হুইল চেয়ারে আদালতে খালেদার আধা ঘণ্টা

বুধবার পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে খালেদা জিয়ার বিচারে বসে আদালত। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় পাঁচ বছরের দণ্ড পাওয়া বিএনপি নেত্রীর বিরুদ্ধে একই আদালতে চলছিল জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা।
এই মামলায় গত ১ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষে ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি শুনানির কথা ছিল। তবে ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যাওয়া বিএনপি নেত্রীকে আর আদালতে নেয়া যায়নি। অসুস্থতার কারণে একাধিক কার্যদিবসেও তাকে আদালতে নেয়া যায়নি। ফলে শেষ পর্যায়ে থাকা চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার শুনানি আর হয়নি। এই অবস্থায় দুদকের আবেদনে মঙ্গলবার বকশিবাজারের বদলে কারাগারেই আদালত বসার সিদ্ধান্ত হয়।
কারা ফটক দিয়ে ঢুকে ডান পাশেই প্রশাসনিক ভবনে বসে এই আদালত। আর ভেতরে আরও একটি ফটক পেরিয়ে ডান পাশের একটি ভবনে রাখা হয়েছে বিএনপি নেত্রীকে। সব মিলিয়ে দূরত্ব হবে দুইশ গজের মতো।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি বন্দী হওয়ার দুই মাস পর এপ্রিলে চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে আনার দিন গাড়ি থেকে নেমে হেঁটেছিলেন খালেদা জিয়া। তবে আজ এইটুকু পথ তিনি এসেছেন হুইল চেয়ারে করে।
খালেদা জিয়ার হুইল চেয়ার ঘিরে ছিলেন পাঁচজন নারী কারারক্ষী। সঙ্গে সিনিয়র জেল সুপারসহ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন। গৃহকর্মী ফাতেমাও ছিলেন পুরোটা সময়।
হালকা বেগুনি রঙের এক ধরনের শাড়ি পরে আদালতে আসেন খালেদা জিয়া। পায়ে সাদা জুতা। এ সময় তার বাম হাতসহ শরীরের নীচের অংশে একটি সাদা কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল। চেহারায় অসুস্থতা আর যন্ত্রণার ছাপ ছিল স্পষ্ট। কুঁকড়ে যাচ্ছিলেন বারবার।
দৃশ্যত বাম হাত একেবারেই নাড়াতে পারছিলেন না তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। ওই অবস্থাতেই পরিত্যক্ত কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে হাজির করা হয় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে।
আদালতে বিএনপি নেত্রী ছিলেন আঘা ঘণ্টার মতো। পুরোটা সময়ই হুইল চেয়ারেই বসেছিলেন ৭৩ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। কারাগারে এজলাস স্থাপন করায় খালেদা জিয়ার অসন্তোষও ছিল স্পষ্ট। আইনজীবীদের বক্তব্যের একপর্যায়ে সেই অভিব্যক্তিও প্রকাশ করেন তিনি।
হুইল চেয়ারে বসেই বিএনপি নেত্রী বলেন, ‘আপনারা যতদিন ইচ্ছা সাজা দিন, আমার শারীরিক অবস্থা ভালো না। আমি এ অবস্থায় বারবার আসতে পারবো না। আর এভাবে বসে থাকলে আমার পা ফুলে যাবে। আমার সিনিয়র কোন আইনজীবী আসেননি। এটা জানলে আমি আসতাম না। এই আদালত চলতে পারে না। এই আদালতে ন্যায়বিচারও হবে না।’
আদালতের কার্যক্রম শেষে চলে যাওয়ার সময় উপস্থিত সাংবাদিকদেরও তিনি জানান, ‘তিনি খুবই অসুস্থ। বাম হাত দেখিয়ে বলেন, এই হাত নাড়াতে পারেন না। বাম পা সোজা হয়ে থাকে, বাঁকাতে পারেন না। প্যারালাইজডের মতো হয়ে গেছে। এ অবস্থায় বার বার তিনি আদালতে আসতে পারবেন না।’
এরপর পৌনে একটার দিকে খালেদা জিয়াকে আগের মত করে হুইল চেয়ারে করে কারাগারের ভেতরে তার জন্য নির্ধারিত ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়।
আদালতে যা যা হলো
সকাল থেকে বিচারক, দুদকের আইনজীবী, সাংবাদিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অস্থায়ী আদালতে উপস্থিত হন। কিন্তু খালেদা জিয়া উপস্থিত হবেন কি হবেন না তা নিয়ে সবার মধ্যে নানা কৌতুহল ছিল। শুরুর দিকে কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছিলেন না খালেদা জিয়া আদালতে আসবেন কি আসবেন না। যদিও এক পর্যায়ে নিশ্চিত হওয়া যায় তিনি আসবেন।
