| ঢাকা, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২

‘বাংলাদেশের ক্রিকেটে উন্নতির বড় বাধা উইকেট, কন্ডিশন’

ক্রিকেট ডেস্ক . স্পোর্টসআওয়ার২৪
২০২১ নভেম্বর ১৫ ১৩:৫৮:০৪
‘বাংলাদেশের ক্রিকেটে উন্নতির বড় বাধা উইকেট, কন্ডিশন’

৯৯ টেস্টের ক্যারিয়ারে রয়েছে ২২টি শতকের ইনিংস ও ২১টি অর্ধশতক। ৪৫.০৩ গড় রেখে শেষ করেছিলেন ক্যারিয়ার, রয়েছে ৬ হাজার ২১৫ রান। ওয়ানডে ক্যারিয়ারটাও বেশ সমৃদ্ধ। ৩৩৪ ম্যাচের ক্যারিয়ারে ৩৬.৯২ গড়ে ৭টি শতক আর ৫৮টি অর্ধশতকে করেছেন ৯ হাজার ৩৭৮ রান।

তার আলো যেমন ছড়িয়েছে ক্রিকেট দুনিয়ায়, তেমনই রয়েছে অন্ধকারও। ভারতের সাবেক এই অধিনায়ক তার সফলতা দিয়ে দেশটির মানুষের কাছে হয়ে উঠেছিলেন নায়ক। শুধু ভারতে নয়, তার মতো একজন হতে চাইতো ক্রিকেটার হবার স্বপ্ন দেখা তরুণেরা।

একজন আজহারউদ্দীন শুধু ক্রিকেট দিয়েই জনপ্রিয় হননি, তার মার্জিত আচরণ মুগ্ধ করত সবাইকে। তিনি এতটাই মার্জিত ছিলেন যে, তাকে অবিশ্বাসের প্রশ্ন না আসাটাই ছিল স্বাভাবিক।

অথচ তিনিই কী না জড়িয়ে পড়েন ম্যাচ গড়াপেটার মতো অক্রিকেটীয় কাজের সঙ্গে! শুরুতে কেউ বিশ্বাস করতে না চাইলেও পরে ভুল ভাঙে ঠিকই। ম্যাচ গড়াপেটা শুধু নিজেই করেননি, জুয়াড়ির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অধিনায়ক হ্যানসি ক্রনিয়েকেও।

এসব শেষ পর্যন্ত স্বীকার করেও নেন আজহারউদ্দীন। স্বীকার করেন ১৯৯৬ সালে রাজকোটে দক্ষিণ আফ্রিকা, ১৯৯৭ সালে শ্রীলঙ্কা এবং ১৯৯৯ সালে চিরপ্রতিদ্বন্ধী পাকিস্তানের সঙ্গে ম্যাচ গড়াপেটা করেন। যে কারনে তাকে ভারতের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করা হয় আজীবনের জন্য।

তবে শেষ পর্যন্ত তাকে মুক্তি দেয়া হয়ে আজীবনের নিষেধাজ্ঞা থেকে। ২০১২ সালে নিষেধাজ্ঞা মুক্ত হলেও আজহারউদ্দীন দেশের ক্রিকেট বেচে দেয়ার কালিমা নিয়েই আবারও যুক্ত হয়েছেন ক্রিকেটের সঙ্গে।

বর্তমানে হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির দায়িত্বে থাকা আজহারউদ্দীন ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরের মতো দারুণ ভুমিকা পালন করছেন আবুধাবি টি-টেন লিগে বাংলা টাইগার্স দলটির।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ কাভার করতে এসে তার দেখা পাওয়া। ক্ষনিকের আড্ডায় জানতে চাওয়া তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেটকে কতটা দেখেন কিংবা বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নতিতে তার কী পরামর্শ। কথা প্রসঙ্গে জানা হয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে বেশ ভালোই খোঁজ রাখেন।

তার কাছে জানতে চাওয়া হলো কেন বাংলাদেশ ক্রিকেট পিছিয়ে আছে অন্য দলগুলোর থেকে? কেন এগুতে পারছে না ঠিকঠাক? দেশের মাঠে বাংলাদেশ বরাবরই দুর্দান্ত গত কয়েক বছর ধরে কিন্তু, দেশের বাইরে ঠিক সেভাবে ধরা দিচ্ছে না সাফল্য।

আজহারউদ্দীন মনে করেন, দেশের বাইরে উন্নতি করতে হলে খেলতে হবে ট্রু উইকেটে। ঘরের মাঠে টার্নিং উইকেটে খেলে একটা সময় ভালো করলেও এমন অভ্যাস বদলাতে হবে।

“আমি যে কথাটা সবার আগে বলতে চাই, বাংলাদেশকে খেলতে হবে স্পোর্টিং উইকেট। আমি যা বোঝাচ্ছি, যেখানে ব্যাটসম্যান-বোলার সবার সমান সুবিধা থাকবে। আমি যতদূর দেখেছি, ওরা দেশের মাটিতে নিজেদের পছন্দসই উইকেটে খেলে। এজন্য যখন মন্থর, টার্নিং উইকেটে খেলে তখন বোলাররা খুব ভালো করে। আর যখন ওরা দেশের বাইরে খেলে সমস্যাটা হয় তখন। কেন না, উইকেট থেকে সহায়তা পায় না। আমি মনে করি, এই ব্যাপারটায় বাংলাদেশের মনোযোগ দেওয়া জরুরী।”

