| ঢাকা, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১

রজমানে জুমার নামাজের গুরুত্ব, জেনেনিন ফরজ ও সুন্নত নামাজের নিয়ম ও নিয়ত

২০২৫ মার্চ ০৭ ১২:১৫:৫৮
রজমানে জুমার নামাজের গুরুত্ব, জেনেনিন ফরজ ও সুন্নত নামাজের নিয়ম ও নিয়ত

নিজস্ব প্রতিবেদক: পবিত্র মাহে রমজান শুরু হয়েছে, যা মুসলমানদের জন্য অফুরন্ত রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের প্রতীক। এ মাসে মুসলিমরা আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় রোজা পালন করেন এবং ইবাদতে মগ্ন থাকেন। রমজানের প্রতিটি মুহূর্ত বরকতময় হলেও, জুমার দিনগুলো এক অনন্য মর্যাদা বহন করে।

রমজান মাসে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পাশাপাশি তারাবি, তাহাজ্জুদ, সুন্নত ও নফল নামাজের গুরুত্ব অপরিসীম। তবে প্রতিটি শুক্রবারের জুমার নামাজ বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে, জুমার দিন সপ্তাহের সর্বোত্তম ও বরকতময় দিন হিসেবে বিবেচিত। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এ দিনের গুরুত্ব অত্যন্ত স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

জুমার দিনের বিশেষত্ব ও ফজিলত

আল্লাহতায়ালা জুমার দিনকে অন্যান্য দিনের চেয়ে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। এটি এমন একটি দিন, যেদিন মানবজাতির আদি পিতা হজরত আদম (আ.) সৃষ্টি হয়েছিলেন এবং জান্নাতে প্রবেশ করেছিলেন। সপ্তাহের সাত দিনের মধ্যে জুমা বিশেষভাবে বরকতময়, কারণ এ দিনে মুসলমানরা একত্র হয়ে আল্লাহর ইবাদত করেন।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “সপ্তাহের সর্বশ্রেষ্ঠ ও বরকতময় দিন হলো জুমা।” (মুসলিম শরিফ)

পবিত্র কুরআনে জুমার দিনের গুরুত্ব

পবিত্র কুরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন:

“মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর ইবাদতের জন্য দ্রুত যাও এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটি তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বোঝ।” (সুরা জুমুআ: ৯)

এই আয়াত থেকে প্রতীয়মান হয় যে, জুমার নামাজ মুসলমানদের জন্য ফরজ এবং তা যথাযথভাবে আদায় করা অপরিহার্য।

হাদিসে জুমার নামাজের গুরুত্ব

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,

“যে ব্যক্তি জুমার দিনে জানাবত গোসল করে ও নামাজের জন্য আগমণ করে, সে যেন একটি উট কুরবানি করল। যে ব্যক্তি দ্বিতীয় পর্যায়ে আসে, সে যেন একটি গাভী কুরবানি করল। তৃতীয় পর্যায়ে আগমণকারী যেন একটি শিংবিশিষ্ট দুম্বা কুরবানি করল। চতুর্থ পর্যায়ে আগমণকারী যেন একটি মুরগি কুরবানি করল। পঞ্চম পর্যায়ে আগমণকারী যেন একটি ডিম কুরবানি করল।” (বুখারি, মুসলিম)

হাদিসে আরও বলা হয়েছে, জুমার দিনকে সাপ্তাহিক ঈদের দিন বলা হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,

“জুমা তোমাদের পারস্পরিক সাক্ষাতের দিন এবং সাপ্তাহিক ঈদের দিন।” (বুখারি, আহমদ)

এছাড়াও, জুমার রাতে বনি আদমের সব আমল আল্লাহতায়ালার দরবারে পেশ করা হয়। ফলে এই দিনের ইবাদত ও দোয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

জুমার দিনের করণীয় আমল

রমজানের জুমার দিনগুলোতে বিশেষ কিছু আমল করা উচিত, যা ইবাদতকে আরও সার্থক ও অর্থবহ করে তুলবে:

গোসল ও পরিচ্ছন্নতা: যথাযথভাবে গোসল করে সুগন্ধি ব্যবহার করা এবং পরিচ্ছন্ন পোশাক পরা।

প্রথম কাতারে নামাজ: মসজিদে আগে গিয়ে প্রথম কাতারে নামাজ আদায়ের চেষ্টা করা।

খুতবা শোনা: মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনা ও নামাজে একাগ্র থাকা।

কুরআন তেলাওয়াত ও দোয়া: কুরআন পাঠ করা এবং দোয়ার মাধ্যমে নিজের ও সমগ্র মানবজাতির জন্য কল্যাণ কামনা করা।

দরুদ পাঠ: অধিক পরিমাণে দরুদ শরিফ পড়া ও আল্লাহর জিকিরে মগ্ন থাকা।

জুমার নামাজের নিয়ত:

চার রাকাত কাবলাল জুমার নিয়ত:

