হঠাৎ কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ
পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়ে ব্যাট ও বলের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের জন্য মেহেদি হাসান মিরাজকে ম্যান অফ দ্য সিরিজের পুরস্কার দেওয়া হয়। কিন্তু মাঠের বাইরে মিরাজের আরেকটি চমৎকার কাজ সবার নজর কেড়েছে। সিরিজ সেরার পুরস্কারের অর্থ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত রিকশাচালকের পরিবারকে দেওয়ার ঘোষণা দেন এই অলরাউন্ডার।
পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ চলাকালীন মিরাজ রিকশাচালকের পরিবারের জন্য কিছু করার সিদ্ধান্ত নেন। প্রথম টেস্টের শেষে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও তার সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করেছে। ভিডিওতে নিহত রিকশাচালকের ছোট ছেলে কাঁদতে কাঁদতে বলছে, 'আমার বাবা নামাজ পড়তে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন।' রক্ত দেখলাম। আমার বাবা আর আসবে না।
মিরাজ বলেন, ওই দৃশ্য এবং ছেলেটির কথা তার মনে গভীর ছাপ ফেলে। তখনই তিনি রিকশাচালকের পরিবারের জন্য কিছু করার শপথ নেন। তখনও ভাবেনি সে সিরিজে সেরা হবে।
মিরাজের অভিনয় ছিল মনোমুগ্ধকর। দুই টেস্ট ম্যাচে তিনি ব্যাট হাতে ১৫৫ রান করেন এবং বল হাতে ১০ উইকেট নেন। দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে, তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লিটন দাসের সাথে ১৬৫ রানের একটি অসাধারণ জুটি গড়েন, যা দলকে একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করতে সাহায্য করেছিল। তিনি বোলিংয়েও দুর্দান্ত ভূমিকা পালন করেছিলেন, প্রথম ইনিংসে ৬১ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন এবং পাকিস্তানকে ২৭৪ রানে অলআউট করেছিলেন।
পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য শেষে মিরাজ বাংলায় কিছু বলতে চেয়েছিলেন। তখনই তিনি সিরিজসেরার প্রাইজমানি রিকশাচালকের পরিবারকে উৎসর্গ করার ঘোষণা দেন। মিরাজ বলেন, ‘আমি আলহামদুলিল্লাহ, প্রথমবারের মতো দেশের বাইরে সিরিজসেরা হয়েছি। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত এক রিকশাচালক পরে মারা গেছেন। এই পুরস্কার তার পরিবারকে দিতে চাই।’
মিরাজের এই মানবিক উদ্যোগ ক্রীড়াঙ্গনে যেমন প্রশংসিত হচ্ছে, তেমনি পুরো জাতির কাছেও এক অনুকরণীয় উদাহরণ হয়ে থাকবে।