“ভালো উইকেটে খেলার সামর্থ্যও ওদের আছে। বেশ কিছু ভালো মানের পেসার রয়েছে। অল্প সুযোগ পেলেও তারা নিজেদের প্রমাণ করেছে। আমি মনে করি এমন কিছু উইকেট বানানো প্রয়োজন যেখানে পেসাররা সহায়তা পাবে, সুইং, সিম মুভমেন্ট থাকবে। এমন উইকেটে খেললে বোলাররাই নয়,উন্নতি হবে ব্যাটসম্যানদের জন্যও। যা দেশের বাইরে খেলতে গেলে কাজে লাগবে।”

সবশেষ ঘরের মাঠে যে দুটি সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ সেখানে বেশ বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে। সদ্য শেষ হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দুই ফাইনালিস্ট অস্ট্রেলিয়া (৪-১) আর নিউজিল্যান্ডকে (৩-২) নাকানিচুবানি খাইয়ে বিশ্বকাপে আসলেও প্রথম পর্বে দুই সহজ প্রতিপক্ষে ওমান আর পাপুয়া নিউগিনিকে হারালেও মূল পর্বে জিততে পারেনি একটি ম্যাচও। কেন এমন ব্যর্থতা?

আজহারউদ্দীন মনে করেন, প্রতিপক্ষকে ঘরের মাঠের কন্ডিশনের সুবিধা নিয়ে হারানোটা দোষের কিছু নয়। তবে একটি বা দুটি ম্যাচ অন্তত স্পোর্টিং উইকেটে খেলে নিজেদের তৈরি করা হয়।

“নিজেদের কন্ডিশনে উইকেটের সুবিধা নেয়াটাতে আমি দোষের কিছু দেখছি না। কিন্তু শিখতে তো হবে। পুরো সিরিজ একই ধরনের উইকেটে না খেলে যদি একটি বা দুটি ম্যাচ স্পোর্টিং উইকেটে খেলে তাহলে ভালোভাবে শেখা যাবে। আমি মনে করি এতে স্কিল বেশি বাড়বে। এটা শুধু বোলারদের জন্য নয়, ব্যাটসম্যানদের ব্যাপারেও সমান। র‌্যাং টার্নার না করে, একটু স্পিন আছে, কিছুটা সুইং আছে এমন উইকেটে খেললে বেশি উন্নতি হবে। যদি টার্ন অনেক বেশি করে তাহলে যে কেউই ভালো করতে পারে। সত্যিকারের সামর্থ্যটা সেখানে বোঝা যাওয়ার সম্ভাবনা কম।”

ঘরের মাঠে বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের মতো বড় দলগুলোর বিপক্ষেও টেস্ট জিতেছে। সাফল্যের পাল্লা ভারী করেছে ঠিকই তবে রয়ে গেছে দেশের বাইরে ভালো না খেলার তীক্ততা।

আজহারউদ্দীন মনে করেন, “সব ধরনের ক্রিকেটে উন্নতির জন্য মূল ব্যাপার কিন্তু বাংলাদেশের উইকেট এবং কন্ডিশন। উন্নতিটা এখানে করতে হবে। ছেলেদের ভালো উইকেট দিতে হবে। বোলাররা ভালো বল না করলে ব্যাটসম্যানরা চ্যালেঞ্জ নেয়া শিখবে না। উইকেট যদি টার্নিং হয়, স্পিনাররা তো ভালো বল করবেই কিন্তু, যে মুহূর্তে বাইরে খেলতে যাবে তখনই পরিস্থিতি কঠিন হয়ে যাবে। স্পিনিং উইকেটে ব্যাটসম্যানদের বেধে রাখা সহজ তবে ভালো উইকেটে ভালো ব্যাটসম্যানদের বেধে রাখা মোটেও সহজ কাজ নয়।”

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

ক্রিকেট

বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান: টস শেষ, জেনে নিন দুই একাদশ

বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান: টস শেষ, জেনে নিন দুই একাদশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: মিরপুরে আজ থেকে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। ...

২০ ইনিংসে ৫৫ ছক্কা! টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে তানজিদ তামিমের রেকর্ড ঝড়

২০ ইনিংসে ৫৫ ছক্কা! টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে তানজিদ তামিমের রেকর্ড ঝড়

নিজস্ব প্রতিবেদক: টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশ পেল এক নতুন বিস্ফোরক তারকা—তানজিদ হাসান তামিম। মাত্র ২০ ইনিংসে ...

ফুটবল

চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লড়াই আজ! বাংলাদেশ-নেপাল অলিখিত ফাইনাল সরাসরি দেখবেন যেভাবে

চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লড়াই আজ! বাংলাদেশ-নেপাল অলিখিত ফাইনাল সরাসরি দেখবেন যেভাবে

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ ২১ জুলাই (সোমবার) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৫-এর সবচেয়ে ...

রোনালদোর দাবির সঙ্গে দ্বিমত মাহরেজের, সৌদি লিগ নিয়ে জানালেন বাস্তবতা

রোনালদোর দাবির সঙ্গে দ্বিমত মাহরেজের, সৌদি লিগ নিয়ে জানালেন বাস্তবতা

নিজস্ব প্রতিবেদক: সৌদি প্রো লিগ (SPL) কি বিশ্ব ফুটবলের শীর্ষ পাঁচ লিগের একটি? ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ...

Scroll to top

রে
Close button