আদালত বসার কিছুক্ষণ পর খালেদা জিয়ার পক্ষে ঢাকা বার কাউন্সিলের সভাপতি গোলাম মোস্তফা খান বিচারকের সঙ্গে কথা বলেন।
এ সময় মূল ফটকের ভেতরে বড় লোহার ফটকও খুলে দেয়া হয়। যতক্ষণ আদালতের কার্যক্রম চলেছে, ততক্ষণ খোলা ছিল এটি।
আদালত কক্ষে এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
খালেদা জিয়া আদালতে প্রবেশের পাঁচ মিনিট পর খাস কামরা থেকে এজলাসে আসেন বিচারক আখতারুজ্জামান। এর আগে বেলা ১১টা ১০ মিনিটে বিচারকের গাড়ি মূল ফটক দিয়ে কারাগারে প্রবেশ করে।
এজলাসে বসার পর দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল মামলার কার্যক্রম শুরুর জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেন। কারাগারের এই জায়গায় আদালত স্থানান্তরের বিষয়ে গেজেট প্রকাশের বিষয়েও কথা বলেন।
বিচারক বলেন, কারাগারে আদালত বসানোর প্রজ্ঞাপন জারির পর বেগম খালেদ জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়ার বাসায় এর কপি কাল রাতেই পৌঁছে দিয়েছেন তিনি, ব্যক্তিগতভাবেও কথা বলেছেন। কিন্তু তারা আসেননি।
আইনজীবীরা না থাকলেও আসামিরা উপস্থিত থাকায় মামলার কার্যক্রম শুরু করা যায় জানিয়ে বিচারক বলেন, ‘এটা প্রকাশ্য আদালত।’
আইনজীবী না দেখে বিচারক বলেন, ‘তাহলে এক ঘণ্টা সময় দেই। আইনজীবীরা আসুক। আসামিদের জামিনের জন্য আবেদন দিতে হবে তো।’
পরে খালেদা জিয়ার পক্ষে কথা বলার সুযোগ চান ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা খান। তিনি বলেন, ‘মাননীয় আদালত আজকে আমি পর্যবেক্ষণ করতে এসেছি। এই মামলায় যারা বিজ্ঞ আইনজীবী আছেন তারা আজকে আসেননি। কারণ গেজেট হয়েছে রাতে। টিভির স্ক্রলে আমরা দেখেছি। প্রিন্ট মিডিয়াতে সেইভাবে আসেনি খবরটা। আর আমি যখন এসেছি তখন মোবাইল রেখে আসতে হয়েছে। আইনজীবীদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করারও সুযোগ হয়নি। তাই তারা এখন কে কোথায় আছেন সেটা জানি না।’
‘বেগম খালেদা জিয়া দেখেন কেমন অসুস্থ। তাকে হুইল চেয়ারে করে আনা হয়েছে। তাই সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে এই মামলাটি বর্তমান অবস্থায় রেখে নতুন তারিখ দিলে ভালো হবে।’
পরে বিচারক বলেন, ‘কিন্তু এদের তো জামিনের আবেদন দিতে হবে না?’
তখন এই আইনজীবী বলেন, ‘বর্তমান অবস্থায় রেখে দেয়ার জন্য আদেশ দিতে পারেন আপনি।’
পরে গণমাধ্যমকর্মীদেরকে গোলাম মোস্তফা খান বলেন, ‘তার (খালেদা জিয়া) বাম হাতও একেবারেই চলছিল না। তিনি কাঁপছিলেন। হুইল চেয়ার থেকে চেয়ারেও বসতে পারেন না।’
- দুঃসংবাদ দিল আবহাওয়া অফিস
- বিয়ের রাতেই শরীরের খেলা,ভাইরাল ভিডিও
- আজকের সৌদি রিয়াল রেট (২৬ এপ্রিল ২০২৫)
- বাংলাদেশিদের জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসা চালু
- আইপিএলে সাকিব: ২০ লাখ রুপি দিয়ে কিনতে চাইছে যে দল
- ভারত পাকিস্থান সংঘাত : ড. ইউনুসের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ
- ব্রেকিং নিউজ : ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতার
- সুখবর পাসপোর্ট ইস্যুতে, এবার নেওয়া হলো যে নতুন উদ্যোগ
- অবাক বিশ্ব : ক্রিকেটে হতে চলছে নতুন এক ইতিহাস
- এক লাফে যত টাকা বোনাস বাড়ল শিক্ষক-কর্মচারীদের
- টানা ৩ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
- হারের মানেই বিদায়, আজ বাঁচা-মরার লড়াইয়ে মুখোমুখি চেন্নাই ও হায়দরাবাদ
- এবার ভারতীয়দের ভিসা নিয়ে চরম দু:সংবাদ
- আজকের ওমানি রিয়াল রেট বিনিময় হার
- ১ লটারিতে কপাল খুলেছে দুই প্রবাসী বাংলাদেশির