প্রকাশে এলো জুলাই ঘোষণাপত্রে যা যা আছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় সূচিত হলো ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে। গণমানুষের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ, বঞ্চনা ও স্বপ্নের প্রতিফলন ঘটেছে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’-এ, যা মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত এক আয়োজনে পাঠ করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই অনুষ্ঠানে দেশের নানা রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী, নাগরিক সমাজ এবং সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন। শুরুতেই জুলাই আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
ঘোষণাপত্রে স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে, এই ভূখণ্ডের মানুষ পাকিস্তানি শাসকদের শোষণের বিরুদ্ধে লড়াই করে ১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিল। সেই মহান আত্মত্যাগের লক্ষ্য ছিল একটি সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়ভিত্তিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। কিন্তু স্বাধীনতার পরপরই ক্ষমতাসীনদের কর্তৃত্ববাদী নীতির কারণে সেই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত হয়নি। বিশেষ করে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, বাকস্বাধীনতা হরণ ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ গণতন্ত্রকে বিপন্ন করে তোলে।
ঘোষণাপত্রে আরও বলা হয়, ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থান ও ২০০৭ সালের ১/১১-এর মতো ঘটনাগুলো প্রমাণ করে—এই দেশের জনগণ কখনোই স্বৈরশাসন মেনে নেয়নি। তবে গত ১৬ বছরের শাসনামলে আওয়ামী লীগ সরকার পুনরায় ফ্যাসিবাদী, একনায়কতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে। প্রহসনের নির্বাচন, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ, গুম, খুন, নিপীড়ন ও দুর্নীতির মাধ্যমে গণতন্ত্রের পথ পুরোপুরি রুদ্ধ করে দেওয়া হয়। দেশের অর্থনীতি, ব্যাংক ব্যবস্থা ও পরিবেশ মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার উপর দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী যে গণআন্দোলনের সূচনা হয়, তা এক সময় গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। এই অভ্যুত্থানে দেশের প্রায় সব শ্রেণিপেশার মানুষ অংশগ্রহণ করে। রাজপথে নারী-শিশুসহ শত শত মানুষ নিহত হন, বহু মানুষ পঙ্গুত্ব ও অন্ধত্ব বরণ করেন। পরিস্থিতির চূড়ান্ত পর্যায়ে ৫ আগস্ট রাজধানীমুখী জনতার ঢলে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করতে বাধ্য হন এবং দেশত্যাগ করেন।
ঘোষণাপত্রে বলা হয়, জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করা হয় এবং সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদের আলোকে সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতে ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। এর নেতৃত্বে আনা হয় ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে। এই সরকার নতুন একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ও সাংবিধানিক সংস্কারের অঙ্গীকার নিয়ে যাত্রা শুরু করে।
‘জুলাই ঘোষণাপত্র’-এ ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র কাঠামোর রূপরেখা তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের জনগণ একটি সুশাসনভিত্তিক রাষ্ট্র, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন, বৈষম্যহীন সমাজ, মানবাধিকারের নিশ্চয়তা এবং দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন চায়। একই সঙ্গে পরিবেশবান্ধব ও জলবায়ু সহনশীল উন্নয়ন কৌশলের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অধিকার সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। ঘোষণাপত্রে দাবি করা হয়, ফ্যাসিবাদবিরোধী এই লড়াইয়ের শহীদদের ‘জাতীয় বীর’ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং আহত ও নিপীড়িতদের পূর্ণ আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
সবশেষে বলা হয়, এই ঘোষণা শুধু একটি রাজনৈতিক দলিল নয়—এটি একটি গণআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। ভবিষ্যতে নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার যেন এই ঘোষণাপত্রকে নতুন সংস্কারকৃত সংবিধানের অংশ হিসেবে যুক্ত করে, এটাই দেশের জনগণের প্রত্যাশা।
- বাংলাদেশিদের জন্য চালু হলো নতুন ভিসা
- ক্লাব থেকে সাবেক সেনাপ্রধানের মরদেহ উদ্ধার
- এশিয়া কাপ ২০২৫: বাংলাদেশের প্রাথমিক দল ঘোষণা, বাদ পড়লেন যারা
- জিম করতে গিয়ে ভারতীয় ক্রিকেটারের মৃত্যু, শোকস্তব্ধ ক্রিকেট জগৎ
- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি নিয়ে সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত
- ব্রেকিং নিউজ : দেশের সব ব্যাংকে ছুটি ঘোষণা
- হার্টের রিংয়ে রেকর্ড দাম কমালো সরকার, সর্বোচ্চ কমেছে ৮৮ হাজার টাকা
- এশিয়া কাপে বাংলাদেশের অধিনায়কের নাম ঘোষণা, দলে রয়েছে বড় চমক
- আগামী ১০ তারিখ থেকে ভারতীয় ভিসা ইস্যুতে আসছে বড় পরিবর্তন
- বেড়েছে আজকের সৌদি রিয়ালের রেট, জেনেনিন আজকের রেট
- ব্রাজিলে অবিশ্বাস্য রেকর্ড গড়লেন নেইমার
- আবার রাজপথে বিএনপি! দেশজুড়ে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
- নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সময়সূচি ঘোষণা করলো বিসিবি
- আজকের সোনা ও রুপার দাম জেনেনিন
- ছক্কার রেকর্ড গড়লেন সাব্বির রহমান