কথা ছিল সকালে দেখা হবে, তা আর হলো না
জীবিকার কারণে স্বামী-স্ত্রী'’ দু’জন দুই জে’লায় থাকলেও মাসে অন্তত একবার স্ত্রী'’কে দেখতে যেতেন ইউসুফ। সোমবার রাতে স্ত্রী'’-সন্তানের সঙ্গে দেখা করতে উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে ওঠেন তিনি।
ট্রেনে ওঠার আগে স্ত্রী'’কে ফোন করে বলেন, ‘সকালে দেখা হবে।’ কিন্তু ভাগ্যের এমনই পরিহাস- সেই দেখা আর হলো না তাদের। দৈনিক সমকালের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজে’লার মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনের ক্রসিংয়ে আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ও তূর্ণা নীশিথার মধ্যে মুখোমুখি সং’ঘর্ষ কেড়ে নেয় আলী মো. ইউছুফের জীবন। দুই ট্রেনের সং’ঘর্ষে ঘটনাস্থলেই নি’হত হন তিনি। খবর পেয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে যান তার স্ত্রী'’ চিশতিয়া।
লা’শ নিতে স্বামীর চাচাতো ভাই উজ্জ্বল ও অন্যান্য আত্মীয়ের সঙ্গে ভোরেই ঘটনাস্থলে রওনা দেন তিনি। কসবা পৌঁছানোর পর থেকে একটা কথাও বলেননি চিশতিয়া। শোকে পাথর হয়ে ফ্যাল ফ্যাল দৃষ্টিতে এক মনে তাকিয়ে থাকছেন।
চোখের পানিও যেন শুকিয়ে গেছে তার। স্বামীর লা’শ বুঝে পাওয়ার পর একবার ডুকরে কেঁদে উঠেছিলেন। তারপর আবার নির্বাক।
উজ্জ্বল বলেন, এমন আচ’মকা বিপদে স্বামীর শোকে পাথর হয়ে গেছেন ভাবী। কারও সঙ্গেই কথা বলছেন। মে’য়েটার কথা ভেবে ক’ষ্ট লাগছে। আল্লাহতায়ালা যেন ভাবীকে শোক সইবার শক্তি দেন।
সোমবার রাত পৌনে ৩টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজে’লার মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনের ক্রসিংয়ে আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ও তূর্ণা নীশিতার মধ্যে মুখোমুখি সং’ঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে কমপক্ষে ১৬ জন নি’হত হয়। আ’হত হয় আরও অর্ধশতাধিক যাত্রী।
রাতেই রেল কর্তৃপক্ষ স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে উ’দ্ধার কাজ শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিস, সিভিল ডিফেন্স ও পু’লিশ সদস্যরা উ’দ্ধার কাজে অংশ নেন। মঙ্গললবার সকালে যোগ দেন স্কাউট সদস্য ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা।
ম’র্মা’ন্তিক এ দুর্ঘ’টনার কারণ অনুসন্ধানে পাঁচটি ত’দন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে জে’লা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি ত’দন্ত কমিটি ও রেলওয়ে থেকে চারটি ত’দন্ত কমিটি গঠন করা হয়।