| ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২

শুভ জন্মদিন মাশরাফী

ক্রিকেট ডেস্ক . স্পোর্টসআওয়ার২৪
২০২৩ অক্টোবর ০৫ ১০:৩৬:৪২
শুভ জন্মদিন মাশরাফী

মাশরাফী বিন মুর্তদা শৈশব থেকেই মেধাবী ছিলেন। শুধু তাই নয়, ক্রিকেটের প্রতিও ছিল তার বিশেষ অনুরাগ। তাতে লেগে থাকতেই জাতীয় দলে সুযোগ পান। ম্যাস বাংলাদেশকে অনেক জয়ের পথে নিয়ে গেছেন। একপর্যায়ে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল অধিনায়কের খেতাবও অর্জন করেন এই তারকা। বর্তমানে তিনি সংসদ সদস্যও। আজ তার চল্লিশতম জন্মদিন। শুভ জন্মদিন নরয়েল এক্সপ্রেস।

মোশাররফ 1983 সালের 5 অক্টোবর নড়াইলের চিত্রা নদীর তীরে মহেশকুলায় তাঁর নানার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। মাতামহের ডাকনাম কৌশিক। নড়াইলে তিনি এ নামেই পরিচিত। তার পিতার নাম গোলাম মুর্তজা স্বপন। মায়ের নাম হামিদা মুর্তদা বলাকা। দুই ভাইয়ের মধ্যে মোশাররফ বড়। এই দিনটি তার একমাত্র ছেলে সাহিলের জন্মদিনও চিহ্নিত করে।

ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলার প্রতি তার প্রবল আগ্রহ ছিল। সারাদিন স্কুলের পাশের মাঠে ঘুরে বেড়ান। বড়দের ক্রিকেট খেলা দেখছিলেন। তাই ক্রিকেটের প্রতি তার প্রবল টান। ক্রিকেটের প্রেমে পড়ার পর তিনি ব্যাটসম্যান হতে চেয়েছিলেন। জাতীয় দলের এই ক্রিকেটার বহু ম্যাচে ব্যাট হাতে নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন।

নড়াইলের ক্রিকেটার ও ক্রীড়া সংগঠক শরীফ মোহাম্মদ হোসেন উঠতি তরুণদের যত্ন নিতেন। মূলত তার হাত ধরেই নব্বইয়ের দশকে ক্রিকেটার হওয়ার পথে পা বাড়ান ম্যাশ। মাত্র ১১ বছর বয়সেই ম্যাশকে নিজের দল নড়াইল ক্রিকেট ক্লাবে খেলার সুযোগ করে দেন শরীফ। তখন থেকেই গতি দিয়ে সবার নজর কেড়ে নিতে থাকেন মাশরাফি।

১৯৯১ সালে মাগুরায় বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) প্রতিভা অন্বেষণ (ট্যালেন্ট হান্ট) ক্যাম্প হয়। সে সময় বিকেএসপির কোচ বাপ্পির সান্নিধ্যে এসে বোলিংয়ের অনেক মৌলিক বিষয়ের সঙ্গে পরিচিত হন মাশরাফী। পরের বছর খুলনায় খেলার জন্য আমন্ত্রণ পান ম্যাশ। খুলনায় গতি ও সুইং দিয়ে রীতিমতো হইচই ফেলে দেন এই পেসার।

যার সুবাদে মাশরাফী সুযোগ পেয়ে যান খুলনা বিভাগীয় অনূর্ধ্ব-১৭ দলে খেলার। অনূর্ধ্ব-১৯ দলেও ডাক পেয়ে যান দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের বলে। যুব দলে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখানোয় ২০০১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জাতীয় দলে ডাক পান ডানহাতি এই পেসার। জাতীয় পর্যায়ে সিনিয়র ডিভিশন লিগ না খেলে সরাসরি জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ায় সে সময় তাকে নিয়ে প্রচুর সমালোচনা হয়।

২০০১ সালের নভেম্বরে মাত্র ১৮ বছর বয়সে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল মাশরাফীর। ৪ উইকেট শিকার করে আলাদাভাবে নিজের জাত চিনিয়েছিলেন নড়াইল এক্সপ্রেস। জিম্বাবুয়ের একই সফরের ওয়ানডে সিরিজে রঙিন পোশাকেও পথচলা শুরু হয়ে যায় তার। অভিষেক ম্যাচে আলাদা করে নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দেয়া মাশরাফী পুরো ক্যারিয়ার জুড়েই হয়ে থেকেছেন সবার চেয়ে আলাদা, নিজের জায়গা করেছেন সবার চেয়ে ওপরে।

ঘাত-প্রতিঘাতের ১৯ বছরের ক্যারিয়ারে টেস্ট খেলতে পেরেছেন মাত্র ৩৬টি। যার সবশেষটি আবার ২০০৯ সালে। ইনজুরির কারণে এরপর আর সাদা পোশাকে খেলতে পারেননি তিনি। ইনজুরির কারণে টেস্ট ক্যারিয়ার দীর্ঘায়িত হয়নি, তবে ওয়ানডেতে ম্যাচ কিংবা উইকেটসংখ্যায় বাংলাদেশের উপরের সারিতেই থাকবেন তিনি। অনাকাঙ্ক্ষিত বাধায় থামতে হয়েছে বারবার, তবে দুর্দান্তভাবে ফিরেছেন প্রতিবার।

বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা অধিনায়ক মাশরাফী। তর্কসাপেক্ষে বা পরিসংখ্যানের বিচারে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তিনিই দেশের সর্বকালের সেরা অধিনায়ক। ইনজুরি বারবার বাদ সাধতে থাকে ম্যাশের ২২ গজের পথচলায়। হার না মেনে ২০২০ সাল পর্যন্ত চালিয়ে যান অধিনায়কত্ব। ২০২০ সালের জিম্বাবুয়ে সিরিজের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটে তার অধ্যায়ের।

পঞ্চাশ ওভারের এই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের পক্ষে ২২০ ওয়ানডে খেলেছেন মাশরাফী, শিকার করেছেন দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৭০ উইকেট। ২০০৬ সালে এক ম্যাচে মাত্র ২৬ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। যা এখনও পর্যন্ত ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পক্ষে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড। ব্যাট হাতে এই ফরম্যাটে তার সংগ্রহ ১৭৮৭ রান।

২০০৬ সালে দেশের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ দিয়েই কুড়ি ওভারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যাত্রা শুরু হয় মাশরাফির। আনুষ্ঠানিকভাবে এই ফরম্যাট থেকে বিদায় নিয়েছেন ২০১৭ সালের এপ্রিলে। মাঝের সময়ে ৫৪ ম্যাচে ৪২ উইকেট শিকারের পাশাপাশি ১৩৬ স্ট্রাইকরেটে করেছেন ৩৭৭ রান।

সবশেষ বিশ্বকাপে ভালো করতে না পারায়, ক্রিকেটভক্তদের একাংশ হয়তো নাখোশ মাশরাফীর ওপর। তবে প্রায় ২০ বছরের খেলোয়াড়ি জীবনে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে যা দিয়েছেন, তা তাকে পরিণত করেছে কোটি হৃদয়ের ভালোবাসায়।

২০১৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পুনরায় অধিনায়কত্ব পেয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। তার অধীনে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছে টাইগাররা, ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে পৌঁছেছে সেমিফাইনালে আর ২০১৬ সালের এশিয়া কাপে হয়েছিল রানার্সআপ।

মাশরাফীর অধীনে বাংলাদেশ দল ৮৮টি ওয়ানডে খেলে জিতেছে ৫০টিতে, যা কি না দেশের ইতিহাসে যেকোনো অধিনায়কদের মধ্যে সর্বোচ্চ। টি-টোয়েন্টিতে ২৮ ম্যাচে ১০ জয় নিয়েও বাংলাদেশের অন্যান্য অধিনায়কদের চেয়ে ওপরেই অবস্থান করছেন তিনি।

ক্রিকেটকে আনুষ্ঠানিক বিদায় জানানোর আগেই যোগ দিয়েছেন সক্রিয় রাজনীতিতে, লড়েছেন সবশেষ জাতীয় নির্বাচনে, সেখানে নিতে হয়েছেন নিজ জন্মস্থানের এলাকার সংসদ সদস্য। নতুন এ পরিচয়ে সময় দিতে গিয়ে এখন ক্রিকেট থেকে খানিক দূরেই রয়েছেন মাশরাফী। তবে দেশের মানুষের কাছে সবসময়ই তার প্রথম পরিচয় লড়াকু এক ক্রিকেটার হিসেবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

ক্রিকেট

চলছে ভারত ও ইংল্যান্ড ম্যাচ : দুর্দান্ত সূচনা ভারতের,দেখেনিন সর্বশেষ স্কোর

চলছে ভারত ও ইংল্যান্ড ম্যাচ : দুর্দান্ত সূচনা ভারতের,দেখেনিন সর্বশেষ স্কোর

নিজস্ব প্রতিবেদক : ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ইংল্যান্ড বনাম ভারতের চতুর্থ টেস্টে টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েও ...

পরপর ২ উইকেট হারালো ভারত, দেখেনিন সর্বশেষ স্কোর

পরপর ২ উইকেট হারালো ভারত, দেখেনিন সর্বশেষ স্কোর

নিজস্ব প্রতিবেদক: ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ ও শেষ টেস্টে দারুণ সূচনা করেছে ...

ফুটবল

ব্যালন ডি’অর জয়ের দৌড়ে এগিয়ে যারা

ব্যালন ডি’অর জয়ের দৌড়ে এগিয়ে যারা

ফুটবল জগতের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ব্যক্তিগত পুরস্কার ব্যালন ডি’অর নিয়ে শুরু হয়ে গেছে হিসাব-নিকাশ। কে পাচ্ছেন ...

রোনালদোকে নিয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কিংবদন্তির মন্তব্য নিয়ে আলোচনার ঝড়

রোনালদোকে নিয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কিংবদন্তির মন্তব্য নিয়ে আলোচনার ঝড়

নিজস্ব প্রতিবেদক : ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে দ্বিতীয় মেয়াদ ছিল ‘একটি ভুল সিদ্ধান্ত’—এমনটাই দাবি করেছেন ...

Scroll to top

রে
Close button