পাকিস্তানিদের তীব্র সমালোচনার মুখে মুশফিক
দল ঘোষণার আগেই বাংলাদেশ দলের নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান ও উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম জানান পাকিস্তান সফর করার ব্যাপারে আপত্তির কথা। শুধু টি টোয়েন্টি সিরিজ নয়, বাংলাদেশের ৩ দফা সফরের কোনোটিতেই থাকবেন না মুশফিক।
মুশফিকের পাকিস্তান যেতে রাজি না হওয়ার বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি পাকিস্তানের সাংবাদিক, মিডিয়া ও ভক্ত-সমর্থকরা। মুশফিকই যেন শনিবার পাকিস্তানের সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার মূল বিষয় ছিলেন।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) টুইটারে পাকিস্তানের সবচেয়ে বেশি আলোচনার বিষয়ের মধ্যে মুশফিক ছিলেন সামনের দিকে। পাকিস্তানি ভক্ত ও সাংবাদিকরা টুইটের মাধ্যমে মুশফিককে নিয়ে করেন নানান সমালোচনা।
পাকিস্তান ভক্তদের সমালোচনার যুক্তির মাঝে প্রথমেই ছিল- ব্রিটিশ প্রিন্স উইলিয়ামস পাকিস্তান আসতে পারলে কেন বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড় মুশফিক পাকিস্তান আসতে পারবেন না। ব্রিটিশ রাজ-পরিবারের জন্য পাকিস্তান নিরাপদ হলে কেন মুশফিক অনিরাপদ বোধ করবেন পাকিস্তানে?
এই যুক্তি পুরোটাই যে ভিত্তিহীন তা অনেক পাকিস্তান ভক্তেরই হয়তো স্মরনণে ছিলোনা। ব্রিটিশ রাজপুত্র পাকিস্তান এলেও তাদের দেশের পুরুষ ক্রিকেট দল দূরে থাক তাদের নারী ক্রিকেট দলকেও পাকিস্তান পাঠায়নি ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ড নারী দল পাকিস্তানের বিপক্ষে তাদের নির্ধারিত পাকিস্তানের পরিবর্তে মালেয়শিয়ার কুয়ালালামপুরে খেলে। যেখানে ইংল্যান্ড তাদের নারী ক্রিকেট দলকেই পাকিস্তান পাঠাতে চায় না, সেখানে তাদের রাজপুত্রের পাকিস্তান যাওয়া বা না যাওয়া কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ যুক্তি এই জায়গায়?
শ্রীলঙ্কা ছাড়া কোনো দল পাকিস্তানে এখনো পুরো সিরিজ খেলতে আসেনি। সেখানে বাংলাদেশ দল সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে পাকিস্তানের প্রতি। কিন্তু এখানে যদি পাকিস্তানি মিডিয়া, ভক্তরা বাংলাদেশের একজন তারকা খেলোয়াড়কে নিয়ে খেলা ও খেলার বাইরে নানান রকমের সমালোচনা করে তবে প্রশ্ন উঠতেই পারে- এটাই কি বাংলাদেশের সাহায্যের প্রতিদান?
মুশফিক বাংলাদেশের একজন তারকা খেলোয়াড়। পাকিস্তান যাওয়া না যাওয়ার সিদ্ধান্ত একান্তই তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত যেহেতু বিসিবি সকলকেই সেই স্বাধীনতা দিয়েছিলো। তার এই ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তকে এইভাবে খোড়া যুক্তি দিয়ে খন্ডন করে সমালোচনা করা কোনোভাবেই পাকিস্তানের কাছ থেকে বাংলাদেশি ভক্তরা কামনা করেনি। তাও এমন এক সময়ে- যখন বাংলাদেশ পাকিস্তান সিরিজের জন্য রাজি হয়েছে।