নিজস্ব প্রতিবেদক : ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে—এই ঘোষণা দিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ঘোষণার পর থেকেই সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। কেউ বলছেন, এটি পরিকল্পিত সিদ্ধান্ত, কেউবা আবার সন্দেহ প্রকাশ করছেন ড. ইউনূসের উদ্দেশ্য নিয়েই।

এই বিতর্কের মাঝেই এবার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। রোববার (৯ জুন) রাতে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি পরিষ্কার করলেন—কেন এপ্রিল মাসকেই বেছে নেওয়া হয়েছে নির্বাচনের সময় হিসেবে।

নির্বাচন পিছিয়ে এপ্রিল: কী বললেন প্রেস সচিব?প্রেস সচিব বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা সবদিক বিবেচনা করেই এপ্রিলের প্রথমার্ধকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য চূড়ান্ত করেছেন। তার এই সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি—সংস্কার, বিচার (ট্রায়াল) এবং নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি।”

সংস্কার প্রক্রিয়া:তিনি জানান, “ইতোমধ্যে ১২ থেকে ১৫টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। এসব কমিশনের রিপোর্ট আসছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এসব নিয়ে আলোচনা চলছে। সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে এই সংস্কার অত্যন্ত জরুরি।”

বিচার ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা:“জুলাই-আগস্টে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের বিচার করা এখন সময়ের দাবি। শিশুদের প্রাণও ঝরেছে সেই সহিংসতায়। এসব অপরাধের সঠিক ট্রায়াল হওয়া চাই, তবে সেটা আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে, নিরপেক্ষভাবে।”

নির্বাচনের নিরপেক্ষ আয়োজন:প্রেস সচিব জানান, “একটি ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার নির্বাচন আয়োজনের জন্য সময় দরকার। নির্বাচনের প্রস্তুতি, অবকাঠামো, নিরাপত্তা এবং রাজনৈতিক সমঝোতা—সব মিলিয়ে এপ্রিলের প্রথমার্ধ সবচেয়ে উপযুক্ত সময় বলেই মনে করেছেন প্রধান উপদেষ্টা।”

আবহাওয়া ইস্যুতে কী বললেন?বিএনপি ও কয়েকটি রাজনৈতিক দল অভিযোগ করেছে যে, এপ্রিলের প্রচণ্ড গরম এবং কালবৈশাখীর ঝুঁকি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে। এই বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন:

“আমরা আবহাওয়াবিদদের সঙ্গে কথা বলেছি। এপ্রিলের প্রথম ১০ দিন তুলনামূলকভাবে সহনীয় থাকে। কালবৈশাখীর ঝুঁকিও থাকে দ্বিতীয়ার্ধে, বৈশাখ মাসে। তাই প্রথমার্ধটা নির্বাচন আয়োজনের জন্য একদম ‘ফ্যান্টাস্টিক টাইম’।”

বিশ্লেষণড. মুহাম্মদ ইউনূসের এই সময়সূচি নিয়ে রাজনৈতিক মতানৈক্য থাকলেও প্রেস সচিবের ব্যাখ্যায় স্পষ্ট, সরকার একটি কার্যকর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য পর্যাপ্ত সময় ও প্রস্তুতি নিতে চাচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হয় কিনা।

দেশের রাজনীতি ও নির্বাচনী খবর জানতে নিয়মিত ভিজিট করুন: www.sportshour24.com