ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় গত ১৪ ডিসেম্বর রাতে একটি মাহফিলে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশ গিয়াস উদ্দিন তাহেরীকে গ্রেপ্তার করতে গেলে তাহেরীর ভক্তরা পুলিশের গাড়িতে হামলা চালিয়ে তিনটি গাড়ির গ্লাস ভাঙচুর করে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে মাহফিল থেকে পালিয়ে যান গিয়াস উদ্দিন তাহেরী।

এদিন বিজয়নগরের নাজিরাবাড়ী গ্রামে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত নামক একটি স্থানীয় সংগঠন মাহফিলের আয়োজন করে। তবে মাহফিলের কোনো অনুমতি ছিল না, যার কারণে পুলিশের একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পুলিশকে দেখে উত্তেজিত হয়ে ওঠে মাহফিলের পরিবেশ, এবং গিয়াস উদ্দিন তাহেরীকে তার ভক্তরা পাশের একটি বাড়িতে নিয়ে যান। পরবর্তীতে তিনি বাড়ির পেছনের বিল দিয়ে ছদ্মবেশে পালিয়ে যান।

তাহেরী পালিয়ে যাওয়ার পর উত্তেজিত জনতা পুলিশের ব্যবহৃত তিনটি গাড়ির গ্লাস ভাঙচুর করে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় এসআই ফারুক আহমেদ, এএসআই প্রদীপ দাসসহ ছয়জন পুলিশ সদস্য আহত হন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ছয়জনকে আটক করে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন বয়সী ছয়জন, যারা হামলার সাথে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ ঘটনায় ১২ ডিসেম্বর আখাউড়ার মাহফিলে পুলিশের ওপর হামলার পর গিয়াস উদ্দিন তাহেরীর বিরুদ্ধে আখাউড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় তাহেরীকে প্রধান আসামি করা হয়েছে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

বিজয়নগর থানা পুলিশ জানায়, আটককৃতরা হলেন উপজেলার চর ইসলামপুর মধ্যপাড়ার ওমর আলী (২৯), হাকিম মিয়া (৩৭), সেলিম মিয়া (২৪), শাহানুর (৩৫), মিজান মিয়া, এবং মোশাররফ মিয়া। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাজে বাধা প্রদান, গাড়ি ভাঙচুর এবং পরিবেশ অস্থিতিশীল করার অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।

বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রওশন আলী জানান, নাজিরাবাড়ীর মাহফিলের অনুমতি ছিল না। পুলিশের উপস্থিতির পর মাহফিলের পরিবেশ উত্তেজিত হয়ে ওঠে এবং উচ্ছৃঙ্খল জনতা পুলিশের গাড়িতে হামলা চালায়। এ ঘটনায় ছয়জনকে আটক করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গিয়াস উদ্দিন তাহেরীর বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলো এবং তার পালিয়ে যাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে পুলিশের নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে।