মনে হচ্ছিল, সেই চিঠির প্রেক্ষিতে হয়তো সাব্বির রহমানের বিরুদ্ধে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন নেবে সিসিডিএম। কিন্তু আজ দুপুরে আবাহনীর বিপক্ষে ঠিক লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ প্রথম একাদশে সাব্বির।

প্রতিপক্ষ দলের ক্রিকেটারের সাথে অসৌজন্যমুলক আচরণ, তাকে হেয় প্রতিপন্ন করা এবং তার গাত্রবর্ণ নিয়ে ব্যঙ্গ করা সাব্বির আজ মাঠে নেমে কিন্তু ছিলেন একদমই স্বাভাবিক। সম্ভবত এবারের লিগে নিজের সেরা ইনিংসটি খেলেছেন এমন বিতর্ক মাথায় নিয়ে।

আহামরি কিছু করেননি। ২৭ বলে ৩৫ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংস বেরিয়ে এসেছে তার ব্যাট থেকে। তবে ওই ইনিংসটিতে একটি কাজ হয়েছে। শুরুতে ওপেনার মেহেদি মারুফ আউট হওয়ার পর একদিকে আরেক ওপেনার জাকের আলী সাহস নিয়ে খেলছিলেন, সাব্বির তার সাথে জুটি বেঁধে স্বচ্ছন্দ্যে ব্যাটিং করলে রূপগঞ্জের রানের চাকা সচল হয়ে যায়।

তাতে জাকের আলী ছাড়াও তরুণ আল আমিন জুনিয়র, অধিনায়ক নাঈম ইসলাম আর পেস বোলার মুকতার আলীরা শেষ দিকে হাত খুলে খেলার সাহসটা পেয়েছেন। আর তার ফলেই ১৮ ওভার শেষে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বোর্ডে ৫ উইকেটে ১৬২ রানের পুঁজি।

১৮ ওভার দেখে খটকা লাগছে নিশ্চয়ই। না, মোটেই গোলমেলে মনে হবার কিছু নেই। রূপগঞ্জ ইনিংসের ৬ ওভার শেষে প্রচণ্ড বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। ৫০ মিনিট পর আবার যখন খেলা শুরু হয়, তখন ২ ওভার কমিয়ে খেলা ১৮ ওভারে নিয়ে আসা হয়।

যে মাঠে ১৪০-১৫০ রান লড়াকু পুঁজি, সেখানে ১৮ ওভারে ১৬২ বেশ ভালো স্কোরই। আর দলকে অতদূর নিয়ে যাবার ভিত দিয়েছেন ওপেনার জাকের আলী আর সাব্বির রহমান।

২০ রানে ওপেনার মেহেদি (৮) আউট হওয়ার পর দ্বিতীয় উইকেটে খুব দ্রুত ৬০ রান তুলে দেন সাব্বির ও জাকের। ৩৫ রান করার পথে সাব্বির কয়েকটি দৃষ্টিনন্দন শট খেলেছেন। যা পুরোনো দিনের সাব্বিরকেই মনে করিয়ে দিচ্ছিল।

তার প্রথম শিকার হন আবাহনী পেসার তানজিম হাসান সাকিব। এ তরুণের এক ওভারে পুল করে স্কোয়ার লেগ দিয়ে চার, তারপর পুল করে ছক্কা মারেন সাব্বির। বল গিয়ে আঘাত হানে গ্র্যান্ডস্ট্যান্ডের দেয়ালে। এরপর সোজা ব্যাটে তাইজুলকে ছক্কা হাঁকিয়েছেন সাব্বির।

অবশেষে আবাহনীর বাঁহাতি পেসার মেহেদি হাসান রানার বলে তুলে মারতে গিয়ে লং অফে ধরা পরেন, ৩০ গজের একটু বাইরে। অন্যদিকে জাকের খুব হাত খুলে খেলতে না পারলেও ফিফটি উপহার দেন। শুরু থেকে ১৭ ওভার অবধি (১৬.২ ওভার) উইকেটে থেকে ৪২ বলে ৫২ রান করেন রূপগঞ্জের এই ব্যাটসম্যান।

তাদের সাজিয়ে দেয়া শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে শেষ দিকে হাত খুলে রানের চাকা দ্রুত করেছেন আল আমিন জুনিয়র। ১৪ বলে ২৬ রানের ছোট্ট অথচ কার্যকরী এক ইনিংস খেলেছেন তিনি।

মারকুটে এই ইনিংসের পথে মেহেদি হাসান রানার এক ওভারে বাউন্ডারি ও ছক্কা, পরের ওভারে তাইজুলকে ওয়াইড লং অন দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকান আল আমিন। পরে সাইফউদ্দীনের বলে লং অফের ওপর দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে আর পারেননি। তার তুলে মারা সেই ক্যাচ ধরেছেন তাইজুল, লং অন থেকে দৌড়ে প্রায় লং অফে গিয়ে। শেষ পর্যন্ত মাটিতে শরীর ফেলে দিয়েও ক্যাচ ছাড়েননি তাইজুল।

এর পর অধিনায়ক নাঈম ইসলাম ১২ বলে ১৬ আর মুক্তার আলী ৫ বলে ১৪ রানের দুটি কার্যকর ইনিংস খেললে ১৮ ওভার শেষে ১৬০‘র ঘরে পৌঁছে যায় লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ।

আবাহনীর পেসার মেহেদি হাসান রানা ৪ ওভারে ৩৭ রান খরচ করলেও তুলে নেন ৩টি উইকেট। সমান ওভারে ৩৬ রান দিয়ে ২টি উইকেট শিকার সাইফউদ্দিনের।