বাংলাদেশের একজন ক্রিকেটারের ভয়ে যে পথে হাটছে ভারত
প্রতিপক্ষ দলের শক্তি ও দুর্বলতা নিয়ে কাজ করার অভ্যাস ক্রিকেটে নতুন নয়। বিশেষ করে সফল প্রশিক্ষকদের এ নিয়ে ব্যাপক গবেষণা করতে দেখা যায়। বাংলাদেশের বিপক্ষে আসন্ন টেস্ট সিরিজেও তাই করছেন ভারতীয় কোচ গৌতম গম্ভীর। দেশটির মিডিয়ায় বলা হচ্ছে যে রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিন সব শর্ত মাথায় রেখে এবং স্পিন-পেসারদের মোকাবেলা করার জন্য দুই ধরণের পিচে অনুশীলন করছেন।
সম্প্রতি পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছে বাংলাদেশের ফাস্ট বোলাররা। যার মধ্যে শুধু নাহিদ রানা ভারতীয়দের কাছে অজানা। তাই সিরিজে তার বোলিং অ্যাকশনে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা এড়াতে তিনি তার উচ্চতার একজন ফাস্ট বোলারকে অনুশীলনের জন্য ডাকেন। চারদিনের এই ক্যাম্পে অংশ নিচ্ছেন পাঞ্জাবের ফাস্ট বোলার গুরনূর ব্রার।
ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের এই ফাস্ট বোলার রোহিত-কোহলি ও জাইলসের হয়ে নেট বোলারের ভূমিকা পালন করছেন। গুরনূর ইতিমধ্যেই প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে পাঁচটি ম্যাচ খেলেছেন এবং আইপিএলের গত মৌসুমে পাঞ্জাব কিংস দলের অংশ ছিলেন। তবে বর্তমানে জাতীয় দলের ক্যাম্পে থাকার মূল কারণ তার উচ্চতা (৬ ফুট ৪.৫ ইঞ্চি)। দেশের অনেক মিডিয়া প্রতিষ্ঠানও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেছে। যেখানে এই ২৪ বছর বয়সী খেলোয়াড়ের পেস এবং বাউন্স বজায় রেখে বল করার ক্ষমতাও উল্লেখ করা হয়েছে। যা নাহিদ রানার বল মোকাবেলা করতে সাহায্য করবে স্বাগতিক ব্যাটসম্যানদের।
২১ বছর বয়সী টাইগার পেসার নাহিদ ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি লম্বা। ফলে অনেক উঁচু থেকে বল ছাড়ার প্রবণতা থাকায় ব্যাটসম্যানদের কিছুটা সমস্যায় পড়তে হয়। পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে পাঁচ উইকেট নেন তিনি। উচ্চতর রিলিজের কারণে তাদের বলের দৈর্ঘ্য এবং বাউন্সও আলাদা। ভারত এটা মোকাবেলা করতে চায়। এই তরুণ ফাস্ট বোলার তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত ৩ টেস্ট ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়েছেন।
১৯ সেপ্টেম্বর চেন্নাইয়ে প্রথম টেস্ট দিয়ে শুরু হবে বাংলাদেশ-ভারত সিরিজ। এখানকার লাল পিচ সাধারণত স্পিন স্টাইলের হয়, তবে চেন্নাইয়ের পিচের চরিত্র এবার বদলে যেতে পারে। এম চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে ঝড়ো উইকেটের পরিবর্তে, জসপ্রিত বুমরাহ এবং মোহাম্মদ সিরাজের কথা মাথায় রেখে একটি পিচ তৈরি করা যেতে পারে, যেখানে পেসার এবং স্পিনার উভয়ই উপকৃত হবে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের নাহিদও হতে পারে বিপজ্জনক। তাকে মোকাবিলা করার জন্য গুরনূরকে আনা হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ সিরিজ থেকেই ভারতীয় দলের মূল দায়িত্ব শুরু করবেন বোলিং কোচ মরনে মরকেল। দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ফাস্ট বোলারের নেতৃত্বে ভালো পারফর্ম করতে চান তরুণ ফাস্ট বোলার আকাশ দ্বীপ ও যশ দয়াল। মরকেল তার বোলিং প্রান্তে দাঁড়িয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিচ্ছেন। তবে অভিজ্ঞ বুমরাহ-সিরাজ এই কোচের কাজ সহজ করে দিতে পারেন। তারপর, ভারতের অভিজ্ঞ স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজা এবং কুলদীপ যাদবের সাথে মুম্বাইয়ের অফস্পিনার হিমাংশু সিংকেও নেট বোলার হিসেবে রাখা হয়েছে। এছাড়া তামিলনাড়ুর স্লো বাঁহাতি স্পিনার এস অজিত রাম রয়েছেন।
ভারতের বিপক্ষে দুই টেস্ট ও তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল আজ রওনা দিয়েছে। পাকিস্তান সিরিজের পর ভারতেও বড় কিছু করাই তার লক্ষ্য। রোহিতের বিরুদ্ধে ১২টি টেস্ট খেলেও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ভারত ১১ ব্যবধানে জিতেছে, বাকি একটি ম্যাচ বৃষ্টির কারণে ড্র হয়েছে।