আর কোন পথ না থাকায় তাই ‘যোদ্ধা’ হয়েছেন সেঞ্চুরিয়ান হুদা
আর এই সুযোগের পূর্ণ ব্যবহারই করলেন ডানহাতি এ টপঅর্ডার ব্যাটার। সিরিজের প্রথম ম্যাচে রুতুরাজ গাইকদের চোটের কারণে ইনিংস সূচনা করতে ডাকা হয় হুদাকে। সেদিন ২৯ বলে ৪৭ রানের ইনিংস খেলে নিশ্চিত করেন দলের সহজ জয়।
পরের ম্যাচে ছাড়িয়ে যান নিজেকে। মঙ্গলবার রাতে ডাবলিনের মালাহিডে হুদা খেলেছেন ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ১০৪ রানের ইনিংস। তার ৫৭ বলে নয় চার ও ছয় ছয়ের মারে সাজানো ইনিংসেই ২২৫ রানের সংগ্রহ পায় ভারত। দেশটির মাত্র চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি করেছেন হুদা।
অবশ্য এমন পারফরম্যান্সের পরও যে পরের সিরিজে দলে থাকবেন তিনি- তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। কেননা এরই মধ্যে ভারতের টপঅর্ডারে রয়েছে রোহিত শর্মা, লোকেশ রাহুল, বিরাট কোহলি, ইশান কিশান, রুতুরাজদের মতো নিয়মিত সব মুখ। তাদের সরিয়ে দলে থাকা বেশ কঠিনই বটে।
সেটি জানা রয়েছে হুদার নিজেরও। তাই সিরিজের প্রথম ম্যাচে ওপেনিং করতে বলা হলে নির্দ্বিধায় সে দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নেন ২৭ বছর বয়সী এ মারকুটে ব্যাটার। তার মতে, সামনে আর কোনো পথ খোলা না থাকলে যোদ্ধা হয়ে একাই লড়ে যেতে হয়।
সেঞ্চুরি হাঁকানোর পর ম্যাচ শেষে হুদা বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কখনও ওপেন করিনি আমি। তবে টপ অর্ডার ব্যাটার হিসেবে যেকোনো চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। এর বাইরে আপনার সামনে কোনো পথ নেই। আর যখন কোনো পথ নেই, তখন আপনি কেন যোদ্ধা হয়ে আগাবেন না?’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমি এভাবে ভাবি, এভাবেই এগোতে চাই। এটি করতে পারায় আমি খুশি। সত্যি বলতে আমি নার্ভাস ছিলাম। তবে আমি সৌভাগ্যবান যে অপরপ্রান্তে খুব ভালো সঙ্গী পেয়েছি। তারা আমাকে ভালোভাবে গাইড করেছে এবং চাপ দূর করে দিয়েছে।’
দুই ম্যাচে ১৫১ গড়ে ১৫১ রান করে ম্যাচসেরার পুরস্কারও জিতেছেন হুদা। কিন্তু পরের সিরিজে সুযোগ পাওয়া নিয়েও রয়েছে অনিশ্চয়তা। এ বিষয় নিয়ে ভাবতে রাজি নন তিনি। বরং যখন যে সুযোগ আসবে, সেগুলো যথাযথ কাজে লাগিয়ে নিজের কর্তব্য পালনের দিকেই মনোযোগ হুদার।
তিনি বলেছেন, ‘ক্রিকেটার হিসেবে সম্প্রতি আমি যে বিষয়টা শিখেছি, খুব বেশি দূরের কথা চিন্তা করা যাবে না। যতগুলো সিরিজই হোক না কেন, ভাবতে হবে প্রতিটি ম্যাচ নিয়ে। যদি আমার প্রক্রিয়া ঠিক থাকে, মানসিকভাবে ঠিক জায়গায় থাকি, তাহলে অবশ্যই রান করবো। বিষয়গুলো সহজ রাখতে চেষ্টা করি, বর্তমানে বাস করি।’
দলে জায়গা পাওয়ার প্রতিযোগিতার ব্যাপারে হুদার ভাষ্য, ‘সত্য বলতে ভারতীয় দলে জায়গা পাওয়া এবং সেখানে টিকে থাকা অনেক কঠিন। আবার একইসঙ্গে আপনি যখন ভারতের জার্সি গায়ে দেবেন, তখন নিজের কথা ভাবেন না, শুধুমাত্র দলের চিন্তাই মাথায় থাকে।’
‘তখন মাঠে একটা ভাবনাই কাজ করে, এই মুহূর্তে আমি কীভাবে দলের জন্য অবদান রাখতে পারিনি। আমি এর বাইরে বেশি কিছু ভাবি না। সবকিছু সহজ রাখতে চেষ্টা করি। হ্যাঁ এটা আমার জন্য অনেক বেশি গর্বের যে ভারতের হয়ে খেলছি। রান করছি কি না, তা বড় বিষয় নয়।’