বিতর্কিত ‘তিন মোড়ল’ তত্ত্বে ফিরতে মরিয়া গাঙ্গুলী
বিসিসিআইর সাবেক প্রেসিডেন্ট নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডকে নিয়ে আইসিসিতে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ‘তিন মোড়ল’ এর আধিপত্য। তিন শক্তির এই জোট ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড। ঠিক হয়েছিল, যেহেতু এই তিনটি দেশ সব চেয়ে বেশি টাকা আনে, লভ্যাংশ থেকেও তারা সব চেয়ে বেশি অংশ পাবে। এতে আইসিসির কর্তৃত্ব কমে এই তিন দেশই কার্যত ক্রিকেটের নিয়ন্তা হয়ে উঠেছিল।
তবে এই তিন মোড়ল তত্ত্ব ব্যর্থ করেন দেন আরেক ভারতীয়। বর্তমানে আইসিসির প্রধান মনোহর শশাঙ্ক। তিনি আইসিসির নেতৃত্বে এসে তিন দেশের আধিপত্য খর্ব করে সুষম নীতি চালু করেন। যাতে সকল দেশ সমানুপাতিক হারে সুবিধা পায়। সম্প্রতি নতুন বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট বাড়ানোরও ঘোষণা দিয়েছে আইসিসি। যা বেজার করেছে ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াকে।
ভারতীয় বোর্ডের নতুন কমিটিতে সেই শ্রীনিবাসনের অনুসারীরাই আধিপত্য বিস্তার করেছে। এর বাইরে অনুরাগ ঠাকুরের সমর্থিত গ্রুপও বোর্ডে ঢুকে পড়ে। তার ভাই অরুণ ধুমাল বর্তমান কোষাধ্যক্ষ। এই গ্রুপও তিন মোড়ল জোটে বিশ্বাসী। বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভও চান আইসিসিতে ভারতের নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব।
আর সেটা করতে হলে প্রথমে নিজেদের বোর্ডের নিয়মে সংস্কার আনতে হবে তাদের। কারণ বর্তমান নিয়মে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ১০ মাসের বেশি থাকতে পারবেন না সৌরভ। তাই নিজের আসন পোক্ত করতে বর্তমান গঠনতন্ত্র সংশোধন করতে চান সৌরভ। সেই সাথে বোর্ড সচিব জয় শাহর জায়গাও পোক্ত হবে। বোর্ডের গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন আনতে পারলে বিতর্কিত শ্রীনিবাসনও ভারতীয় ক্রিকেটে সক্রিয় হওয়ার সুযোগ পাবেন।
বোর্ডের বর্তমান কর্তাদের মত, লোধা সুপারিশ মেনে তৈরি হওয়া গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বোর্ড পরিচালনায় বাস্তব সমস্যা আছে। তাদের কথায়, ‘এখনকার গঠনতন্ত্র মানতে গেলে বোর্ড পরিচালনা করার মতো যথেষ্ট অভিজ্ঞ এবং পাকাপোক্ত লোকই পাওয়া যাবে না।’ তাই এই গঠনতন্ত্র সংশোধন করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন তারা।
আর ভারতীয় বোর্ডে সৌরভরা নিজেদের জায়গা পোক্ত করতে পারলে প্রভাব খাটানো শুরু করবে আইসিসিতেও। এদিকে ভারতের এমন মনোভাবে গলা চড়তে শুরু করেছে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ারও। ইসিবি এরই মধ্যে হুমকি দিয়েছে, তারা আইসিসির ফিউচার টুর প্রোগ্রামে (এফটিপি) সই করবে না। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াও কথা বলছে ভারতের কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে।
ভারতের অন্যতম সফল অধিনায়ক সৌরভ বিশ্ব জুড়ে বেশ সামদৃত। কিন্তু বোর্ড প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার বিতর্কিত এই উদ্যোগ বিশ্ব ক্রিকেটাঙ্গনে তৈরি করবে আশঙ্কা। বিশেষ করে তিন মোড়ল তত্ত্ব সক্রিয় হয়ে উঠলে অন্য দেশগুলো হয়ে পড়বে কোণঠাসা। এখন দেখার বিষয় আইসিসি কিভাবে মোকাবেলা করে ভারতের এই উচ্চাভিলাস।