ ব্রিটেনের ভেতরে যারা অপরাধ করছে তাদের প্রতিও কঠোর হওয়া। শুধু শামীমা বেগম কেন একা শাস্তি পাবেন?
সাজিদ যদি স্টিলের তৈরি হতেন, তবে তিনি হয়তো জনসাধারণকে ব্যাখ্যা করার সাহস পেতেন যে কেন লন্ডন, বার্মিংহাম এবং ম্যানচেস্টারের ছুরিগুলো বন্ধ করে দেওয়ার জন্য আমাদেরকে আমাদের পকেটে হাত রাখতে হবে এবং তহবিলে একটু অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করতে হবে, যাতে আমাদের পুলিশ এবং আমাদের তরুণেরা সেবা দিতে পারেন। কিন্তু সেই সাহস তাঁর নেই।
দয়া ও মানবতা হচ্ছে ব্রিটিশ মূল্যবোধ। সাজিদ জাভিদ কিন্তু এ দুটির কোনোটাই দেখাননি। শামীমা বেগমের নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত এবং তাঁর ব্রিটেনে ফিরে যাওয়ার সুযোগ প্রত্যাখ্যান করা, সবটাই ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের চিন্তা দ্বারা পরিচালিত। কোনো নীতি এখানে কাজ করেনি। তাই আমাদের সাদা কাপড়ে মোড়া জাররাহর মৃতদেহ দেখতে হয়েছে। একটি শিশুর জীবনের সঙ্গে এই রাজনৈতিক খেলা আমাদের সবাইকে লজ্জিত করেছে।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনূদিতজেস ফিলিপস ব্রিটেনের লেবার পার্টির এমপি
- সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের জন্য বড় সুখবর, যে প্রজ্ঞাপন জারি করল অর্থ মন্ত্রণালয়
- অভিনেতা সিদ্দিককে পিটুনি দিয়ে থানায় সোপর্দ করল ছাত্রদল
- হঠাৎ পাল্টে গেলো পেঁয়াজের বাজার
- এবার যে ভবিষ্যদ্বাণী স্বর্ণের দাম নিয়ে
- কমলো সয়াবিন তেলের দাম, যা তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন
- যাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব, জানুন ইসলামী বিধান অনুযায়ী
- আরও কমলো ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম
- শিক্ষকদের বেতন স্কেল নিয়ে সুখবর
- নুসরাত-অপু-নিপুণ-জায়েদ—হত্যাচেষ্টা মামলায় যুক্ত ১৭ শোবিজ তারকা
- সৌদি সরকারের জরুরি নির্দেশনা
- চিকিৎসা শেষে দেশে আসছেন খালেদা জিয়া, রাজনীতি নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে
- সৌদি থেকে নিঃস্ব হয়ে ফিরেছেন শতাধিক প্রবাসী
- শক্তিশালী কালবৈশাখীতে কয়েকটি উপজেলার বাড়িঘর-ফসল তছনছ
- অভিষেকে বাজিমাত, মাসাকেসার ঘূর্ণিতে কাঁপলো টাইগাররা
- দেশের ৯ অঞ্চলে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের শঙ্কা