উল্লাস করেছেন আগেই এবং সেই ম্যাচ গুলো হেরেছে ৫ তারকা ক্রিকেটার
১. রবিচন্দ্রন অশ্বিন ( বনাম কর্নাটক,২০১৯ সৈয়দ মুস্তাক আলী ট্রফি )-ঃ ২০১৯ এর ” সৈয়দ মুস্তাক আলী ” ট্রফির ফাইনাল আজীবন মনে থেকে যাবে ভারতীয় স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনের।ফাইনালে কর্নাটকের কাছে এক রানের হারের মুখোমুখি হতে হয়েছিল তামিলনাড়ু’ কে।
ঘরোয়া ক্রিকেটে তামিলনাড়ু এবং কর্নাটকের মধ্যে দ্বৈরথ সম্পর্কে সকলেই ওয়াকিবহাল।দুরন্ত সেই ফাইনালে ম্যাচ জিততে অন্তিম ওভারে ১৩ রান প্রয়োজন তামিলনাড়ুর।ওভারের প্রথম দুই বলে পর পর দুটো বাউন্ডারি মেরে দলের ওপর থেকে চাপ অনেকটাই কমিয়ে আনেন অশ্বিন।এমন কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে এমন দুটো চার মেরে নিজের আবেগকে দমিয়ে রাখতে পারেননি এই তারকা ভারতীয় ক্রিকেটার।স্বাভাবিক ভাবেই তার মধ্যে লক্ষ্য করা যায় উচ্ছ্বাসের বহিঃপ্রকাশ।
ম্যাচ জিততে তামিলনাড়ুর প্রয়োজন চার বলে পাঁচ রান। এমন সময় একটি ডট বল দিলেন কৃষ্ণাপ্পা গৌতম।পরের বলটি সিঙ্গেল।ক্রিজে এবার বিজয় শঙ্কর।তার দু’ রান নেওয়ার চেষ্টা ব্যার্থ করেন কর্নাটক অধিনায়ক মনিশ পান্ডে তার দুরন্ত থ্রোয়ের মধ্যে দিয়ে।ম্যাচ জিততে তামিলনাড়ুর প্রয়োজন তিন রান।ক্রিজে আসলে’ন মুরুগান অশ্বিন।শুধুমাত্র সিঙ্গেল নিলেন তিনি।ক্রিজের অপরপ্রান্তে দাড়িয়ে দলের হার দেখেতে হলো রবি অশ্বিনকে।
২.হার্শেল গিবস ( বনাম অস্ট্রেলিয়া, ১৯৯৯ বিশ্বকাপ )-ঃ ১৯৯৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ব্রিংহামে ” সুপার সিক্স” এর ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল সাউথ আফ্রিকা এবং অস্ট্রেলিয়া।যে ম্যাচের কথা কোনোদিন ভুলতে পারবেনা কোনও ক্রিকেট প্রেমী মানুষ।বিশ্বকাপ ক্রিকেটের যদি সেরা ম্যাচে’ র তালিকা করা হয়,সেই তালিকায় অবশ্যই স্থান পাবে এই ম্যাচ।
সেইদিন ম্যাচের নায়ক ছিলেন প্রোটিয়াস’ দের তারকা ব্যাটসম্যান হার্শেল গিবস।প্রথমে ব্যাট করে তিনি খেলেছিলেন ১৩৪ বলে ১০১ রানের দুরন্ত এক ইনিংস।যদিও অস্ট্রেলিয়া’ র ব্যাটিং করার সময় স্টিভ ওয়া যখন ৫৬ রানে নট আউট।তখন তার একটি ক্যাচ মিস করেন গিবস।যদিও ক্যাচ মিসের বিষয়টি প্রথমে বুঝতে পারেননি গিবস।বরং উল্লাসে তিনি তালুবন্দি বলটিকে আকাশের দিকে ছুড়ে দেয়।যদিও পরবর্তী সময়ে দেখা যায় আউট হননি ওয়া।এবং ম্যাচে পাওয়া এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে জয়ের দিকে নিয়ে যান ওয়া।খেলেন ১১০ বলে ১২০ রানের ইনিংস।প্রসঙ্গত, সেইবছর ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে ফের আরেকবার ক্রিকেটের বিশ্বজয়ের মুকুট দেশে নিয়ে ফেরে “স্টিভস্মিথের দেশ”।