বাংলা উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা আরবায়া রাকাআতি ছালাতি কাব্‌লাল জুমুয়াতি, সুন্নাতি রাসূলিল্লাহি তয়ালা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল্‌ ক্বাবাতিশ্‌ শারীফাতি আল্লাহু আক্‌বার।অর্থ: আমি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কেবলামুখী হয়ে চার রাকাত কাবলাল জুমার সুন্নত নামাজের নিয়ত করলাম। আল্লাহু আকবর।

জুমার দুই রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ত:

বাংলা উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন্‌ উসকিতা আন্‌ জিম্মাতী ফারদুজ্জহ্‌রি, বি-আদায়ি রাকয়াতাই ছালাতিল্‌ জুমুয়াতি, ফারজুল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল্‌ ক্বাবাতিশ্‌ শারীফাতি আল্লাহু আক্‌বার।অর্থ: আমি কেবলামুখী হয়ে যোহরের ফরজ নামাজের পরিবর্তে জুমার দুই রাকাত ফরজ নামাজ আদায়ের নিয়ত করছি। আল্লাহু আকবর।

চার রাকাত বাদ'ল জুমার নিয়ত:

বাংলা উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা আরবায়া রাকাআতি ছালাতি বাদাল জুমুয়াতি, সুন্নাতি রাসূলিল্লাহি তয়ালা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল্‌ ক্বাবাতিশ্‌ শারীফাতি আল্লাহু আক্‌বার।

অর্থ: আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে কেবলামুখী হয়ে চার রাকাত বাদ'ল জুম্মা সুন্নত নামাজের নিয়ত করছি। আল্লাহু আকবর।

জুমার নামাজ ফরজ নয় এমন ব্যক্তি:

জুমার নামাজ সমস্ত বালেগ পুরুষের উপর ফরজ। তবে যারা না-বালেগ, তাদের উপর যেমন অন্যান্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ নয়, তেমনি জুমার নামাজও ফরজ নয়। মুকিম (যারা বাড়িতে থাকেন) ব্যক্তির জন্যও জুমার নামাজ ফরজ নয়। এছাড়া, যদি কেউ শারীরিক বা অন্যান্য কোনো ওজরের কারণে জামাতে উপস্থিত হতে না পারেন, তবে তাদের উপরও জুমার নামাজ ফরজ নয়। তবে যে ব্যক্তি কারো ক্রীতদাস নয়, তার উপর অবশ্যই জুমার নামাজ ফরজ।

জুমার দিন বিশেষ সুন্নত:

জুমার দিন কিছু সুন্নত রয়েছে, যা পালন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সুন্নতগুলির মধ্যে রয়েছে, ভালো বা নতুন জামা পরিধান করা, খোশবু ব্যবহার করা, হাত-পায়ের নখ কাটা ইত্যাদি। এগুলি জুমার দিন একটি মুসলমানের শিষ্টাচারের অংশ হিসেবে পরিগণিত হয় এবং আল্লাহর নিকট সন্তুষ্টি লাভের উপায় হিসেবে পরিচিত।

তবে, মনে রাখতে হবে, যারা ওজরের কারণে জামায়াতে উপস্থিত হতে পারেন না, তাদের জন্য জুমার নামাজের দায়িত্ব শিথিল করা হয়েছে। এর মাধ্যমে, ইসলাম মানুষের সুবিধা ও অসুবিধা উভয়কেই সম্মান করে, যা এর নমনীয়তা ও মানবিকতার পরিচায়ক।

আব্দুর রহিম/

ক্রিকেট

আইপিএল ২০২৫: কলকাতা নাইট রাইডার্সের সেরা একাদশ ঘোষণা

আইপিএল ২০২৫: কলকাতা নাইট রাইডার্সের সেরা একাদশ ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক: কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর) আগামী ২২ মার্চ ইডেন গার্ডেন্সে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি)-এর ...

যাকে ধর্ম পরিবর্তন করতে বলেছিলেন আফ্রিদি

যাকে ধর্ম পরিবর্তন করতে বলেছিলেন আফ্রিদি

পাকিস্তান ক্রিকেটের এক আলোচিত চরিত্র দানিশ কানেরিয়া। পাকিস্তানের জাতীয় ক্রিকেট দলে খেলা হাতেগোনা কয়েকজন হিন্দু ...

ফুটবল

বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব : বাংলাদেশের সকল ম্যাচের সময়সূচি প্রকাশ

বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব : বাংলাদেশের সকল ম্যাচের সময়সূচি প্রকাশ

আগামী নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব শুরু হতে যাচ্ছে ৯ এপ্রিল থেকে, পাকিস্তানের লাহোরে। বাংলাদেশ নারী ...

চরম উত্তেজনায় শেষ হলো ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ফুটবল ম্যাচ

চরম উত্তেজনায় শেষ হলো ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ফুটবল ম্যাচ

লাতিন আমেরিকার ফুটবলে শিরোপা লড়াই মানেই ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার উত্তেজনাপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা। কনমেবল অনূর্ধ্ব-২০ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের এবারের আসরেও ...



রে