৩.মুশফিকুর রহিম ( বনাম ভারত,২০১৬ এশিয়া কাপ )-ঃ ২০১৬ সালে’র এশিয়া কাপে ভারত বনাম বাংলাদেশ ম্যাচে মুশফিকুর রহিমের অসময়ের জয়োচ্ছাস এখনও ভুলতে পারিনি বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রেমী মানুষেরা।
হার্দিক পান্ডিয়া’ র বিরুদ্ধে পর পর দুই বলে দুটো চার মেরে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রানের সংখ্যা ৩ বলে ২’ এ এনে দাড় করান রহিম।এরপর লক্ষ্য করা যায় তার আবেগের বিস্ফোরণ ! যদিও শেষ অবধি ধোনির কাছে শেষ বলে ক্রিজ থেকে খানিকটা দুরে ম্যাচ হারতে হয় বাংলাদেশ’কে।
স্বাভাবিক ভাবেই এই ম্যাচের পর সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে খোড়াকের পাত্র হয়ে ওঠেন রহিম।বিষয়টি যে একেবারেই ভালো ভাবে নেননি এই ক্রিকেট তারকা তা তার সেই এশিয়া কাপের সেমিফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ভারতের হারের পর লক্ষ্য করা যায়।ম্যাচে’ র পর তাকে দেখা যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলকে অভিবাদন জানতে একটি বিতর্কিত টুইটের মধ্যে দিয়ে, যার জেরে তাকে তীব্র সমালোচিত হতে হয়।
৪.সুরেশ রায়না (বনাম রাজস্থান রয়্যালস, ২০০৯ আইপিএল )-ঃ আইপিএল ২০০৯ এ প্রথম ভারতীয় হিসেবে গোটা বিশ্ব জুড়ে জনপ্রিয় এই টুর্নামেন্টের প্রথম ভারতীয় হিসেবে সেন্চুরী করার হাতছানি ছিলো এই ক্রিকেটারের কাছে।যদিও শেষ অবধি তাকে ৫৫ বলে ৯৮ রান করে আউট হতে হয় মুনাফ প্যাটেলের কাছে।
ম্যাচে রায়না’ র স্কোর যখন ৯৪, ঠিক সেই সময় একটি বাউন্ডারি’র দিকে বল উড়িয়ে দেন তিনি।কৃতিত্ব স্পর্শ করেছেন এমনটা ভেবে উচ্বাছ প্রকাশ করেন রায়না।যদিও পরবর্তী সময়ে আম্পায়ার রুডি কোয়ের্টজন জানান সেটা চার হয়েছে।এরপরই আউট হন রায়না, আইপিএলে’র রেকর্ড বুকে ঢোকা হলো না তার মাত্র দুই রানের জন্য।
৫.আসেলা গুনারাত্নে (বনাম সাউথ আফ্রিকা, ২০১৭)-ঃ কেপটাউনে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জয়ের পর আসেলা গুনারাত্নে’র স্ট্যাম্প তুলে জয় উদযাপন এখনো মনে রেখেছেন ক্রিকেট প্রেমী মানুষেরা।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছয় বলে এগারো রান।প্রথম বলে একটি চার,এরপর পর পর দুই বলে সিঙ্গেল নেন গুনারাত্নে।ম্যাচ জেতার জন্য তিন বলে যখন পাঁচ প্রয়োজন শ্রীলঙ্কার।তখন থার্ড- ম্যান বাউন্ডারি লাইনের দিকে বল ঠেলে দেন গুনারাত্নে।চারের নির্দেশ দেন আম্পায়ার।স্ট্যাম্প তুলে বিজয় উল্লাসে মাতেন গুনারাত্নে, এমন সময় সতীর্থ সেকুগে প্রসন্ন এসে জানান এখনো খেল খতম হয়নি।জয়ের জন্য প্রয়োজন একরান।
হাতে দুই বল থাকলেও পরের বলেই একরান নিয়ে ম্যাচ জিতিয়ে দেন গুনারাত্নে।শ্রীলঙ্কার সিরিজ জয়ের পাশাপাশি গুনারাত্নে’র এই কীর্তির কথা মনে রেখেছেন সকলে।